অমি যদি ছবির জন্য পোজ দিতে বলেন, সেইটাই বরং ভালো; এর লগে ইন্টেগ্রেটেড থাকছে তাইলে পারমিশন চাওয়া এবং দেওয়া। বাট পোজ দিতে তো বলতেই হয় না আসলে, পারমিশন চাইলেই পার্সনকে কনসাস করে তোলা হয় ক্যামেরা সম্পর্কে, তিনি তখন এক কনসাস সাবজেক্ট; বিষয় এবং কর্তা–দুই অর্থেই সাবজেক্ট। কনসাস দশায় থাকাটাই পোজ দেওয়া।
বিভিন্ন পক্ষের দাবিতে সবচে ক্লিয়ার বিষয়টা হইলো অমি’র ঐ পারমিশন চাওয়াটা; পোজ দেবার বিপক্ষের লোকেরা আসলে ফটোগ্রাফিতে পারমিশন না নেবার বিষয়া জাস্টিফাই কইরা যাইতাছেন। পারমিশন না নেওয়াটা জাস্টিফাই করা গেলে পাওয়ার স্ট্রাকচারের লাভ বিরাট; পারমিশন না নিয়া ‘অথেনটিক’ অর্থে ডকুমেন্টারি করার এথিকস স্টেটকে আরো পাওয়ারফুল করে তোলে।
পারমিশন না নিয়া ফটোগ্রাফি জাস্টিফাইড হলে স্টেটের নজরদারি জায়েজ হয় সহজে; এখনকার বাংলাদেশে সকল নাগরিকের ফোন রেকর্ড করাও পারমিশন না নেবার এথিকস্-এর আরেকটা চেহারা।
safe_imageকিন্তু দেশে সম্ভবতঃ আইনী নির্দেশনা আছে যে পারমিশন নিতে হবে; সেকারণেই দোকান, ব্যাংক বা অন্যান্য পাবলিক স্পেসে সিকিউরিটি ক্যাম লাগাইলে সেইটা দেখা যাবে এমন আলোকিত জায়গায় লেইখা জানাইতে হয়। এইটা ফটোগ্রাফির বেলাতেও সমানভাবে খাটার কথা; অন্তত সাবজেক্টকে আইডেন্টিফাই করা যায় এমন দূরত্ব এবং ফোকাসের বেলায় পারমিশন না নেবার আইনী সুযোগ নাই কোন; এই নির্দেশনার মধ্য দিয়া আইন ব্যক্তির অটোনমি, কনসেন্ট দেওয়া বা না দেওয়ার হককে আপহোল্ড করে।
অমি’র ফটোগ্রাফির নিন্দা করায় সবচে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির অটোনমি; ‘অথেনটিক’ থাকার ছুতায় ফটোজার্নালিজম স্টেটের/পুলিশের/র্যাবের দালালি করতে পারতাছে ভালো– গণমানুষের বিপক্ষে।
তাইলে ফটোজার্নালিস্টরা পোজ দিতে বলছেন না মানে হইলো তাঁরা পারমিশন নেবার দরকার দ্যাখেন না আদৌ। পারমিশন না নিয়া ফটোজার্নালিস্টরা তাদের সাবজেক্ট মানুষকে স্রেফ বিষয় হিসাবেই দেখতাছে; আগুনে পোড়া মানুষের প্রতি সম্মান আর ‘অথেনটিক’ ডকুমেন্টারির লোভে আমরা এরে অনুমোদন করতে পারি কি? আমাদের অনুমোদন নিয়া ফটোজার্নালিস্টরা তাদের সাবজেক্টকে আদৌ কর্তা হিসাবে রিকগনাইজ করার দরকার দেখছে না। আমরা যাঁরা পথে ঘাটে দৃষ্টিগ্রাহ্য (viewable) ভাবে ঘুরি তাঁদের পক্ষে কি থাকছি আমরা অমি’র ফটোগ্রাফির নিন্দা কইরা?
অমি’র ফটোগ্রাফির যে দুইটা ছবি দেখলাম তাতে আগুনে পোড়া কনসাস সাবজেক্ট যেই যেই ভঙ্গিতে আছেন সেই ভঙ্গিগুলিরে নিয়াও ভাবা যাক। ঐ দুই ভঙ্গি পোড়া মানুষ সম্পর্কে আমাদের অ্যাজাম্পশনকে ঝামেলায় ফেলে দেয়; কাতর এবং অসহায় যেইসব ছবি ফটোজার্নালিস্টরা আমাদের দেখাইতেছিলেন সেগুলির বিপক্ষে খাড়াইয়া আছে ভঙ্গি দুইটা। দর্শকের মন ততো ভেজে না ঐ ঐ ভঙ্গিতে; এই সময়ে আগুনে পোড়া মানুষের ছবি দেইখা দর্শকের মন না ভিজলে সরকারের সমস্যা বিরাট; ভঙ্গি দুইটায় আহত দশা আছে, মানবিক বিপর্যয় নাই; মানবিক বিপর্যয় না থাকায় মন ভেজে না ততো, কিছু দুঃখ হয় কেবল; ফলে আগুন যাঁরা দিছিলো তাদের প্রতি ঘেন্না ততো ঘন হইয়া উঠতে পারে না; তাতে করে সরকারের এই দুর্বিনীত অনমনীয়তা, সকল নাগরিকের ফোন রেকর্ড করার ঘটনাগুলি, ক্রসফায়ারে কিছু আপত্তির কারণ দেখতে পাই আমরা। এইটা সরকারের বিশেষ ঝামেলা; ফলে, সরকারের ফটোজার্নালিস্ট আর বুদ্ধিজীবী দালালরা তৎপর হইয়া উঠছেন অমি’রে সাইজ করার জন্য। নৈতিকতা প্রচারের নামে এনারা সরকারকে সহযোগিতা দিতেছেন আর দেশে মানুষের ব্যক্তিক অটোনমি’র আরেকধাপ অবনমন ঘটাইতাছেন।
ঐ ভঙ্গি দুইটা আরো কিছু বিরাট অর্থ তৈরি করে; ফটোজার্নালিস্ট আর মিডিয়ার এডিটরদের হাজির করা পোড়া মানুষ নাই হইয়া যায়; এই পোড়া মানুষেরা অমি’র ফটোতে পোজ দেবার ইচ্ছা নিয়াও যাপন করতে থাকে তাদের আহত দশা; এই বিষয়টা পোড়া মানুষ সম্পর্কে আমাদের অ্যাজাম্পশন পাল্টাইয়া দেয় পুরাই; ফটোজার্নালিস্টরা যদি সবাই তাদের সাবজেক্টের পারমিশন নিতেন সবসময় তাইলে মে বি এখনকার ‘পোড়া মানুষ’ পাইতামই না আমরা; শত্রুরে ঘায়েল করতে যাইয়া অথরিটি এমনেই নিজের মিছা চেহারা দেখাইয়া ফেলে বেহুশে।
::লেখক আছেন: http://www.toolittledots.biz/rock.986.manu
আলোচিত ব্লগ
স্মৃতিপুড়া ঘরে
বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।
দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
গরমান্ত দুপুরের আলাপ
মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন
রাজীব নূর কোথায়?
আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন
=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=
©কাজী ফাতেমা ছবি
মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।
হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।
ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন