somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোরানে ব্যবহৃত সাংকেতিক অক্ষর সমুহ অবোধ্য বিষয় নয়ঃ

১৩ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১২:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার এই লেখাটি মূলত সর্বসাধারনের পাঠযোগ্য নহে। যাহারা একটি বিশেষ ভাবধারায় গতানুগতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে কোরান বুঝিতে চাহেন আমার এই লেখা তাহাদের জন্য অপাঠ্য।
আমার লেখা মূলত আমাদের দলীয় লোকদের জন্য এবং যাহার উচ্চতর চিন্তা-চেতনায় উদবুদ্ধ সত্য সন্ধানী তাহাদের জন্য।কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা দলকে ইচ্ছা করে কোন কিছু লিখিতে চাহিনাই। কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
কোরানে ব্যবহৃত সাংকেতিক অক্ষর সমুহ অবোধ্য বিষয় নয়ঃ
কোরানের দ্বিতীয় সুরা- সুরা বাকারা প্রথম অক্ষর আলিফ লাম মিম (الم )। এই বিচ্ছিন্ন অক্ষরগুলোকে ‘হরফে মোকাত্তায়াত’ বলা হয়। ‘হরফে মোকাত্তায়াত’ অর্থ, সাংকেতিক অক্ষর। কোরানের ১১৪ টি সুরার মধ্যে ২৯টি সুরার প্রারম্ভে এইরুপ সাংকেতিক অক্ষর বাবহৃত হইয়াছে।বলা হইয়া থাকে ইহা আল্লাহ ব্যতিত আর কেহ জানেনা। ইহা হতেই শুরু হইয়াছে মুসলমান জাতির গোমরাহী। মুসলমান জাতীকে জ্ঞান থেকে বহুদূরে সরিয়ে রাখা হইল। কিছুই জানার দরকার নাই, শুধু কোরান পড়ে যাও, ইহাতেই হাজার পূন্যি। অতিরিক্ত জানতে চাওয়া ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি, আর ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি আল্লাহ পছন্দ করেননা। ছোট থেকে সবাইকে এমনটি শিখানো হয়ে থাকে। তাই আর মুক্ত চিন্তা থেকেও দূরে সরে যেতে থাকে মুসলমান জাতি।
কিন্তু প্রশ্ন হল, কোরান যদি মানুষের জন্য হয় তাহলে কোরানে এমন কিছু কথা বা বানী কেন থাকবে যা মানুষ জানিবে না, বুঝিবেনা ? কোরান বলছে কোরান বিজ্ঞানময়ী …শুধু বিজ্ঞানময়ী বলাটাও ভুল বরং মহা বিজ্ঞানময়ী (সুরা ইয়াসিন)। আর যাহা বিজ্ঞানময়ী তা অবশ্যই যুক্তি সম্পন্ন। আর এই যুক্তি খুজতে গেলেই পড়ে যত গালাগালি (ছেলে কাফের হয়ে গেছে, মুনাফিক), মিথ্যা অপবাদ, এমনকি ঘাড়ের উপর মাথাটা রাখাটাও অসম্ভব হয়ে পড়ে।অথচ কোরান মানুষকে যুক্তি নির্ভর হতে বলছে (৬_১০৪-১০৫; ১৬_৪৪,৬৪)দ্রষ্টব্য।
মহানবী কর্তৃক ইসলাম প্রচারের চৌদ্দ বছর পর, এখন আমরা যাহারা পৃথিবীতে বাচিয়া আছি, আমাদের দূর্ভাগ্য এই যে, আমরা নবীজিকে দেখি নাই, সাহাবীদের দেখা সাক্ষাত পাই নাই, এমন কি তাবে-তাবেঈনদের দেখা সাক্ষাত ও তাঁহাদের কথা বার্তা শুনিতে পাই নাই। এখন ধর্মকে সঠিকভাবে বুঝিয়া তাহা সুষ্ঠভাবে পালন করার জন্য আমাদের সামনে রহিয়াছে একমাত্র অবলম্বন পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরান। সেই কোরানেই যদি এমন কিছু কথা থাকে বা বানী থাকে যাহা মানুষকে জানিতে বুঝিতে দেওয়া হল না-তবে এই দুঃখ রাখিব কোথায়? অথচ মহিমান্বিত আল্লাহ পাক মানুষের পথ প্রদর্শনের জন্য কোরান নাজেল করিয়াছেন এবং তাহাতে ঈমান রাখার আদেশ দিয়াছেন। কিন্তু কোন অবোধ্য বাক্যের উপর পরিপুর্ন ঈমান আনা বা যথার্থ সত্য বলিয়া বিশ্বাস করা কি সম্ভব?
অনেক আলেম সাহেবরা বলে থাকেন কোরান বুঝতে নবিজীর হাদিস দেখতে হবে, হাদীসকে অবলম্বন বা হাদীস থেকে তার ফয়সালা বের করতে হবে। কোরানের ব্যাখ্যা হাদীস। ইহা মারাত্নক এক ভূল। হাদীস কখনো করানের বুঝিবার মানদন্ড হতে পারেনা। বরং হাদীস কোনটা সত্য কিংবা মিথ্যা তা কোরান দ্বারা বিচার হবে। আবার হাদীস সংগ্রহ শুরু হওয়ার বিষয়টা এক বিশাল ব্যপার। হাদীস সংগ্রহ শুরু হয় নবিজীর ওফাতের ২০০ বছর পর থেকে। বর্তমান বিজ্ঞানের যুগে বসে আমরা ১৯৭১ সালের যুদ্ধের আসল ইতিহাস জানতে পারিনা। আর ভেবে দেখুনত সেই সময় ২০০ বছর পর যত সতর্কতার সাথেই হাদীস সংগ্রহ হোকনা কেন তার সত্যতা কতটুকু হতে পারে? যদিও এই সকল হাদীস সংগ্রহ বিষয়টা নিয়ে আলোকপাত পরে অন্য একটি লেখায় দিব আসা রাখি। তাহলে মিথ্যার যে আবরন আমরা পড়ে আছি হাজার রঙ চাকচিক্য দিয়ে তা উলং হয়ে যাবে। তবে সেই ক্ষেত্রে বলে রাখছি সত্য সহ্য করতে পারে এমন লোকই পড়বেন। কেননা দেখা যাবে আমরা যে ধর্ম ইসলাম বলে চালিয়ে যাচ্ছি আসলে তা মোহাম্মাদী ইসলাম নয় বরং তা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সৌদি শাসকদের ভাড়া করা আলেমদের দ্বারা লিখিত হাদিস, কোরানের তফসির ব্যতিত কিছুই নয়। সেই নবিজীর ওফাতের পর হতেই কিভাবে এই শিশু মোহাম্মাদী ইসলামকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করা হয়, কিভাবে এই ধর্মকে রাস্তায় সকলের ব্যবহৃত পন্যের মত করে আনা হয়। রাগ হবেননা। এই ইতিহাস সবার সামনে তুলে ধরব যদি আমার রব আমার উপর সহায় হন, এবং চিন্তাশীল সত্য সন্ধানী মানুষ জানতে চায়।

যাইহোক যা বলছিলাম, পাকিস্তান আমলের দৈনিক আজাদ পত্রিকার সম্পাদক, তুখোর সাংবাদিক ও বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবীদ মাওলানা আকরাম খাঁ সাহেব তাহার ‘কোরান শরীফ’ নামক তফসির গ্রন্থে লিখিয়াছেনঃ”এইখানে সংক্ষেপে এইটুকু জানাইয়া রাখিতেছি যে সাধারন তফসীরকারকগনের এই সিদ্ধান্ত ও দাবী সম্পুর্ন অযৌক্তিক ও অসমীচীন। মানুষকে বুঝাইবার জন্য আল্লাহ পাক কোরান নাজেল করিয়াছেন ও তাহাতে ঈমান রাখার আদেশ দিয়াছেন। কোন অবোধ্য বাক্যের উপর ঈমান আনা বা সত্য বলিয়া বিশ্বাস করা মানুষের পক্ষে আদৌ সম্ভব হইতে পারেনা”।
মাওলানা আকরাম খাঁ সাহেবের অভিমত সুস্পষ্ট, যথার্থ ও যুক্তিপূর্ন। এই বিষয়ে আমরা জ্ঞানীদের নিকট হইতে যাহা জানতে পারিয়াছি তাহা হইলঃ এইগুলি লম্বা স্বরে টানিয়া টানিয়া সুর লয় দিয়া পড়িবার কোন বিষয় নয়, এইগুলোর প্রত্যেকটির এক একটি আপন বৈশিষ্টে বৈশিষ্টমুন্ডিত।

আলেফ-লাম-মীম শব্দ তিনটি, মদ আছে দুটি। আলিফ ও লামের উপর একটি বড় মদ এবং শুধু মীমের উপর আছে একটি মদ। এখন আমরা জানি যেই শব্দের উপর যত বড় মদ আছে সেই শব্দটি তত লম্বা করে পড়তে হবে। কিন্তু এখানে আমরা দেখতে পাই পড়ার সময় সবাই তিনটি শব্দ আলাদা আলাদা করে পড়ছে। কিন্তু এখানে দেয়া আছে আলিফ ও লামের একসাথে একটি বড় মদ এবং শুধু মীমের উপর একটি বড় মদ। তাহলে পড়া উচিত আলিফ আর লাম একসাথে মিলাইয়া পড়া। আর আলিফ ও লাম এক সাথে পড়লে যা দাঁড়ায় তা হল ‘আল’। ‘আল’ শব্দের বাংলা অর্থ বংশধর।মীম অক্ষরটি দ্বারা বুঝানো মোহাম্মাদ। তাহলে সম্পুর্ন দাঁড়ায় আলে মীম, বা মোহাম্মদের বংশধর। মোহাম্মাদের বংশধর বুঝাইতে বলা হয় মোহাম্মাদী গুনে গুনাম্বিত মানুষ। এখানে মীম মোহাম্মাদের প্রতিক। এখন কোরান পড়ে দেখুনত? পরবর্তি সকল কিছুই বিবেকে কিভাবে চপাঘাত করে। আমরা যা এতদিন শিখে এসেছি, জেনে এসেছি পালন করে এসেছি তা সবই বুল বের হতে থাকবে। মোহাম্মাদ (সঃ) এর ধর্ম কি বলেছে আর আমরা কি করে আসছি। সবই একভুলের খাতা। কোরানের প্রথমেই আমরা ভুল দিয়ে শুরু করি।আমাদের মিথ্যার ভিতর জন্ম, মিথ্যাতেই জীবন অতিবাহিত করে থাকি, আর মিথ্যাতেই মৃত্যু মুখে পতিত হই।
যা বুঝাতে চেয়েছি তা হল কোরানের সকল কিছুই এই মানুষের জন্য, মানুষ মানুষকে চিনবে, জানবে তথা নিজেকে চিনবে জানবে, নিজের আত্নার উন্নতি সাধন করবে তাই এই কোরানের নাজিল। এখানে এমন কোন কথা বানী থাকতে পারেনা, যা মানুষের বোধগম্য হতে না পারে। ইয়াজিদের (কারবালার ময়দানে মাওলা ইমাম হোসাইন (আঃ) এর সাথে যুদ্ধকারী ও কতল কারী সেইসময়কার শাসক) আমল থেকে কোরানের সংকলন, সম্প্রসারন অধিক অধিক তফসীর করা হয়েছেত, তাই আজ মানুষ সত্য থেকেই বহু দূরে। মুসলমান ঘরে জন্মালেই মুসলমান হয়ে গেল, ইহা সম্পুর্ন রুপে বানোয়াট। একজন পরিপূর্ন হিন্দু হতে সাধনা চাই, একজন খৃষ্টান হতে সাধনার দরকার। তেমনই একজন মুসলমান হতে সাধনার প্রয়োজন। সাধনা দ্বারা অর্জন করতে হবে।সাধনার দ্বারা হিন্দু, মুসলমান খৃষ্টান হতে হয়। সবই এক আল্লাহর প্রদত্ত ধর্ম। যাইহোক মানুষ আছে কোরান আছে, মানুষ নাই কোরান নামাজ রোজা কিছুই নাই। মানুষকে বুঝতেই কোরান। আর সেই মানুষ এর কাছে যদি এই কোরান বুঝতে যদি অক্ষম থাকে, তাহলে আর কোরান কেন?
ধরুন-কোন ব্যক্তি একটা লোককে একটা তরল পাত্রে কিছু তরল পদার্থ দিল, পানিও হতে পারে, বা তেলও হতে পারে। তাহলে আপনে কি করবেন নিয়ে দাঁড়িয়।।থাকবেন? ায় দিবেন নাকি খাবেন? আল্লাহ কি তাঁর বান্দাদের সাথে এরুপ কাজ কি করতে পারেন? … চলবে
৯টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×