অঙ্গহানির মাধ্যমে শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করা চক্রের প্রধান হোতা কামরাঙ্গীরচর আওয়ামী লীগ নেতা ওমর ফারুককে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শুক্রবার ভোররাতের দিকে কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া ইউনিয়নের পুরান বারুলিয়া এলাকার তারা মসজিদসংলগ্ন এক আত্মীয়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওমর ফারুককে গ্রেফতার করে র্যাব-১-এর একটি টিম। এছাড়া ওমর ফারুকের চাচাতো ভাই খন্দকার আব্দুল্লাহ-আল-মামুনকে শুক্রবার রাতে ধরে নিয়ে যায় সাদা পোশাকধারী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সেও এ চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। বিকেলে উত্তরার র্যাব-১-এর কার্যালয়ে ওমর ফারুককে প্রেস ব্রিফিংয়ে হাজির করা হয়।
র্যাব সূত্র জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি ওমর ফারুক স্বীকার করেছে সে নারীদের ধরে নিয়ে দেহব্যবসায় বাধ্য করত। সেখান থেকে প্রতি মাসে তার অনেক টাকা আয় হতো। তার সহযোগী জাহাঙ্গীর, খোকন, ইউসুফ, কোরবান, সোহেল, রাসেল ও সাদ্দামদের মাধ্যমে ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ কার্যর্ক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুককে সহায়তা করে সুলতানগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান মাদবর। এ কাজে তার অন্যতম সহচর ছিল সোর্স সাইফুল। ওমর ফারুকের বাবা হাজী আবদুর রহমান ফটিক নামে এলাকায় পরিচিত। চার ভাই ১ বোনের মধ্যে সে চতুর্থ। সে এলাকায় ফিটিং ফারুক হিসেবে ব্যাপক পরিচিত।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জ জেলার রিঙ্াচালক উমেদ আলীর ৭ বছরের শিশুপুত্র নিয়ামুলকে দুপুর ২টায় বাড়ির বাইরে থেকে ইমরান এবং রাসেল ডেকে কামরাঙ্গীরচরের বেড়ীবাঁধের পরিত্যক্ত একটি বিল্ডিংয়ে নিয়ে যায়। সেখানে শরীফুল ইসলাম ওরফে কোরবান, তার বড় ভাই রমজান এবং রাসেলের বড় ভাই সাদ্দামের সহযোগিতায় শিশু নিয়ামুলের গোপনাঙ্গ কেটে ফেলা হয়।
র্যাব জানায়, কোরবানকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে ওমর ফারুকের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে শিশুদের নানাভাবে অঙ্গহানি করছিল। এমনকি দীর্ঘদিন শিশুদের পাতিলের মধ্যে রেখে বিকলাঙ্গ করে ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করত তারা। এ চক্রের সদস্যরা কামরাঙ্গীরচরের বেড়ীবাঁধ এলাকা থেকে বিভিন্ন অজ্ঞাত পথচারীদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দিত। তারা রাতের বেলায় বেড়ীবাঁধ দিয়ে যাওয়া নারীদের ধরে এনে শ্লীলতাহানি করে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করত। প্রয়োজনে ওইসব নারীদের হত্যা করত বলেও জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে সে।
(শীর্ষ নিউজ ডটকম/ এইচআর/ এনএম/ এসসি/২৩.২০ঘ.)