প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে এখন আর কিছুই বলার নাই, কালকে বুয়েটের এক ভাই এর স্ট্যাটাস দেখে জানলাম গতকালই সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন ফেসবুক পেজে পদার্থ ২য় পত্র’র সৃজনশীল প্রশ্ন সৃজনশীলভাবে আউট হয়ে গেল, পরে সেই পেইজ এ গিয়ে দেখি মোবাইলে তোলা ছবিসহ এবং হাতে লেখা প্রশ্ন দিয়ে দেয়া হয়েছে। সাথে সাথে লিংকসহ ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে মেইল করা হল, কিন্তু নিয়ন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণের বাইরে মনে হয় এসব বিষয়, কাজের কাজ কিছুই হল না। আজকে ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই পরীক্ষা হল। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম ওয়াহিদুজ্জামানকে মেইল করা হলেও তিনি আমলে নেন নাই, উল্টা প্রথম আলোকে বলেছেন এ ধরনের কোনো অভিযোগ তিনি পাননি।
মাননীয় মন্ত্রী নাহিদ স্যারকে অনুরোধ করব পরীক্ষার আগের দিন কিছু ফেবু পেইজে ঘুরে আসেন, দেখবেন আউট হয়ে যাওয়া প্রশ্নের হাট বসেছে, এই ডিজিটাল ক্রাইম মানে সাইবার অপরাধ দমনে আইসিটি নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো কি করছে? ৫৭ ধারা অনুযায়ী বিরুদ্ধ মত দমনে ব্যস্ত না থেকে এসব সাইবার ক্রাইম দূর করতে এদের এত কার্পণ্য কেন? কর্তৃপক্ষ প্রমাণ চান, গুজব বলে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয় এড়িয়ে যান, কিন্তু এভাবে ডিজিটাল কায়দায় ফাঁস হওয়ার পরও কেন কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।
এই ফাঁসকৃত প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া চরম ক্রাইম। এসব পরীক্ষা বাতিল করা উচিত। নাহিদ সাহেব আর কত, এবার একটু কঠোর হন!
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, একের পর এক প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে আর আপনি এখন বলছেন প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। আপনি নিজেই তো এইচএসসি'র ইংরেজি ২য় পত্র পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায় তা স্থগিত করেছিলেন। বুধবার অনুষ্ঠিত পদার্থ পরীক্ষার সৃজনশীল প্রশ্নও অত্যন্ত সৃজনশীলভাবে ফাঁস হয়েছে! এর আগে এসএসসির গনিত প্রশ্ন ফাঁসের খবর পত্রিকায় আসলেও তা আমলে নেয়া হয় নাই। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফাঁসকৃত প্রশ্ন ছড়িয়ে যাচ্ছে! এরকম ফাঁসের উৎসব শুধু লজ্জাস্করই নয় এটা শিক্ষাক্ষেত্রে জাতীয় বিপর্যয়। পরীক্ষা ব্যবস্থা বলে তো আর কিছুই রইল না।প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার পরও অনুষ্ঠিত পরীক্ষা বাতিল না করে এবং ‘প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে” প্রকারন্তরে প্রশ্ন ফাঁসে উৎসাহই দেয়া হচ্ছে! কারা কারা প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িত তা বের করতে খুব একটা বেগ পাওয়ার কথা নয়, বিজি প্রেসের কর্মকর্তাদের চার্জ করলেই তদন্তে সব বেরিয়ে আসার কথা। সেই তদন্ত না করে প্রশ্ন ফাঁসকারীদের উৎসাহ দেয়ার কোন মানে হয় না।ফাঁসকৃত প্রশ্নে পরীক্ষার নামে এই প্রহসন দেখেও দেশের তাবত বিদ্ব্যৎ সমাজ নির্বিকার!
অতিদ্রুত প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে জিরো টলারেন্স শো করে পর্যাপ্ত তদন্তের ব্যবস্থা করা হোক এবং জড়িত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। এই দেশে প্রধানমন্ত্রীর নেক নজর না পড়লে কোন কাজই সুষ্ঠুভাবে হয় না, শিক্ষাক্ষেত্রে এভাবে ক্রমাগত প্রশ্ন ফাঁসের প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আশা করছি।
প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ জাফর ইকবালের লেখায় দেখুনঃ Click This Link
প্রশ্ন ফাঁস নামাঃ
হাতে নাতে প্রমাণ দেয়া হল, তাও বলা হয় অভিযোগ ! প্রথম আলো কি ফাঁসকৃত প্রশ্ন আর পরীক্ষার প্রশ্ন মিলিয়ে দেখতে পারেন না? আর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে মেইল করার পরও তিনি বলেই যাচ্ছেন তিনি কোন অভিযোগ পান নাই! মিডিয়ার ভূমিকা খুবই খারাপ, মিডিয়া আজ পর্যন্ত ফাঁসকৃত প্রশ্নে পরীক্ষার নামে প্রহসনের বিরুদ্ধে কোন বড় প্রতিবেদনও দেয় নাই। কেউ কেউ বলেন এখন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস এতো বেশি হচ্ছে যে মিডিয়ার কাছে এটা আর নিউজ না! একটা চরম অপরাধ নিয়মিত ঘটলে তা নিয়ে নিউজ করা যাবে না এটা কোথায় আছে? গুম খুন তো নিয়মিত হচ্ছে সেসব নিয়ে কি মিডিয়া নিউজ করছে না? তাইলে প্রশ্ন ফাঁসের মত শিক্ষাক্ষেত্রের ভয়াবহ দুর্যোগ নিয়ে দেশের মিডিয়া গুলা লিড নিউজ করছে না কেন? প্রশ্ন ফাঁসের চেয়ে ভয়াবহ বিপদের দিক হচ্ছে এই ফাঁস হওয়াকে মেনে নেয়া হচ্ছে বিনা প্রশ্নে।
আমি হতাশ, প্রতি পরীক্ষার আগের রাতেই প্রশ্ন ফাঁস হয়, আমি মেইল করে যাই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে , মিডিয়ায় মেইল করি, কেউ কানে নেয় না, জাফর ইকবাল এর রোদনও বৃথা যায়, মিডিয়া চুপ, আজ পর্যন্ত মিডিয়া বড় কোন লিড নিউজ দেয় নাই, প্রশ্ন ফাঁসের জন্য মন্ত্রীর পদত্যাগ কেউ দাবি করে নাই, বিরোধী দলগুলা সব চুপ, দালাল বুদ্ধিজীবীরা চুপ , সবাই মেনে নিচ্ছে এই অন্যায় , আর অভিভাবকরা তো নিজেরাই খুশি মনে হয়, তাদের থেকেও কোন প্রতিক্রিয়া নাই!
"শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ অস্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা অসম্ভব, এটা একবারে মিথ্যা কথা৷ আর পরীক্ষার পর এ ধরনের অভিযোগ করা হলে তা প্রমাণ হয় কী করে?’ ---
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, প্রশ্ন ফাঁসকে গুজব বলে উড়িয়ে না দিয়ে এসব নিউজ পড়েন, আপনার তদন্ত কমিটিরেও একটু পড়তে বলেনঃ
The Facebook page and the leaked questions were still available yesterday. The profile picture of the page had "Prashnopotro Fash" (question paper leaked) written on it.http://www.thedailystar.net/hsc-math-questions-available-on-facebook-25692
The questions 1, 2 (or), 4, 5, 6 (or), 7, 8, 9, 10, 11 (or), 12, 13, 14, 15 (or), 16, 16B (or), 17, and 18 (or) of the original question paper of the Dhaka Board exactly matched the leaked one. - See more at: Click This Link
~ প্রতিবাদকারী না, আমরাই মানসিকভাবে অসুস্থ~
লাগাতার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ফরিদপুরের একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী এর প্রতিবাদে থানায় জিডি করতে গেলে তাকে মানসিকভাবে অসুস্থ ঘোষণা দেয় কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত)!
পুলিশের এই বক্তব্য ওই শিক্ষার্থীকে জানানো হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি চেয়েছি, সবাই সচেতন হোক। পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নিক। কিন্তু জিডি কীভাবে করতে হয় জানি না। আমি শুধু আমার ক্ষোভটা জানিয়েছি। অথচ পুলিশ আমাকে অসুস্থ বলে তাড়িয়ে দিল। আজ তো প্রশ্ন দেখলেন৷ এবার বলেন, আমি অসুস্থ, নাকি আপনারা?’ Click This Link