somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গণজাগরণ মঞ্চ এবং কতিপয় আওয়ামী লীগের সুশীল নেতাকর্মীর ভণ্ডামি :-0 :-0

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গণজাগরণ মঞ্চ,স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে নির্দলীয় গণআন্দোলনের মোহনা।মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করা রাজাকার-আল বদর-আল শামস বাহিনীর বিচারের দাবীতে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা “ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি” এর আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লেও রাজনৈতিক কারনে সাফল্যের মুখ দেখতে পারেনি।বিশেষ করে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নামে বিএনপি এর রাষ্ট্রদ্রহিতার মামলা,পরে বিএনপি-জামায়াত জোটের খড়গ হস্ত পদে পদে বাঁধা সৃষ্টি করে আন্দোলন থামিয়ে দেবার হাজার চেষ্টা করেছিল।ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলন একেবারে চুপসে যায় শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুর পর।এখানে একটা বিষয় উল্লেখ করার মত তা হল ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসলেও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এর আন্দোলন বা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে কোন কার্যকর ভুমিকা রেখেছিল বলে আমার মনে হয়না।তবে সবথেকে বড় বিষয় ছিল,ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সারা দেশে স্বাধীনতার অনেক বছর পর হলেও সাধারণ মানুষের মনে যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে মানুষের মনের ঘৃণাকে নতুন করে উস্কে দিতে পেরেছিল এবং তাদের বিচার যে হওয়া দরকার এটা নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছিল।
২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের নির্বাচন ইশতেহারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি বড় করে সামনে নিয়ে আসে।আর এই ইস্যু কেন্দ্র করে তরুণ সমাজ বা নতুন ভোটারদের তারা আকৃষ্ট করে ব্যাপকভাবে।যাই হোক নির্বাচনে জিতে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করে।অনেকটা ধীরে বিচার কাজ চললেও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ছিল,যাক বিচার তো শুরু হয়েছে।সব ঠিক থাকলেও বিপত্তি বাধে কসাই কাদের মোল্লার রায় কেন্দ্র করে।রায়ে কসাই কাদেরের ফাঁসি না হয়ে জেল হওয়ায় অনলাইনে সোচ্চার হয় তরুণ প্রজন্ম।শাহাবাগে যে প্রতিবাদের ডাক দেওয়া হয় তা দুই/তিন দিনে রূপ নেয় লাখো মানুষের ক্ষোভের দাবানলে।তৈরি হয় জাগরণ মঞ্চ,বাড়তে থাকে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা।আর এই জাগরণ শুধু শাহাবাগে নয় দ্রুত ছড়িয়ে যায় বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে।জামায়াত-বিএনপি ছাড়া অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সমর্থন দেয় সেই জাগরণকে। এই জাগরণ দমাতে শুরু হয় জামায়াত-শিবিরের হত্যা অভিযান।ব্লগার রাজীব হায়দারকে দিয়ে শুরু হয় সেই হত্যা মিশন।ব্লগারদের নাস্তিক আখ্যা দিয়ে মাঠে নামানো হয় হেফাজতকে।কিন্তু দমানো যায়নি জনতাকে।সরকার আইন পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়,কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়।যার ফলে কিছুদিন আগে ফাঁসি হয় কসাই কাদের মোল্লার।
এখন আসি কিছু মজার বিষয়ে,আওয়ামী লীগ গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনকে সর্বাত্নক সমর্থন দেয়।আওয়ামী লীগের অতি উৎসাহ একটা সময় জাগরণ মঞ্চ আওয়ামী লীগ চালাচ্ছে এমন কথা ছড়াতে থাকে জামায়াত-বিএনপি।আমরা দেখেছি জাগরণ মঞ্চে উঠার জন্য বা এক লাইন বক্তৃতা দেবার জন্য আওয়ামী নেতাদের কি আকুতি।দেখেছি মঞ্চ দখল নিতে ছাত্রলীগের সোহাগ-নাজমুলদের কি প্রচেষ্টা।অথচ ইদানিং দেখতেছি কিছু সুশীল আওয়ামী নেতা- কর্মীরা জাগরণ মঞ্চ নিয়ে নানা নেতিবাচক কথা বলে জাগারন মঞ্ছকে হেয় করার প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। সেই সব সুশীল আওয়ামী নেতা-কর্মীদের বলছি –
#স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ বা তাদের সহযোগী সংগঠনের কোন আন্দোলন আবালবৃদ্ধবণিতাকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে একত্র করতে পারেনি?
কেন কেউ শেখাতে পারেনি,ক তে কাদের মোল্লা-তুই রাজাকার তুই রাজাকার
#কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন জেল হবার পর আওয়ামী লীগ ও তাদের মহাক্ষমতাশালী ছাত্রলীগ-যুবলীগ সহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা চুপ ছিলেন কেন?
#জাগরণ মঞ্চের আন্দোলনে মঞ্চে ওঠার জন্য বা এক লাইন বক্তৃতা দেবার জন্য মন্ত্রী-এম পিরা মরিয়া ছিল কেন?
#সোহাগ-নাজমুল রা মঞ্চে চেহারা দেখাবার জন্য এত উতলা ছিল কেন ?
#হেফাজতের তান্ডবের সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা গর্তে লুকানো ছিল কেন?
#শুধু শাহাবাগ নয় জামায়াত-শিবিরের শক্ত ঘাঁটি পাইকগাছা-কয়রায় যখন ১০/১২ হাজার জামায়াত-শিবির কর্মী হেফাজত নামে সারা পাইকগাছায় তাণ্ডব চালিয়েছিল তখন জীবনের ঝুকি নিয়ে জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত ছিলাম,তখন কোথায় ছিল আওয়ামীলীগের সব নেতাকর্মীরা?
# কাদের মোল্লার ফাসির পর পাকিস্থানের সংসদে নিন্দা প্রস্তাবের পর কোথায় প্রতিবাদে মুখর ছিল ছাত্রলীগ বা যুবলীগ ?
#আজ যখন গণজাগরণ মঞ্চে মানুষ হয়না বলে জিকির করছেন তখন কি একবারও মনে হয়না যে জাগরণ মঞ্চ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়।আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে কোথাও মানুষ যায়না সেটা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগেরও অপমানের বিষয় এটা কি মাথায় থাকেনা?
#যখন পাকিস্থানি দূতাবাস ঘেরাও করতে যেয়ে হাতে জাতীয় পতাকা আর মুখে জয় বাংলা স্লোগান দেবার সময় একজন বীর প্রতীক মুক্তিযোদ্ধা,নারী সাংসদ তারানা হালিম,মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির বা একজন জাগরণ মঞ্চের কর্মী শাম্মি আক্তার আওয়ামী সরকারের পুলিশ বাহিনীর হাতে মার খেয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে,তখন কি স্বাধীনতার চেতনার একমাত্র সোল এজেন্ট মনে করা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চেতনায় বিন্দুমাত্র আঘাত করে না ?
#আওয়ামী চেতনার সুশীলরা যখন জাগরণ মঞ্চে পুলিশ দিয়ে হামলা করা নিয়ে মজা করে তখন তাদের সেই চেতনার মুখে তারা নিজেরা লাথি মারছে,এটা কি একবারও মনে হয়না?
আওয়ামী সুশীল নেতা-কর্মীদের বলব,আপনারা আওয়ামী লীগ প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিতে বলেন,যেন কোন আওয়ামী সমর্থক জাগরণ মঞ্চে যেয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে সোচ্চার না হয়,যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাওয়া ও বিচার করা একমাত্র আওয়ামীলীগের কাজ।
আর তা যদি না করা হয় তবে আমার মত সক্রিয় আওয়ামী সমর্থকরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাইতে শুধু জাগরণ মঞ্চ নয়,যারাই এই দাবীতে আন্দোলন করবে সেখানেই হাজির হয়ে যাব।আর সেখানে যাওয়া নিয়ে কোন বিরুপ মন্তব্য শুনলে সেইসব বিদ্রুপকারিদের মুখে মুতে দিলে আবার চিল্লায়েন না যে চেতনা ব্যবসায়িদের মুখে মুখে মুতে দিলাম কেন।
জাগরণ মঞ্চের প্রতি বলব,মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে থাকতে হলে সেই চেতনার মধ্যমণি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কে ভুলে বা ইচ্ছাকৃত আড়ালে রাখলে সেটাও হবে ভণ্ডামি।শুধু “জয় বাংলা” বললে হবে না সাথে “জয় বঙ্গবন্ধু” বললে আপনাদের ইজ্জত কমবে না।মনে রাখতে হবে “জয় বাংলা” বা “জয় বঙ্গবন্ধু” আওয়ামীলীগের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয় এটা আপনার আমার সমস্ত বাঙালি জাতির স্মম্পদ।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু


৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×