হাদীছ শরীফ-এ এসেছে, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একবার উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস্ সালাম উনাকে লক্ষ্য করে বললেন, আপনার কি জানা রয়েছে যে, আকাশের তারকা পরিমাণ নেকী কার রয়েছে? জবাবে হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহিস্ সালাম তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা ভালো জানেন। তখন নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আকাশের তারকা পরিমাণ নেকী রয়েছে যিনি হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের পর দ্বিতীয় ব্যক্তিত্ব, ফারূকে আ’যম হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস্ সালাম উনার। তখন হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার ভিতরে প্রশ্ন জাগলো যে, তাহলে যিনি আফদ্বালুন নাস বাদাল আম্বিয়া, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের পরে সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব, ছিদ্দীক্বে আকবর হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস্ সালাম উনার নেকীর পরিমাণ কতটুকু? তখন নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজ থেকেই বলে দিলেন যে, হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস্ সালাম তিনি হিজরতের সময় সাওর গুহায় তিন দিন নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছরøাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যে বেমেছাল মুবারক খিদমতের আনজাম দিয়েছিলেন, সেই তিন দিনের নেকীর পরিমাণ আকাশের তারকার চেয়েও বেশি। অর্থাৎ ফারূকে আ’যম হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম যিনি হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পর দ্বিতীয় ব্যক্তিত্ব উনার সারা জীবনের নেকীর চেয়ে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস্ সালাম উনার সাওর গুহার তিন দিনের নেকীর পরিমাণ অনেক বেশি। সুবহানাল্লাহ!
সে জন্যই হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস্ সালাম তিনি প্রায় সময়ই এই কথা মুবারক বলতেন, আমার সারা জীবন না হয়ে যদি সাওর গুহার তিন দিন হতো, যে তিন দিন হযরত ছিদ্দীক্ব আকবর আলাইহিস্ সালাম তিনি নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতের আনজাম দিয়েছেন, তাহলে আমার জন্য অতি উত্তম হতো। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং এখান থেকেই বুঝা যায় যে, হযত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস্ সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী সম্মান কতটুকু, যেটা মাখলুকাতের চিন্তা ও কল্পনার বাহিরে।
হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস্ সালাম উনার মুবারক পরিচিতি:
নাম মুবারক: আব্দুল্লাহ। কুনিয়াত: আবূ বকর। লক্বব মুবারক: আতীক্ব ও ছিদ্দীক্ব।
উনার পিতার নাম মুবারক: উছমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, উনার কুনিয়াত ছিল আবূ কুহাফাহ।
উনার মাতার নাম মুবারক: সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা। উনার কুনিয়াত ছিল, উম্মুল খয়ের।
বিলাদত শরীফ: নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক বিলাদত শরীফ-এর প্রায় ২ বছর তিন মাস পর তথা হিজরতের প্রায় পঞ্চাশ বছর পূর্বে মক্কা শরীফে বিখ্যাত কুরাইশ বংশের তাইম গোত্রে বিলাদত শরীফ লাভ করেন। উনার বংশ তালিকা উপরে যেয়ে এক পর্যায়ে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পূর্ব-পুরুষ আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের সাথে একত্রিত হয়েছে। এটাও উনার একটা বিশেষ ফযীলতে কারণ। সুবহানাল্লাহ!
ইসলাম পূর্ব জীবন: খলীফাতু রসূলিল্লাহ, আমিরুল মু’মিনীন, খলীফাতু মুসলিমীন হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস্ সালাম তিনি প্রথম জীবন থেকেই উত্তম চরিত্র মুবারক এর অধিকারী ছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পূর্বে তিনি কখনও মূর্তি পূজা করেননি এবং শরাবও পান করেননি। যেমন হাদীছ শরীফ-এ এসেছে উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন-
“ছিদ্দীক্বে আকবর হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস্ সালাম তিনি জাহিলী যুগেই নিজের উপর শরাব বা মদ হারাম করে নিয়ে ছিলেন।” (তারীখুল খুলাফা ২৪নং পৃ
হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস্ সালাম তিনি জাহিলী যুগে ও অত্যন্ত ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ও কুরাইশ সর্দারদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ছিলেন এবং মসনবে আশনাক উনার হাত মুবারকেই ন্যাস্ত ছিল। সে মনসবের কাজ ছিল এই যে, যখন কোথাও কোনো হত্যাকা- ঘটত, তখন হত্যা ও নিহত ব্যক্তির গোত্রদ্বয়ের ভেতর লড়াই লেগে যেত। তখন হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস্ সালাম তিনি হত্যাকারীর থেকে নিহতের রক্তপণ আদায়ের দায়িত্ব নিলে লড়াই থেমে যেত। তিনি ছাড়া যদি অন্য কেউ সে দায়িত্ব নিত, তাহলে লড়াই অব্যাহত থাকত। সুবহানাল্লাহ! (ইযালাতুল খফা)