টিপাইমুখ নিয়ে ভারতের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট বাংলাদেশ
দাবি প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভীর
যাযাদি রিপোর্ট
বরাক নদীর ওপর টিপাইমুখে বাঁধ হলেও তাতে বাংলাদেশের ক্ষতি হবে না বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী।
টিপাইমুখ প্রকল্প নিয়ে গত সপ্তাহে নয়া দিলি্লতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করে আসা রিজভী বলেছেন, 'টিপাইমুখে বাঁধের কারণে বাংলাদেশের ক্ষতি হবে বলে যে কথাগুলো উঠেছে, তার সবই ভিত্তিহীন।' টিপাইমুখে বাঁধ হলে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে তার বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে দেশের পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন। সেখানে পানি প্রত্যাহার হলে মেঘনা, সুরমা ও কুশিয়ারাসহ এর শাখা নদীতে পানি সঙ্কট দেখা দেবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, টিপাইমুখে একটি জলবিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে। এ থেকে ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। চাইলে বাংলাদেশও এ প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারবে।
বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর হবে, টিপাইমুখে এমন কিছু করা হবে না বলে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস তুলে ধরেন রিজভী। তিনি একই সঙ্গে বলেন, 'এরপরও যদি শঙ্কা থেকে থাকে, তাহলে বাংলাদেশি এক্সপার্টরা সেখানে পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। ভারতও সহযোগিতা করবে।' টিপাইমুখে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সঙ্গে ভারতের মনিপুর রাজ্য সরকারের বিনিয়োগ চুক্তির খবর ১৮ নভেম্বর প্রকাশ করে বিবিসি। এরপর বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়। বিবিসির প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশ এ প্রকল্পের বিষয়ে জানতে নয়া দিলি্লতে চিঠি পাঠালে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাঁধ নির্মাণ করে ১৫০০ মেগাওয়াটের টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বরাক নদীর পানি প্রত্যাহার করা হবে না। ফলে এতে বাংলাদেশের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাবও পড়বে না।
টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের আগে যৌথ জরিপের দাবি জানিয়ে এর মধ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠান বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া। তার জবাবেও ক্ষতিকর কিছু না হওয়ার আশ্বাস দেন মনমোহন।
টিপাইমুখ বিষয়ে সরকারের তৎপরতা নিয়ে বিরোধী দলের অভিযোগের মধ্যে গত সপ্তাহে দুই উপদেষ্টাকে ভারত পাঠান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।উপদেষ্টা গওহর রিজভী ও মশিউর রহমান গত শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। তারা আলোচনার তাগিদ দিলে ভারতের পক্ষ থেকে সে বিষয়ে বিষয়ে সম্মতি জানানো হয়। বরাক নদীই সিলেট অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে সুরমা ও কুশিয়ারা নামে দুটি স্রোতধারায় প্রবাহিত হয়ে পরে পুনরায় মিলিত হয়ে মেঘনা নাম নেয়। মেঘনা নদী চাঁদপুরে পদ্মার সঙ্গে মিলিত হয়ে বঙ্গোসাগরে পতিত হয়। পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা আরো আশঙ্কা করছেন, ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা টিপাইমুখে বাঁধ হলে যদি তা কখনো ভাঙে, তবে সিলেট অঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাবে।
Click This Link