somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একের ভেতরে চার : সামহোয়ার সমাবেশ, সুমন চট্টোপাধ্যায়, বিষ্ণুমূর্তি ও কাজীপাড়া লেখক ফোরাম

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১০:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
একরামুল হক শামীম ও রিজভী খুব সুন্দর একটা ব্লগার্স মিটের আয়োজন করলো। সমাবেশে যাওয়ার আগে একটা পোস্ট দিয়ে যাত্রা করে একটু অস্বস্তিতে ছিলাম। ভাবছিলাম সময় মতো পৌছাতে পারবো কি পারবো না। চারটা এক কি দুই মিনিটে গিয়ে দেখলাম যারা পৌঁছেছেন ততোক্ষণে, প্রায় সবাই আমার মতো। আকারে প্রকারে। এরাই সবার আগে এসেছেন। কারণ এরা এখনও সমাবেশে বিশ্বাস করেন। সবচেয়ে বড় কথা সময় মতো সমাবেশে উপস্থিত হতে হয় না একথাটা এখনও এরা শিখে ওঠেননি। শেষ পর্যন্ত সমাবেশে এদেরই প্রাধান্য ছিল। মশার কিছুটা জ্বালাতন ছাড়া সন্ধ্যাটা ছিল দারুণ। যাদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে তাদের সবাইকে একবাক্যে ভাল লেগেছে।
আমার মতে, ব্লগে যারা ভীষণ ঠোঁটকাটা ব্যক্তিগত আচরণে অধিকাংশই ভীষণ লাজুক। ব্যতিক্রম তো থাকবেই। তাই না?
ব্লগার্স মিটের ছবিগুলো খুব সুন্দর হয়েছে। হাতে সময় না থাকলেও হারিয়ে ফেলার ভয়ে ছবিগুলো নামিয়ে রেখেছি। স্মরণীয় একটা সন্ধ্যা। সমাবেশে গিয়ে একটা কথা বারবার আমার মনে হয়েছে : এখানে যারা এসেছেন তাদের অধিকাংশই লেখক। কেউ হবু, কেউ বড়। কিন্তু সবাই লেখক। ফালতু লোক খুব কম। ফলে আশা করতে দোষ কী?
আমি ভীষণ আশাবাদী।
২.
১৭ তারিখে অফিসে এসেই শুনলাম সুমন আসতেছে। কোন সুমন? কবীর সুমন অর্থাৎ সুমন চট্টোপাধ্যায়। সুমন কেমন জানি অতীত হয়ে গেছে। সুমন চট্টোপাধ্যায়ের ফেলে আসা গানে। অথচ কতই না শুনতাম, শোনা দেখতাম। কথা ছিল, আমাদের অফিসে ঘণ্টা খানেক থেকেই চলে যাবেন। কোথায় কী? এক ঘণ্টা, দুই ঘণ্টা গড়িয়ে তিন ঘণ্টায় এসে থামলেন তিনি। নিজের কথা, গানের কথা, সাহিত্যের কথা কত বললেন! গান শোনালেন নতুন পুরাতন। শুনতে শুনতে ভাবছিলাম, তাহলে তো ঠিকই আছে। সুমন ঠিকই আছে। কিন্তু, কেন যে সুমনের ভক্তরা সুমনকে ছেড়ে গেল? এটা আমার কাছে এক গুরুতর রহস্য হয়েই থাকলো। তবে সুমন বুড়ো হয়ে গেছে। এর আগে ১৯৯৭ কি ১৯৯৮ সালে আরও একবার কাছাকাছি দেখেছিলাম। নয় দশ বছরে তো নয় দশ বছরের বয়সই বাড়ে। তবে ডাট একই রকম আছে। গলাটাও।
৩.
১৮ তারিখে অফিসে আরেক সেমিনার। প্রত্নসম্পদ পাচার নিয়ে। বিকাল বেলা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ফয়েজ আহমদ, আ ক ম জাকারিয়া, শামসুল ওয়ারেস, ইউরি ভাই, নিসার আহমেদ আসলেন। আমার দুই স্যার আসলেন। একেএম শাহনেওয়াজ আর মোস্তাফিজুর রহমান লাল। পরে আসলেন তানিয়া আমীর। সেদিন সবার মুখেই ছিল একটা হতাশার আভাস। না পারা গেল না এবার। চোরদের সঙ্গে পারা গেল না। কিন্তু কথায় আছে চোরের দশদিন আর গৃহস্থের একদিন। ভগবান বিষ্ণু বহুবার পৃথিবীকে বাঁচিয়েছেন। কখনো কৃষ্ণ হয়ে, কখনো রাম হয়ে, কখনো পরশুরাম হয়ে, কখনো বরাহ হয়ে। এবার টেরাকোটা মূর্তি হয়ে কিছু প্রত্নসম্পদ বাঁচালেন। জয় জগদিশ হরি।
একটা ব্যাপার জানা দরকার এখন। অতি উৎসাহী মহলটা কারা? সোনার বাংলা ফেস্টিভ্যালের উদ্যোক্তাই বা কারা? চোরের সাক্ষী গাঁটকাটা বুদ্ধিজীবীরাই বা কারা?
নামগুলা এখন উচ্চারণ না করলে আর কখন করবো?
৪.
ইতিহাসে একটা ব্যাপার ছিল বাগদাদ প্যাক্ট নামে। বাগদাদ ওই প্যাক্ট থেকে বের হয়ে গিয়েছিল প্যাক্ট মোতাবেক সেন্টো নামক সংস্খাটি গড়ে তোলার পরপরই। ফলে পরিহাস করে বলা হতো বাগদাদ প্যাক্ট উইদাউট বাগদাদ । ইউনিভার্সিটি থেকে বের হয়ে আসার পর আমরা লেখকদের সংগঠিত করে একটা অ্যাক্টিভিস্ট মঞ্চ তৈরি করলাম। তো আমাদের কমরেডদের মতিগতি দেখে বন্ধু লেখকরা সবাই আসতেছি বলে ভেগে গেল। শেষে দেখা গেল রাইটার্স মঞ্চ উইদাউট এনি রাইটার অবস্থা।
এখন আবার পুরনো কথাগুলো মনে পড়লো। আমাদের প্রতিবেশী লেখকরা মিলে একটা কাজীপাড়া লেখক ফোরাম গড়ে তুলেছেন। কিন্তু মুলোমুলি আর কড়াকড়ি করতে গিয়ে কিছু লেখক বাহিষ্কার। আর কিছু স্বেচ্ছাঅবসরে। এজন্যই বলছিলাম, পুকুরে জাহাজ ভাসানোর চাইতে সমুদ্রে ভেলা ভাসানো অনেক ভালো। বাকী থাকলো কী?
আমি বুদ্ধদেব বসুর মহাভারতের কথা পইড়া রফিক স্যারের কাছে গিয়া বললাম, স্যার কী বিশ্লেষণ! আহা! তো স্যার কইলেন, মহাভারতের কথা ভাল ঠিক আছে। কিন্তু জানো তো, এর শব্দগুলা চালুনিতে নিয়া একটা ঝাড়া দিলে কতগুলা সেমিকোলন আর কমা বের হবে? আমি চুপচাপ স্যারের মুখের দিকে তাকায়া আছি। স্যারে কয়, দেড় কেজি।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৪:৪২
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×