somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

এম. এ. হায়দার
কল্পনাই সুন্দর; কল্পনা ইজ ওয়ান্ডারফুলnএকা থাকি, লিখি... লেখার মাঝে নিজেকে খুঁজি। শব্দের শহরে খালি পায়ে হেঁটে বেড়াই... দুনিয়াদারি ভাল লাগে না। ওয়ান্ডারফুল লাগে না। “কল্পনাই সুন্দর, বাস্তবের বেল নাই”- এইরকম একটা ভাব ধরার চেষ্টা করি। বই পড়া আর ল

সেদিন শ্রাবণ মাস (উপন্যাস) (পর্ব-৪)

১৭ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুজতবা অনেকটা ধমকের সুরে বললেন, ‘দিবা না মানে? দাও। চিতল মাছ তো খাওয়ার জন্যই রান্না হয়েছে। পাতিল পাতিল সাজিয়ে রাখার জন্য তো আর রান্না হয় নি।’

‘সবাই তো আর ধরো সব মাছ খেতে পারে না, সেইজন্য বললাম।’

‘চিতল মাছের মধ্যে তো আমি না খেতে পারার মত কিছু দেখি না।’

পান্থ মাঝখান থেকে বলল, ‘আরিফের আবার খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে কোন বাছ-বিচার নেই তো?’

আরিফ বলল, ‘না, আমি সব আইটেমই খেতে পারি।’

পান্থ খুশি-খুশি গলায় বলল, ‘দ্যাটস গুড। সবকিছুই খেতে হবে। একেকটা আইটেমে মনে করো যে তোমার একে ধরনের নিউট্রিশন। শরীরের জন্য সব ধরনের নিউট্রিশনই প্রয়োজন। কথা ঠিক বললাম কিনা?

‘হুঁ।’

‘আমিও তোমার মতই। সব আইটেমই খেতে পারি। খাবার হলেই হল। সব খাবার খাওয়ারই প্রয়োজন আছে। মাইর ছাড়া। মাইর খাওয়ার প্রয়োজন নাই।’

ছোটকাকী ইতিমধ্যে আরিফের প্লেটে চিতল মাছের একটা টুকরো তুলে দিয়েছেন। এবার পান্থর প্লেটে দেওয়ার জন্য চামচ উঁচু করলেন।

পান্থ সাথে সাথে বাধা দিয়ে বলল, ‘এক মিনিট! এক মিনিট! চিতল মাছ তো এখন খেতে পারব না। আজকে গরম-গরম লাগছে। চিতল মাছে আবার অনেক তেল।'

ছোটকাকী হেসে বললেন, ‘তুমি না সব খাও?’

‘সব খাই ঠিকই। কিন্তু আজকে একটু...’

মুজতবা কড়া গলা করে বললেন, ‘একটু আগে বললে সব খাবার প্রয়োজন আছে, মাইর খাবারপ্রয়োজন নাই। এখন তো দেখি তোমার মাইরও খাবার প্রয়োজন আছে। ভালোয় ভালোয় মাছটা খেয়ে নাও। রাজ চিতল বলে কথা... ও, চিতল মাছের ঘটনা তো আরিফকে শোনানো হয় নি।'

আরিফ এতক্ষণ চুপচাপ খাচ্ছিল। এখন বলল, ‘কি ঘটনা?’

মুজতবা টান দিলেন। ‘বললে বিশ্বাস করবা না, আরিফ, ইয়া বড় এক চিতল। এইখানে মাথা রাখলে লেজ যায় সেই পর্যন্ত। দেড় মানুষ সমান লম্বা...’

ছোটকাকী বাধা দিয়ে বললেন, ‘অত লম্বা কিন্তু না।’

মুজতবা কড়া গলায় ধমক লাগালেন, ‘তুমি চুপ থাকো। কথা আমি বলছি। কথার মাঝে কথা বলবা না। মেয়েমানুষের এই এক স্বভাব। অতিরিক্ত প্যাঁচাল।... কোথায় ছিলাম?’

‘দেড় মানুষ সমান লম্বা- এই জায়গায় ছিলেন।’ আরিফ ধরিয়ে দিল।

‘ইয়েস, দেড় মানুষ সমান লম্বা। দেড় মানুষ যদি নাও হয়, অন্তত এক মানুষ তো হবেই। কি তার দেহ!! ওরেব্বাবা।’

পান্থ চিতল মাছের টুকরোটা নিয়ে যুঝছিলো। এখন বলঠ, ‘বুঝলে আরিফ, গিগানটিক সাইজের মাছ।’

‘কথা আমি বলছি। যাহোক মাছ তো ওজন করা দরকার, বাটখারা আনা হল...’

পান্থ বাধা দিয়ে বলল, ‘তুমি যত সহজ করে বলছো, ঘটনা, মামা, তত সহজ না। চেয়ারম্যান সাহেব নিজে বাটখারা আনার জন্য লোক পাঠিয়েছিলেন। তারা পর্যন্ত জোগাড় করতে পারে নি। শেষ পর্যন্ত আমি, এই আমি...’
‘পান্থ, চুপ থাকো। কথার মাঝে কথা বলবা না। তারপর আরিফ, যা বলীছলাম, চিতল মাছ পাল্লায় তোলা হল। পাল্লার অবস্থা নড়ো-বড়ো। খসে পড়ে যায় টাইপের অবস্থা...’

পান্থ বাধা দিয়ে বলল, ‘অবজেকশন, এখানে একটা মিসটেক করলে। আমি নিজে বাটখারা এনেছি। শক্ত দেখেই এনেছি। এই যে তোমার এত ওজন, তোমাকেসুদ্ধ ওজন করলেও পাল্লার কিছু হত না।’

মো: মুজতবা বিরক্ত হয়ে কথা বলা বন্ধ করলেন।

আরিফ জানতে চাইল, ‘কত ওজন হয়েছিল?’

‘তেত্রিশ কেজি।’ মুজতবা শুকনো কণ্ঠে বললেন।

ছোটকাকী বললেন, ‘আরিফ, আর কিছু লাগবে?’

আরিফ তাড়াতাড়ি করে বলল, ‘না, না। আমরা নিয়ে নিতে পারব। আপনি খেতে বসুন।’

চিতল মাছ যে আরিফের খুব ভাল লাগে তা না। অন্যান্য আইটেমও আহামরি কিছু না। তারা গল্প করতে করতে খাচ্ছে।

আরিফের কেন যেন খুবই ভাল লাগছে।

***

শওকত সাহেব উস-খুস করেছিলেন। তার এই উস-খুসের কারণ সিগারেট। রাতে খাওয়ার পর সিগারেটা না টেনে তিনি থাকতে পারেন না।

তার স্ত্রী জাহানারা বেগম সিগারেটের ধোঁয়া একবারেই সহ্য করতে পারে না। হাতের কাছে কোন সিগারেটের প্যাকেট পেলেই তিনি সেটা ফেলে দেন।

এবারও নিশ্চয়ই সেরকম হয়েছে। এই পরশুদিনও তিনি একটা বেনসন এন্ড হেজেসের প্যাকেট হাটখোলার কাছে একটা দোকান থেকে কিনেছিলেন। মাত্র চারটা সিগারেট খাওয়া হয়েছে।

শওকত সাহেব ঠিক করলেন তার স্ত্রীকে ডেকে কড়া করে একটা ধমক দেবেন। আস্ত সিগারেটের প্যাকেট ফেলে দেবে, এইটা কেমন কথা!

তিনি খক-খক করে গলা পরিষ্কার করে ডাকলেন, ‘জান্নাত, এই জান্নাত।’



পর্ব ১,২,৩ এখানে ক্রম অনুসারে

(চলবে....................................)
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×