somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হেরে যাবো বলে তো স্বপ্ন দেখেনি

১৮ ই জুন, ২০০৮ রাত ৮:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষ তার জীবনে অনেক কিছু প্রত্যাশা বা আশা করে। অনেক স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সব স্বপ্ন সবার পূরণ হয় না। কারণ তারা খুব অল্পতে ভেঙ্গে পড়ে। জীবন মানে দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নৌকা পাড়ি দেয়া। এখানে অনেক বিপদ সংকুল পথ আছে। এই পথ পাড়ি দেয়া অতো সহজ না। তাই সবাই জীবনে সাফল্য পায় না।

আমি এক সাধারণ পরিবারের জন্মগ্রহণ করেছি। এখানে ছয় ভাই-বোনের মধ্যে আমি পঞ্চম। জীবনে আশা ছিল সাংবাদিক হওয়ার। তাই ইচ্ছা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হওয়ার। কিন্তু বন্ধুমহল বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হওয়ার কঠিন। কিন্তু আমি এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। প্রথমবার পারিনি কিছু সমস্যার কারণে। কিন্তু দ্বিতীয়বার আমি পেরেছি। কারণ আমি স্বপ্ন দেখি হেরে যাওয়ার জন্য নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হলাম। অনেক আনন্দ নিয়ে ক্লাশ করতে শুরু করলাম। স্বপ্ন ছিল অনার্সে ফাস্ট ক্লাশ পাবো। বন্ধুদের মতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাস্ট ক্লাশ পাওয়া অনেক কঠিন। কারণ, এখানে শুধু পড়াশুনা নয়, স্যার-ম্যাডামদের সঙ্গে লবিং করতে হয়। কিন্তু আমি দমে যায়নি। আমি চেষ্টা করতে লাগলাম। প্রথম বছর সফল হয়নি। দ্বিতীয় আবার চেষ্টা করলাম। তাতে কিছুটা সফল হলাম। তখন পুরোদমে পড়াশুনো করতে লাগলাম। বন্ধুরা প্রেম করে, আড্ডা দেয়, চাকরি করে। আর আমি পড়ার টেবিলে বসে অধ্যায়ন করি। আমার স্বপ্ন অনার্স পরীক্ষায় ফাস্ট ক্লাস পাওয়া। তারপর সেই দিনটি এলো। আমাদের অনার্স পরীক্ষার রেজাল্ট বের হলো। আমি ফাস্ট ক্লাস পেলাম। কিন্তু সামান্য নম্বরের জন্য প্রথম হতে পারলাম না। পেলেম না কোন স্বর্ণপদক। খুব খারাপ লাগলো। কিন্তু আমি দমে যায়নি। কারণ আমি হেরে যাওয়ার জন্য স্বপ্ন দেখেনি।

মাস্টার্সে আবার পুরোদমে পড়াশুনো শুরু করলাম। এখানেও অনেক চাকরির অফার। কিন্তু আমি সবকিছুকে তুচ্ছ করে পড়ার প্রতি মনোনিবেশ করলাম। তারপর দিন যেতে লাগল। আমাদের মাস্টার্স পরীক্ষার সময় দেশে শুরু হলো রাজনৈতিক অস্থিরতা। পরীক্ষা তো আর শেষ হয় না। তারপর ১/১১ এরপর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে পরীক্ষা শেষ হলো। কিন্তু এখন তো আমি কোন চাকরি পায় না। কারণ রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল না। আবার এদিকে পরীক্ষার রেজাল্ট বের হচ্ছে না। সব মিলেয়ে আমি এক ধরনের হতাশায় ভুগছি। পরীক্ষার পর বের হবে, এমন সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলনের কারণে বিদ্যালয় অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা। সুতরাং ফলাফল প্রকাশও অনির্দিষ্ট হয়ে গেল। তারপর রোজা এলো। আমি পড়লাম অসুখে। জ্বর প্রায় ১০৪ ডিগ্রী। এমন সময় শুনতে পেলাম আমাদের মাস্টার্স পরীক্ষার ফল বের হবে। কিন্তু কবে তা আমরা জানতে পারছি না। তারপর এলো সেদিনটি যার জন্য আমি এতো প্রতীক্ষায় ছিলাম। আমার এক শিক্ষক আমাকে ফোন দিয়ে বলল. ' তুমি মাস্টার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়েছো।' কথাটা শুনে প্রথমে আমি বিশ্বাস করতে পারতে ছিলাম না। কারণ আমার পরীক্ষা ভাল হয়েছে। কিন্তু এতো ভাল হয়নি যে আমি প্রথম হবো। কথাটা শুনার পর আমি ভাবলাম আমার চেষ্টার ফলাফল এদিনে সার্থক হয়েছে। যেদিন আমি প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দীনের কাছ থেকে স্বর্ণপদক নিই, সেদিন আমার কাছে অতীতের সব দুঃখ, কষ্ট, হতাশা দূর হয়ে গেছে। কারণ আমি হেরে যাওয়ার জন্য কোন স্বপ্ন দেখেনি






সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:০৪
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×