somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামে কাম ও কামকেলি (3-2)

১২ ই মার্চ, ২০০৬ রাত ১২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(সতর্কতা: নরনারীর যৌনাচার নিয়ে এই প্রবন্ধ। স্বাভাবিকভাবেই কামসম্পর্কিত নানাবিধ টার্ম ব্যবহার করতে হয়েছে প্রবন্ধে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ভাষার মধ্যেও তাই অশালীনতার গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। কাম সম্পর্কে যাদের শুচিবাই আছে, এই প্রবন্ধ পাঠে আহত হতে পারেন তারা। এই শ্রেনীর পাঠকদের তাই প্রবন্ধটি পাঠ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধে করা যাচ্ছে। পুর্ব সতর্কতা সত্বেও যদি কেউ এটি পাঠ করে আহত বোধ করেন, সেজন্যে কোনভাবেই লেখককে দায়ী করা চলবে না।)

তৃতীয় কলি (2)

গ্রুপ সেক্স/ উন্মাতাল সেক্স
ব্লু ফিল্মে আমরা দেখতে পাই, একদঙ্গল নারী পুরুষ বিভিন্ন ভঙ্গিমায় সেক্স করছে । একই সময়ে কিংবা সামান্য সময়ের ব্যবধানে একজন পুরুষ একাধিক নারীর সাথে সেক্স করছে কিংবা একজন নারী একাধিক পুরুষের সাথে সেক্স করছে। এইসব অশ্লীল ছবির অন্যতম প্রধান আকর্ষণই হচ্ছে এই গ্রুপ সেক্স. কিংবা দু'জনেরই সেক্স - তবে একটু পর পর সেক্স পার্টনারটি বদলিয়ে নেয়া। পর্ণো ছবির এ এক সাধারণ বৈশিষ্ট, এভাবেই ছবিগুলি দর্শক টানে কারণ অধিকাংশ দর্শকের মনের গোপনে এ ধরণের উন্মাতাল সেক্সের জোয়ারে গা ভাসানোর ইচ্ছা সুপ্ত থাকে, কিন্তু বাস্তবে কখনও তা হয়ে উঠে না। সুতরাং এইসব ছবির মাধ্যমে দর্শকরা মনের অতৃপ্ত কামনার কিছুটা হলেও প্রশমন ঘটায়। ছবি দেখতে দেখতে তাদের হয়তো মনে হয়- আহ্, আমিও যদি এরুপ একটি দৃশ্যে অভিনয় করার সুযোগ পেতাম। আচ্ছা- এই ধরণের ইচ্ছা কি আমাদের নবীর (দঃ) মনেও জেগেছিল কোনদিন? তৌবা, নাউজুবিল্লাহ। এধরণের চিন্তাও পাপ, গার্ডেন ভ্যারাইটির জিহাদিরা শুনেলে নির্ঘাৎ কিরিচ হাতে কল্লা কাটতে বেরুবে। এখন নীচের হাদিসটি পড়ুন এবং হলি ষ্টাইলের উন্মাতাল সেক্স সম্পর্কে কল্পনা করুন। কল্পনা করুন, আপনার প্রায় ডজন খানেক বউ এবং উপপত্নী আছে। আরও কল্পনা করুন, আপনার সবচেয়ে প্রিয় বউটি আপনাকে নিজ হাতে সাজিয়ে অন্য নারীর সাথে সেক্স করতে পাঠাচ্ছে। যদি একে উন্মাতাল সেক্স (sex orgy) না বলা যায় তা'হলে সে জিনিসটি কী? অনুগ্রহপুর্বক স্মরণ রাখবেন, এই উন্মাতাল সময়ে নবীর (দঃ) হেরেমে কমপক্ষে গোটা ন'য়েক বিবি ছিলেন।

সহি বুখারিঃ ভলিউম-1, বুক নং-5, হাদিস নং-270:
মহম্মদ বিন আল-মুনতাছির হতে বর্ণিতঃ
তার পিতার সুত্র উল্লেখ করে (তিনি বর্ণনা করেন) যে তিনি আয়েশাকে ইবনে উমরের বর্ণনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন (ইবনে উমরের বর্ণনা এরুপ- যতক্ষন পর্য্যন্ত তার শরীর হতে আতরের গন্ধ বেরুচ্ছে, ততক্ষন পর্য্যন্ত তিনি মাহরিম হতে ইচ্ছুক নন্)। আয়েশা বলেন- "আমি আল্লাহর রাসুলকে সুগন্ধি লাগিয়ে দিতাম এবং তিনি পর্য্যায়ক্রমে সকল স্ত্রীর কাছে যেতেন এবং সকলের সাথে (যৌনসঙ্গম করতেন)), এবং সকালবেলায় (গোসলের পর) তিনি ছিলেন মাহরিম"।

সহি মুসলিমঃ বুক নং-8, হাদিস নং-3445:
আবু বকর বিন আব্দুর রহমান বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (দঃ) উম্মে সালমাকে বিয়ে করলেন এবং তার ঘরে গেলেন। অতঃপর যখন তিনি সেখান থেকে বের হয়ে আসার উদ্যোগ নিচ্ছিলেন, তখন তিনি (উম্মে সালমা) তার কাপড় আকড়িয়ে ধরলেন। রাসুলুল্লাহ (দঃ) এতে বললেন- যদি তুমি ইচ্ছে করো, আমি তোমার সাথে আরও বেশী সময় থাকতে পারি, সেক্ষেত্রে আমাকে সময় গননা করতে হবে (অর্থাৎ যে সময়টুকু আমি তোমার সাথে কাটাব, অন্য স্ত্রীদের সাথেও আমাকে ঠিক সেই পরিমান সময় কাটাতে হবে)। কুমারি বউয়ের জন্যে এক সপ্তাহ, পুর্ব-বিবাহিতার জন্যে তিন দিন।

এই উন্মাতাল সেক্সের পক্ষে স্বর্গীয় অনুমতি ছিল; ইমাম গাজ্জালির লেখা হতে তার প্রমান মেলে। একাধিক পার্টনারের সাথে সেক্সের নিয়মকানুন সম্পর্কে তিনি লিখেছেন (রেফারেন্স-7, পৃ-368):-
গারিব হাদিসে বর্ণিত আছে যে আল্লাহর রাসুল বলেছেন- "আমি জিব্রাইলের কাছে অভিযোগ করেছিলাম যে স্ত্রীদের সাথে সঙ্গমের জন্যে আমি আরও অধিক পরিমান (যৌন) শক্তি লাভ করার ইচ্ছে করি, এবং তিনি (জিবরাইল) আমাকে হারিসা খাওয়ার জন্যে উপদেশ দেন"।

একটি অসাধারণ হাদিস কোট করে বর্তমান প্রসঙ্গের ইতি টানব আমি। অনুমান করুন, একটিমাত্র রাত্রিতে কী পরিমান বীজ প্রবাহিত হওয়ার প্রয়োজন হতো !

সহি বুখারিঃ ভলিউম-7, বুক নং-62, হাদিস নং-6:
আনাছ হতে বর্ণিতঃ
নবী পর্য্যায়ক্রমে সকল স্ত্রীর ঘরে যেতেন এবং একই রাত্রিতে তাদের সকলের সাথে (সহবাস) করতেন। এবং তার স্ত্রীর সংখ্যা ছিল নয় জন। স্ত্রীলোকের বীর্য্যের রং হলুদ !

যৌবনকালে অধিকাংশ মেয়েপুরুষই যৌনসম্পর্কিত স্বপ্ন দেখে। ছেলেদের বীর্য্যপাত হয় (স্বাভাবিক সঙ্গমকালে যেরুপ বীর্য়্যপাত হয় ঠিক তদ্রুপ), বাংলা ভাষায় এর নাম স্বপ্নদোষ (nocturnal emission)। মেয়েরাও যৌন বিষয়ক স্বপ্ন দেখতে পারে এবং চরম পুলক (অর্গাজম) হতে পারে, তবে পুরুষের মতো তাদের কোন স্খলন হয় না, কারণ যোনিদেশে সিমেন বা বীর্য্য উৎপন্ন হয় না। নবীর প্রিয় স্ত্রী আয়েশাও বিষয়টি জানতেন, কারণ তিনি ছিলেন একজন নারী। তবে মহম্মদ (দঃ) এই বৈজ্ঞানিক সত্য সম্পর্কে সম্পুর্ণ অজ্ঞ ছিলেন এবং মনে করেছিলেন যে পুরুষদের মতো মেয়েদেরও বোধ হয় বীর্য্যপাত ঘটে। তিনি সম্ভবত কোন স্ত্রীলোকের কাপড়ে হলুদ দাগ দেখে থাকবেন যা সাধারনত ঋতুস্রাবের পরে ঘটে। তা দেখেই তিনি মনে করেছিলেন যে এটিই স্ত্রীলোকের স্পার্ম বা বীর্য়্যের দাগ। যখন আয়েশা তার ভুল শুধরে দিতে চাইলেন, তিনি তাকে ধমক মেরে চুপ করিয়ে দিয়ে নিজের ভ্রান্ত ধারণা তার উপর চাপিয়ে দিলেন। যদি কোন স্ত্রীলোক নীচের হাদিসগুলি পড়েন, তিনি যেন আবার যেন ভেবে না বসেন যে তার স্ত্রী অঙ্গটিতে কোন রোগ বাসা বেধেছে।

সহি মুসলিমঃ বুক নং-3, হাদিস নং-0608:
আনাছ বিন মালিক বর্ণনা করেছেন যে উম্ সুলাইম (সুলাইমের মা) বলেছিলেন যে তিনি একবার রাসুলুল্লাহর (দঃ) কাছে একজন মেয়ে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে পুরুষদের মতোই স্বপ্ন দেখত (যৌনস্বপ্ন)। আল্লাহর রাসুল (দঃ) বললেন- যদি কোন মেয়ে এরুপ দেখে, তাকে অবশ্যই গোসল করতে হবে। উম সালমা বলেন- আমি এ বিষয়ে (কথা বলতে) খুবই লজ্জা পাচ্ছিলাম এবং বললাম- ইহা কি ঘটে? তখন রাসুলুল্লাহ (দঃ) বললেন- হ্যা (ইহা ঘটে)। নইলে একটি শিশু কীভাবে তার মা'র মতো হয়? পুরুষের স্খলন (বীর্য্য) ঘন ও শাদা, স্ত্রীলোকের স্খলন পাতলা এবং হলুদ। সুতরাং দু'জনের মধ্যে যার জিন বেশী প্রবল হবে, বাচ্চা তার মতো হবে।

সহি মুসলিমঃ বুক নং-3, হাদিস নং-0610:
উম্মে ছালামা বর্ণনা করেছেনঃ
উম্ সুলাইম রাসুলুল্লাহর (দঃ) কাছে গেলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন- হে রাসুলুল্লাহ (দঃ)। আল্লাহ সত্য হতে লজ্জিত নন। একজন মেয়ে যদি যৌনবিষয়ক স্বপ্ন দেখে, তার কি গোসল করার প্রয়োজন আছে? এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ (দঃ) বললেন- হা, যদি তার পানি বের হয়। উম্মে ছালামা বললেন- রাসুলুল্লাহ, মেয়েরা কি যৌনবিষয়ক স্বপ্ন দেখে? তিনি বললেন- তোমার হাত ধুলিধুসরিত হোক। তার শিশু তবে কীভাবে তার মতো হয়?

পেছন হতে/ পায়ুপথে সেক্স

আমি একথা গোপন করব না যে হাদিস পাঠ করা ছিল আমার সময় কাটানোর সবচেয়ে প্রিয় উপায়। হাদিস পড়তে আমি ভালবাসতাম, যেখানে যত হাদিস আছে। আমি যত বেশী হাদিস পড়তে থাকলাম, তত বেশী করে ইসলাম ও তার নবী মহম্মদকে (দঃ) বুঝতে পারলাম। আমি মনে করি হাদিসগুলিতে একজন ভাল ও খাটি মুসলমানের চিত্র সংরক্ষিত আছে। শুরুতে ভেবেছিলাম- হাদিসে বোধ হয় শুধুমাত্র ধর্মীয় নিয়মকানুন, আধ্যাত্মিক নিয়মকানুন কিংবা ধর্মযুদ্ধ (জিহাদ) সংক্রান্ত বিষয়াদিই আছে। কিন্তু ইসলামের মুল লিপিগুলিতে যৌনকামনা উদ্রেককারী এতসব বর্ণনা পেয়ে আমি যেন বোবা হয়ে গেলাম। এরুপ মন্তব্য করা বোধ হয় অসমীচিন হবে না যে কোন কোন হাদিসকে যৌনাচারের সারগ্রন্থ (ম্যানুয়াল অব সেক্স) বলে অভিহিত করা যায়। সেক্স করতে গেলে কী কী করতে হবে এবং কী কী করা যাবে না- তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ রয়েছে সেখানে। কোন কোন হাদিস এমনকি বিশ্বের প্রাচীনতম পর্ণোগ্রন্থ কামসুত্রকেও লজ্জা দিতে পারে। এগুলিকে "সহি পর্ণোগ্রাফি- লা বেদুঈন ষ্টাইল" কিংবা লা ইসলামিক ষ্টাইল বলে অভিহিত করলে অন্যায় হবে না। এখানে আমি মাত্র গোটাকয়েক নমুনা পেশ করছি। পাঠক পাঠিকাদেরকে অনুরোধ করব- দয়া করে সিহা সিত্তা গ্রন্থ ছয়টি ভালভাবে পাঠ করুন। আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি, ঠকবেন না। এত নুতন নুতন জিনিস আবিস্কার করতে পারবেন যে আপনাদেরকে মোটেই আফশোস করতে হবে না।

সে যুগের আরব বেদুঈনরা কী ধরণের সেক্সুয়াল প্র্যাক্টিস অনুসরণ করতো, হাদিগুলিতে তার বিশ্বস্ত বর্ণনা রয়েছে। আমরা দেখতে পাই যে বিভিন্ন গোত্রগুলি সহবাসের সময় যে পদ্ধতি বা ষ্টাইল অনুসরণ করতো, তার মধ্যে বিস্তর ফারাক ছিল। একজন ইহুদি তার স্ত্রীর সাথে যে ষ্টাইলে সেক্স করতো, তা তার বেদুঈন প্রতিবেশীর চেয়ে ভিন্নতর ছিল। শহরে এবং মরুভুমিতে প্রচলিত পদ্ধতিগুলিও ছিল ভিন্ন ভিন্ন। আমরা আরও দেখতে পাই যে সেক্সের ব্যপারে মরুচারি বেদুঈনরা বেশ এগিয়ে ছিল। সেক্সের আসন, সেক্সের ষ্টাইল ইত্যাদি কেলিগুলিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল তারা। আনসার এবং মোহাজেরদের মধ্যেও এই ষ্টাইলের বিস্তর পার্থক্য ছিল। ইহুদিরা সাধারণত শাস্ত্রীয় আসন অনুসরণ করতো। পক্ষান্তরে মক্কা হতে আগত মোহাজেররা স্ত্রীদের সাথে বিভিন্ন আসনে সেক্স করতে অভ্যস্ত ছিল। এইসব আসনের মধ্যে তাদের সবচেয়ে প্রিয় ছিল পেছন দিক হতে সঙ্গম করা। আনসার কিংবা ইহুদি রমনীরা এই ষ্টাইলে অভ্যস্ত ছিল না। মোহাজেরগণ এই ষ্টাইল আনসার রমনীদের উপর প্রয়োগ করতে শুরু করলে রমনীরা অসন্তুষ্টি ও বিরক্তি প্রকাশ করে। কারণ কোন কোন মোহাজের ষন্ড এই সুযোগে মেয়েদের পায়ুপথে লিঙ্গ প্রবিষ্ট করাতেও দ্বিধাবোধ করত না। এইসব মোহজেররা ছিল যৌন দুর্ভিক্ষের শিকার, নবীর সাথে মদীনায় হিজরতের কারণে অধিকাংশ মোহাজেরই তাদের বউ মক্কায় ফেলে এসেছিল। সুতরাং মেয়ে দেখলেই ক্ষুধার্ত নেকড়ের মতো হয়ে যেতো তারা। কোন মেয়ের সাথে ঘুমানোর সুযোগ পেলে এমন আচরণ করতো যে অনেক ক্ষেত্রেই মেয়েটির কাছে তা বলাৎকার এবং গর্হিত বলে মনে হতো। মোহজেরদের এই অনাকাঙ্খিত আচরণের কথা আনসারি মেয়েরা রাসুলের কানে তুলে। অবিলম্বে আল্লাহর তরফ থেকে অহি নেমে আসল এবং পায়ুপথে সঙ্গম নিষিদ্ধ বলে ঘোষিত হলো। কুকুরের ষ্টাইলটি (পেছনের দিক হতে সঙ্গম) অবশ্য বহাল রইল, যদিও আনসারি মেয়েরা এই পদ্ধতিটির উপর খুব একটা সন্তুষ্ট ছিল না।

এপ্রসঙ্গে গোটাকয়েক হাদিস বর্ণনা করা হলো নীচে। নিশ্চয়তা দিচ্ছি, হাদিসগুলি আপনাদের বিস্তর মজার খোরাক জোগাবে।

সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-11, হাদিস নং-2159:
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিতঃ
ইবনে উমর ভুল বুঝেছিল ("তোমাদের স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের শস্যক্ষেত্র, সুতরাং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তা চাষ কর"- কোরাণের এই আয়াতটির ভুল অর্থ বুঝেছিলেন ইবনে উমর), আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন। আসল ঘটনা এই যে আনসারদের এই গোত্রটি ছিল পৌত্তলিক। তারা ইহুদিদের পাশে বসবাস করত যারা ছিল কেতাবধারী সমপ্রদায়। জ্ঞানের ক্ষেত্রে তারা (আনসাররা) ইহুদিদেরকে শ্রেষ্ঠতর বলে গন্য করতো এবং তাদের রীতিনীতি অনুসরণ করত। কেতাবধারী সমপ্রদায়রা (অর্থাৎ ইহুদীরা) স্ত্রী-সঙ্গমকালে শুধুমাত্র একটি আসন ব্যবহার করত (চিৎ করে শায়িত অবস্থায়)। এই আসনটিতে মেয়েরা (অর্থাৎ তাদের যোনি) সবচেয়ে লুক্কায়িত অবস্থায় থাকে। আনসারদের এই গোত্রটি ইহিিদদের কাছ থেকে এই আসন শিখে নেয়। কিন্তু কোরেশরা মেয়েদেরকে সম্পুর্ণভাবে উলংগ করে নিত, এবং পেছন থেকে ও সামনে থেকে = উভয় দিক থেকেই আনন্দ পেতে চেষ্টা করত। মোহজেরগণ যখন মদীনায় এলো, তাদের মধ্যে জনৈক ব্যক্তি একজন আনসার রমনীকে বিয়ে করে। সে যখন তার সাথে এই ভাবে সঙ্গম করতে শুরু করল (অর্থাৎ মক্কা ষ্টাইলে), মেয়েটি তা পছন্দ করল না এবং তাকে বলল- একটিমাত্র আসনেই আমরা অভ্যস্ত । সেইভাবে কর, নচেৎ আমার কাছ থেকে দুর হয়ে যাও। ঘটনাটি ব্যাপকভাবে প্রকাশ হয়ে পড়ল এবং রাসুলের (দঃ) কানে পৌছল। সুতরাং মহান আল্লাহ কোরাণের আয়াতটি অবতীর্ণ করলেন- "তোমাদের স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের শস্যক্ষেত্র, সুতরাং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তা চাষ কর"। অর্থাৎ- সামনের দিক হতে, পেছনের দিক হতে কিংবা চিৎ করে শায়িত অবস্থায়। তবে এই আয়াত (শুধুমাত্র) সন্তান প্রসবের ছিদ্রকে অর্থাৎ স্ত্রীযোনিকে নির্দিষ্ট করে দিয়েছে।

সহি মুসলিমঃ বুক নং-008, হাদিস নং-3364:
জাবির (বিন আব্দুল্লাহ) (রাঃ) বর্ণনা করেন যে ইহুদিরা বলত যে যদি কেউ পেছনের দিক হতে স্ত্রীযোনিতে যায় এবং স্ত্রী গর্ভবতী হয়, তবে সন্তান হবে টেরা চোখবিশিষ্ট। সুতরা এই আয়াত নাজেল হলো- "তোমাদের স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের শস্যক্ষেত্র, সুতরাং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তা চাষ কর"।

সহি বুখারিঃ ভলিউম-6, বুক নং-60, হাদিস নং-51:
জাবির হতে বর্ণিতঃ
ইহুদিরা বলত: "যদি কেউ পেছনের দিক হতে স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করে, তবে সে টেরা চোখবিশিষ্ট সন্তানের জন্ম দেবে"। সুতরাং এই আয়াতটি নাজেল হলো- "তোমাদের স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের শস্যক্ষেত্র, সুতরাং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তা চাষ কর"।

সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-12, হাদিস নং-2212:
উরুয়া হতে বর্ণিতঃ
খাওলা ছিল আউস ইবনে আস-সামিতের স্ত্রী; সে এমন একজন পুরুষ যার যৌনক্ষমতা ছিল অসাধারণ। যখন তার সঙ্গম-বাসনা খুব প্রবল হলো, সে স্ত্রীকে তার মায়ের পাছা বলে কল্পনা করে নিলো। সুতরাং জিহারের প্রায়শ্চিত্তস্বরূপ মহান আল্লাহ কোরানের আয়াত নাজেল করলেন (জিহার শব্দের অর্থ হচ্ছে স্ত্রীর কোন অঙ্গকে মা, খালা ইত্যাদি মাহরিম মেয়েলোকের অঙ্গের সাথে তুলনা করা বা কল্পনা করা)।

সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-12, নাম্বার-2214:
ইকরিমা হতে বর্ণিতঃ
জনৈক লোক তার স্ত্রীকে তার মায়ের পাছা হিসেবে তুলনা করেছিল। অতঃপর কোনরুপ প্রায়শ্চিত্ত করার পুর্বেই সে তার সাথে সঙ্গম করল। সে রাসুলের (দঃ) নিকট গেল এবং তাকে বিষয়টি জানাল। তিনি (তাকে) জিজ্ঞেস করলেন- এ কাজ করতে তোমাকে প্রেরণা জোগাল কে? সে বলল- আমি চাঁদের আলোতে তার শুভ্র জঙ্ঘা দেখতে পাই। তিনি বললেন- যে পর্য্যন্ত তুমি তোমার কাজের প্রায়শ্চিত্ত না করেছ, সে পর্য্যন্ত তার (স্ত্রীর) কাছ থেকে দুরে থাক।

সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-11, নাম্বার-2157:
আবু হুরাইরা হতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ (দঃ) বলেছেন: যে স্ত্রীর সাথে পায়ুপথে সঙ্গম করে, সে অভিশপ্ত।

সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-29, নাম্বার-3895:
আবু হুরাইরা হতে বর্ণিতঃ
যদি কেউ ঐশী কেতাবধারীকে অবলম্বন করে এবং সে যা বলে তাই বিশ্বাস করে (অর্থাৎ ইহুদি), অথবা ঋতুকালে স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করে, অথবা স্ত্রীর পায়ুপথে সঙ্গম করে, -তবে মহম্মদের (দঃ) নিকট যা অবতীর্ণ হয়েছে সেগুলির সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই।

(ইসলামি সেক্স নিয়ে আরও মজাদার তথ্যসম্বলিত চতুর্থ কলির জন্যে অপেক্ষায় থাকুন)।

রেফারেন্সসমুহঃ
1। দ্য হলি কোরাণ; অনুবাদ- আঃ ইউসুফ আলী, পিক্থল, শাকির।
2। সহি বুখারি; অনুবাদ- ডঃ মোহম্মদ মহসিন খান।
3। সহি মুসলিম; অনুবাদ- আব্দুর রহমান সিদ্দিকী।
4। সুনান আবু দাউদ; অনুবাদ- প্রফেসর আহম্মদ হাসান।
5। ইমাম মালিক রচিত মুয়াত্তা; অনুবাদ- আ'শা আব্দুর রহমান এবং ইয়াকুব জনসন।
6। ডিকসনারি অব ইসলাম-1994, গ্রন্থকার- টি.পি.হাফস।
7। ইমাম গাজ্জালির ইয়াহ্ আল উলুমেদ্দিন (আব্দেল সালাম হারুন কতৃক সংক্ষেপিত-1997); ডঃ
আহম্মদ এ. জিদান কতৃক সংশোধিত এবং অনুদিত।
8। রিলাইয়ান্স অব দ্য ট্র্যাভেলার (সংক্ষিপ্ত সংস্করণ)-1999, গ্রন্থকার- আহম্মদ ইবনে নাগিব আল
মিস্রি, সংকলক- নুহ হা মিম কেলার।
9। শারিয়া দ্য ইসলামিক ল'-1998, গ্রন্থকার-আব্দুর রহমান ই. ডই।
10। ইবনে ইসহাকের সিরাত রাসুলুলাহ, অনুবাদ- এ. গুইলম, 15তম সংস্করণ।
11। দ্য হেদাইয়া কমেন্টারি অন দ্য ইসলামিক ল'স-(পুণর্মুদ্রন-1994); অনুবাদ- চার্লস হ্যামিল্টন।

লেখকঃ আবুল কাশেম, সিডনি, অষ্ট্রেলিয়া।
অনুবাদঃ খেলারাম পাঠক, ঢাকা- বাংলাদেশ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০০৬ সকাল ৭:২৬
১৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×