somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উল্কি... কৈশোরে মন হারানোর একটি ট্যাট্টু গল্প ।

০৭ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




উল্কি... কৈশোরে মন হারানোর একটি ট্যাট্টু গল্প

-
--
---
ষোলো বছরের এক দুরন্ত বালক । হঠাৎ করে বদলে যায় তার চেনাশোনা পৃথিবী । এলোমেলো হয়ে যায় কৈশোরের দুরন্তপনায় যাপিত জীবন । বাইরে বন্ধুদের সাথে আড্ডা বা খেলাধুলায় মন বসেনা । নিজের ঘরে খিল এটে বসে থাকতেই ভাল লাগে বেশি । বড় আপার বুক শেল্ফে কয়েকটা বই খুজে পেয়েছে, প্রেমের উপন্যাস । আগে তার সাইন্স ফিকশন বা অ্যাডভেন্চার ছাড়া অন্য কোন বই পড়তে ভাল লাগত না, এখন প্রেমের উপন্যাস গুলি উল্টে পাল্টে পড়ছে । লুকিয়ে লুকিয়ে শেভ করে আর ঘুরে ফিরে বারবার আয়নায় দেখে কতটুকু গজালো দাড়ি-গোঁফ । পড়ার টেবিলে বসে অংকের খাতায় নানান আঁকিবুকি । লিখে ফেলে দু'চার লাইন কবিতা । সারাক্ষন মনে আসে প্রেমের গান, কখনোবা গুনগুনিয়ে সুর ভাজে । উদাস হয়ে আনমনে জানালার গ্রীল ধরে তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে । আকাশে সাদা সাদা মেঘ উড়ছে, কিন্তু সে অবাক হয়ে দেখে মেঘের বদলে একটা সৌম্য-সুন্দর-রমনীয় অবয়ব । ক্রমশ অবয়বের হাত গুলো দৃশ্যমান হয়, যেনো ধবধবে সাদা-শুভ্র নরম-তুলতুলে ভরাট দুই বাহু ।



স্কুলে যাওয়ার সময় সকাল দশ ঘটিকা, কিন্তু তারও ঘন্টা দুই আগে থেকেই প্রস্তুত হয়ে বসে থাকে আর সারাক্ষন পায়চারি করে এপাশ থেকে ওপাশ । বারবার ঘড়িতে সময় দেখে । সময় যেনো কিছুতেই চলছেনা, ঘড়ির কাটা অচল হয়ে আছে । অপেক্ষা শুধু দীর্ঘ হয় তার । তারপর আস্তে আস্তে চলতে শুরু করে স্কুলের পথে । স্কুলের রাস্তা সামনে কিছুটা এগিয়ে মিলেছে পূর্ব দিক থেকে আসা আরেকটি রাস্তার সাথে । এরপর রানীর দিঘীর কাছে মোড় ঘুরে চলে গেছে স্কুলের পথে । এখান থেকে স্কুল বেশি দূরে নয় । এই মোড়ে এসে অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে থাকার পর, অবশেষে তার দিকে মৃদু পায়ে এগিয়ে আসতে থাকে তার প্রিয় সহপাঠিনী । কাছে এসেই একটা স্মিত হাসি, বিদ্যুৎ চমক বয়ে যায় বালকের বুকে । কিন্তু মেয়েটার হাসিতে এমনই মোহ এমনই স্বস্তি, যেনো মেলে ধরলো শত ফুলে সাজানো বরন ডালা । এই হাসির অর্থ বুঝেনা বালক । বুকে শুরু হয় ধুকপুকানি । মাথা নিচু করে নিঃশব্দে হেটে যায় বালক, মেয়েটির পাশ দিয়ে ।



চলতে গিয়ে মেয়েটি হেসেহেসে টুকটাক কথা বলে, দু'চার টা এলোমেলো প্রশ্ন বালকের দিকে, কখনওবা চপল কিছু খুনসুটি । বালকটি নিরবে পথ চলে । মাঝে মাঝে হ্যাঁ বা না, এর বেশী কথা সে বলতে পারেনা । আপন মনে পথ চলতে থাকে বালক, মেয়েটির কোন কথাই তার কানে ঢুকছেনা যেনো । মনে মনে সুর ভাজে, গুনগুনিয়ে হঠাৎ গেয়ে উঠে দুই লাইন । অমনি মেয়েটি হেসে উঠে সশব্দে । মাথা নিচু করে লজ্জায় রাংগানো মুখ লুকায় বালক । মেয়েটির চোখের দিকে তাকানোর শক্তি হয়না তার । পাশে থেকে নিঃশব্দে হেটে যায় সে । আর আড়চোখে দেখে মেয়েটির খোলা বাহু । দেখতে খুব ভাল লাগে তার, আহা কি সুন্দর শ্বেত-শুভ্র বরফ-কুচির মত । মেয়েটির জামার হাতা যেখানে শেষ হয়েছে, সেখানে খোলা চামড়ায় বালকের লোভী চোখের অহর্নিশ আসা যাওয়া ।



"আজ চব্বিশ বছর পর কেন আমাকে এটা জিজ্ঞেস করছ ?

তোমার এই প্রশ্নের কোন জবাব নেই আমার কাছে ।

আমি সত্যি জানিনা, কেনো তোমাকে কিছু বলতে পারিনি ।।"



তুমি এক পলকে তাকিয়ে আছো আমার দিকে । যেনো তোমার প্রশ্নের জবাব খুঁজছ আমার চোখে মুখে, আমার অভিব্যক্তিতে । নাকি তোমার দৃষ্টি খুঁজে বেড়াচ্ছে চব্বিশ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া সেই বালকের মুখ !



কিছুক্ষন চুপ থাকার পর তুমি বললে, "এই এত গুলি বছর, এতটুকুও মনে পড়েনি আমায় ??"



কি বলব আমি ?

কি হবে এই কথার উত্তর দিয়ে ??

কি করে বলি, 'আমার চেতনায় আমি সারাক্ষন শুধু খুজেছি নরম-তুলতুলে সাদা-শুভ্র ধবধবে নগ্ন দুই বাহু । যখনই ছুঁতে যাই, মিলিয়ে যায় । যখনই ধরতে যাই, পালিয়ে যায়' !!



তারপর ওর সজল চোখের দিকে তাকিয়ে আমি বললাম, "যদি উল্কি হতে পারতাম, তাহলে আমাকে পেতে তোমার জামার হাতার নিচে, তোমার নরম তুলতুলে নগ্ন বাহুতে । যেন লেপটে আছি সারাক্ষন তোমার দুই হাতের নগ্ন বাহুতে, যেনো জড়িয়ে আছি আমার সব অস্তিত্ব নিয়ে তোমার মাঝে " !!!

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৪১
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×