somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিউ ইয়ার, জন্মদিন পালন ও ইসলাম

০২ রা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার একটি বাড়ি আছে। পূর্ব পুরুষের থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। বাড়িটা পুরানো, তবে গাঁথুনি বেশ মজবুত।
আমার প্রতিবেশীরা তাঁদের নিজেদের বাড়িঘর ভেঙেচুরে আধুনিক করে ফেলেছে। তাঁরা চাইছে না আমার বাড়িটা এলাকায় থাকুক। আর থাকলেও বাড়িটা যেন তাঁদের মতন ভেঙে চুড়ে আধুনিক করা হয়। এতে ফাউন্ডেশনও গুড়িয়ে দিতে হবে।
আমি আমার বাড়ি খুবই পছন্দ করি। এর প্রতিটা ইটকে আমি ভালবাসি। আমি বেঁচে থাকতে এই বাড়ি আমি কখনই ভাঙতে দিব না।
সমস্যা হচ্ছে, আমার ছেলে আমার প্রতিবেশীদের সাথেই বড় হয়েছে। ওর মেন্টালিটি কিছুটা আধুনিক। তবে বাড়ির প্রতিও তাঁর ভালবাসা আছে। সে চায় স্টোরেজ ঘরটাকে অফিস রুম বানাতে। সে চায় বিশাল গোসলখানাতে আধুনিক কল, বাথটাব, বেসিন ও কমোড লাগাতে। সে চায় বাড়িতে রানিং হট ওয়াটার চলুক। বাড়ির মেঝের মোজাইক তুলে মার্বেল ফিট করতে। গ্রানাইট পাথর দিয়ে কিচেন টপ্স মুড়ে দিতে। পুরানো ফার্নিচার পাল্টে আধুনিক ফার্নিচার দিয়ে ঘর সাজাতে।
সমস্যা হচ্ছে, আমি ওর প্রতিটা সিদ্ধান্তেরই বিরোধিতা করছি। আমি চাই আমার বাড়ি, এর ফার্নিচার, এর সবকিছু ঠিক তেমনটাই থাকুক, যেমনটা একশো বছর আগে আমার পূর্বপুরুষ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
প্রতিদিন পুত্রের সাথে এই নিয়ে মন কষাকষি হয়। একটা পর্যায়ে পুত্র গৃহত্যাগ করে নিজের পছন্দের বাড়ি কিনে সাজিয়ে নতুন সংসার শুরু করে।
গল্পটি প্রতীকী। এখন কিছু শব্দের স্থানে কিছু শব্দ প্রতিস্থাপন করুন।
আমার বাড়িটি হচ্ছে আমার নিজের ধর্ম ইসলাম। আমার প্রতিবেশীদের বাড়িগুলো তাঁদের নিজেদের নিজেদের ধর্ম। এখন কাহিনীটি আবার বলছি। মন দিয়ে শুনুন।
আমার ধর্মের ফাউন্ডেশন প্রচন্ড শক্তিশালী। সেটি হচ্ছে, আল্লাহ এক, তিনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নাই। মুহাম্মদ (সঃ) আমার রাসূল। মৃত্যুর পরে আমাকে আমার রবের সামনে দাঁড়াতে হবে। এই জীবনের প্রতিটা ভাল ও মন্দ কাজের হিসাব দিতে হবে। তাই সৎ কাজ করতে হবে, অসৎ কাজ এড়াতে হবে। ইত্যাদি।
এই ভিত্তি নিয়ে আমার গর্ব আছে। কালের স্রোতে এই ফাউন্ডেশনের কোনই হেরফের হবেনা। আমি জানি, যত আধুনিক "বাড়িই" আমাকে গড়তে হোক না কেন, ফাউন্ডেশন না নাড়িয়েই আমি সেটা গড়তে পারবো।
এখন সমস্যা হচ্ছে, আমার পুত্র চাইছে ফার্নিচার নাড়াচাড়া করতে। একটা স্টোরেজ রুমকে পাল্টে অফিস রুম বানাতে। আমাকে বুঝতে হবে, এর ফলে আমার বাড়ির ফাউন্ডেশনে কোনই সমস্যা হবে না। তাহলে কেন আমি শুধু শুধু তাঁর উপর চাপ প্রয়োগ করবো? কেন তাঁকে বাধ্য করবো জোর করে আমার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে? এইভাবে তাঁকে দম বন্ধ করে রাখতে রাখতে একটা সময়ে অবশ্যই সে বাড়ি ছেড়ে যাবে। এবং আমার মৃত্যুর পরে তাঁর পুত্র নিশ্চিত করবে এই বাড়ি ভেঙ্গে বহুতল বাড়ি নির্মাণ করবে।
এইটাই বর্তমানে ঘটছে। আমাদের দেশের লাখে লাখে, কোটি কোটি মানুষের এই হচ্ছে অবস্থা। আমাদের নিজেদের ধর্ম সম্পর্কে কোন আইডিয়া নাই। যাদের আইডিয়া আছে, তাঁদের আবার বাইরের বিশ্ব সম্পর্কে কোন আইডিয়া নাই। দুই পার্টির নিজেদের মধ্যে কোন যোগাযোগ নাই। একটা সিরিয়াল বাজে অবস্থা বিরাজমান।
আমার পোস্টে অনেকেই কমেন্ট করে নিজেদের বিরোধী অবস্থান এইভাবে প্রকাশ করেন যে যেহেতু আমি আমেরিকায় থাকি, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছি, কর্পোরেট জব করছি, "ইসলামিক লেবাস" (তাঁরা নিজেরাও জানেনা ইসলামিক লেবাস কি) পরি না, কাজেই আমার কথা বলার কোনই অধিকার নাই। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমার রেফারেন্সের কাউন্টার রেফারেন্স নিয়ে কাউকে হাজির হতে দেখি না। আমি আমার নবীকে ভালবাসি, আমার আল্লাহর নির্দেশ নিয়ে পড়াশোনা করি, এই হচ্ছে আমার অপরাধ; এবং তাঁরা সেটা মানতেই পারছে না। তাদের ভাষায়, আমার কোনই অধিকার নেই ইসলাম নিয়ে পড়ার, বলার।
এদিকে আমাদের দেশের ইসলামিক পন্ডিতদের কিছু কর্মকান্ড ইদানিং রীতিমতন হাসাহাসির পাত্র বানিয়ে ছাড়ছে আমাদের ধর্মকে।
একদিন একটা ভিডিও দেখলাম যেখানে তিন হুজুর মিলে আলোচনায় বসেছেন চাঁদে মানুষ গেছে, এই কথা তাঁরা বিশ্বাসই করেন না। সেটা না করতেই পারেন। সোভিয়েৎ রাশিয়া এই টাইপ কন্সপিরেসি প্রোপাগান্ডা চালিয়েছিল। আমেরিকার চাঁদে যাওয়ার ঘটনা নাকি একটি সাজানো নাটক। আজও বহু লোকে সেটা বিশ্বাস করেন। বেশির ভাগই আমেরিকা বিরোধী বলেই এইসব গালগপ্প হজম করেন।
তবে হুজুরদের যুক্তি তর্ক এই নিয়ে চলছিল না। চাঁদের নিজস্ব আলো নেই, সূর্যের আলো সেখানে প্রতিফলিত হয়, তাহলে রকেট কেন বাতি দিয়ে জায়গা খুঁজে ল্যান্ড করলো - এই টাইপ মহাজ্ঞানী (!?!) ও যৌক্তিক (!!!!) আর্গুমেন্ট তুলে নিজেদের জ্ঞানী প্রমান করে এই ঘটনাকে বানোয়াট বলে উড়িয়ে দিলেন।
আরেকজন আলেমতো এখন দুইদিন পরপরই মিডিয়ায় তোলপাড় তুলছেন। পৃথিবীর এন্টারকোটিক মহাদেশের মাটির নিচে নাকি আরেক পৃথিবী আছে, যার আলাদা সূর্য, আলাদা চাঁদ, আলাদা মহাদেশ আছে। সেখানে হিটলার পালিয়ে গিয়েছিল (যেটা আসলেই একটা কন্সপাইরেসি থিওরি ও ভুয়া), এবং এখনও ওখানেই আছে। ওখানে ইয়াজুজ মাজুজও আছে।
এর পরে তিনি বোমা ফাটালেন টাইটানিক থিওরি নিয়ে। টাইটানিক ডুবেছে অন্য কারনে। ওটা আসলে আইসবার্গের কারনে ফাটেনি। ওখানে বোমা ফিট করা ছিল। ইহুদিরা এই ষড়যন্ত্র করেছিল। মানে পুরাই টাইটানিক ২ সিনেমা বানানোর স্ক্রিপ্ট।
ইনিই সেই একই আলেম যিনি বলেছিলেন আইজ্যাক নিউটন, আইনস্টাইন, গ্যালিলিওরা সব চোর। মুসলমানদের জ্ঞান চুরি করে নিজেদের নামে চালিয়ে দিয়েছে।
এই যদি হয় আমাদের আলেমদের অবস্থা, তাহলে ম্যাট্রিক পাশ ছেলেও কেন তাঁদের কথা বিশ্বাস করবে একটু বলতে পারবেন?
কুরআনে বা হাদিসের কোথায় লেখা আছে যে আপনি হাদিস কুরআন পাঠ করলে আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা করতে পারবেন না? বদর যুদ্ধের যুদ্ধ বন্দিদের মধ্যে কিছু বন্দিকে এই শর্তে মুক্তি দেয়া হয় যে তাঁরা মুসলিম দশজন করে শিশুকে লিখতে ও পড়তে শেখাবে। সবচেয়ে বড় পয়েন্ট হচ্ছে, আমাদের নবী (সঃ) কুরআন হাদিসের আল্টিমেট রিসোর্স, যারা ঐ শিশুদের লেখাপড়া শেখাবে সবাই "কাফের।" তারপরেও আমার নবী (সঃ) বিদ্যার্জনে কাফির/মুসলিম পার্থক্য টানেন নি। জ্ঞানের কী কোন ধর্ম আছে?
খন্দকের যুদ্ধের সময়ে সালমান আল ফার্সি যখন বললেন খন্দক খনন করতে, কারন পার্সিরা এভাবেই খন্দক খনন করে ডিফেন্সিভ যুদ্ধ লড়ে, আমাদের নবী (সঃ) বলেন নাই ওটা কাফিরদের টেকনোলজি। আমরা সেটা ব্যবহার করবো না।
তাঁর জীবনে এমন আরও ঘটনা আছে। যেটা সাহাবাগণ জানতেন। পরবর্তীতে মুসলিম ইতিহাসের অন্যতম সেরা খলিফা হারুন অর রশীদ নিজেদের রাজ্যের সমস্ত স্কলারদের বলেন বিশ্বের সমস্ত কোণ থেকে খুঁজে খুঁজে এনে জ্ঞান বিজ্ঞানের বইগুলো আরবিতে তর্জমা করা হোক। মুসলিমরা এই জ্ঞান লাভ করেছিল বলেই ইসলামিক স্বর্ণযুগ এত উজ্জ্বল ছিল। আজকের আলেমরা এন্টারকটিক মহাদেশ, ইহুদি ষড়যন্ত্রে টাইটানিকের ভরাডুবি আর চাঁদে মানুষ যায় নাই নিয়ে আছেন।
এই দুই তিন দিন আগেও এক মহিলা আমাকে খুব ধমক দিলেন। আমি কোন সাহসে "মেসওয়াকের" সাথে "টুথব্রাশ" কম্পেয়ার করেছি! আমিতো কাফির হয়ে গেলাম! শুধু ঐ মহিলাই না, এর আগেও আরেক পুরুষ অমন কথা বলেছিল। এবং আমি জানি, দেশে এমন লাখে লাখে লোক এই বিশ্বাস করে। মহাজ্ঞানীরা কী জানেন ইসলামে মেসওয়াকের ফাংশন কী? "পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা" এর বেশি কিছু না। যেমনটা পেশাব পায়খানা শেষে ঢিলা কুলুক আর পানির ব্যবস্থা, যেমনটা গোসল ও ওযুর ব্যবস্থা, এটিও তেমনই একটি অংশ। এর সাথে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কিছু নেই। আপনি জীবনে একবারের জন্যও মেসওয়াক না করলেও কাফির হয়ে যাবেন না।
আমাদের নবীর (সঃ) যুগে কোন টুথব্রাশ ছিল? না। তখনকার যুগে দাঁত পরিষ্কার ও নিশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করার সবচেয়ে আধুনিক টেকনোলজি কী ছিল? মেসওয়াক। লক্ষ্য করুন, তিনি কিন্তু আঙ্গুল দিয়ে কয়লা/ছাই ঘষতেও বলতে পারতেন। সেটা কিন্তু বলেননি। কারন ওটা তাঁর যুগেও ব্যাকডেটেড। এখন এই যুগে যদি আমাদের নবীর জন্ম হতো, তাহলে কী তিনি টুথব্রাশ ও পেস্ট বাদ দিয়ে আমাদের অতীত যুগের মেসওয়াক টেকনোলজিতে ফিরে যেতে বলতেন? কী মনে হয়?
একইভাবে তাঁর পোশাকের ব্যাপারও। তিনি তখনকার আরবদের চাইতে ভিন্ন পোশাক পরতেন? না। বদর যুদ্ধের ময়দানে এখন আমরা উপস্থিত হলে আমাদের বোঝার কোনই উপায় থাকবে না যে কে মুসলিম, আর কে কুরাইশ। কিন্তু, আমাদের যুগে কেউ কোট প্যান্ট পরে ইসলাম নিয়ে কথাবার্তা শুরু করলেই "ইহুদি ষড়যন্ত্র" উঠে আসে। কোন ঈমাম পাওয়া যাবে যিনি কোন প্যান্ট পরেন?
আলেম উলামাদের পাশাপাশি আমাদের সাধারণ মুসলিমদেরও বুঝতে হবে, এইসব মেসওয়াক, পাগড়ি, পাজামা পাঞ্জাবি ইত্যাদি সবই বাড়ির ফার্নিচার। আমার ফাউন্ডেশনের ক্ষতি না করলে একটু নাড়াচাড়া করুক না, সমস্যা কী? ইসলামতো বাঁধা দিচ্ছে না। আমরা কেন দেব?
নবীর যুগে পানি ফুটিয়ে জীবাণুমুক্ত করে কেউ খেত না। আমাদের দেশেও পঞ্চাশ বছর আগে এই কাজটা কেউ করতো না। পরবর্তীতে আমরা জানতে পারি এমন করে খেলে সুস্থ থাকা যায়। আমরা সেটাই করি সবাই। এতে কী আমরা নবীর বিরুদ্ধে চলে গেলাম?
এইবার সহজ থেকে একটু বিতর্কিত বিষয়ে যাওয়া যাক। জন্মদিন, এনিভার্সারি ইত্যাদি পালন সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?
হার্ডকোর একদল লোক মদিনার দুই উৎসবের হাদিস এনে হাজির করেন। যেখানে নবী(সঃ) বলেছেন ওগুলোর চেয়ে উত্তম দুই উৎসব আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন, যা হচ্ছে দুই ঈদ।
শব্দ চয়ন লক্ষ্য করেন কেউ? তিনি বলেছেন "উত্তম", তিনি বলেন নি "আজ থেকে সব বন্ধ। কেবল ঈদ পালন চলবে।" এ থেকেইতো হাদিসের অর্থ বুঝা যাচ্ছে।
আরেকটা বিষয় হচ্ছে, যেই দুই উৎসবের কথা বলা হয়েছে, দুইটাই ছিল ধর্মীয় উৎসব। দেব দেবীর পূজা জড়িত ছিল সেসব আচার অনুষ্ঠানে। একটা চার পাঁচ বছর বয়সী বাচ্চা, যার জীবনের চরম আনন্দ হচ্ছে একটি দিন সে বন্ধু বান্ধবের মাঝে দাঁড়িয়ে কেক কাটবে, যার সাথে দূরদূরান্ত পর্যন্ত দেবদেবীর সম্পর্ক নেই - সেই উৎসবকে কেন "হারাম" বলছেন? আমি আমার বৌকে নিয়ে এনিভার্সারি উপলক্ষ্যে ডিনারে গেলে, একটা ফুল কিনে দিলে, একটা উপহার দিলে আল্লাহ রাগ করবেন? কোথায় পেয়েছেন অমন হাদিস? উল্টো আমাদের ধর্ম উৎসাহ দিচ্ছে নিজের সঙ্গীকে খুশি করতে ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যেতে। সেটাও এক পর্যায়ের ইবাদত।
নিউ ইয়ার ফেস্টিভ্যাল, যেখানে পুরো শহর আতশবাজি ফুটাচ্ছে, আপনি আপনার বাচ্চাদের ঘরে বন্দি করে রাখছেন।
"ওসব খ্রিষ্টানদের উৎসব!"
তাই? এখানে যীশুর পূজা হচ্ছে কোথায় একটু বলবেন কি?
তখনই একদল তেড়ে এসে বলবেন, "ও তাহলে আপনি বলবেন মদ হালাল?"
আরে জ্ঞান সাগর! এখানে মদ আসছে কোত্থেকে? রাতের অন্ধকার আকাশে রং বেরঙের আলো জ্বলছে। দৃশ্যটা সুন্দর বলেই আমরা মুগ্ধ হচ্ছি। এতে অন্য দেবদেবীর উপাসনা, মদ, শরাব ইত্যাদি ঢুকছে কোত্থেকে? মদ খেয়ে যদি কেউ ঈদ সেলিব্রেট করে, তাহলেতো সেই ব্যাটার ঈদ পালনও হারাম। এমনতো না যে ঈদ উপলক্ষ্যে মদ হালাল হচ্ছে। না জেনে শুনে ফালতু কথা বলে দিলেই হবে?
নবীর জীবনের রেফারেন্স ছাড়া কথা বলা উচিৎ না, তাই বলি।
ইসলামের প্রথম হিজরতে আবি সিনিয়ায় যাওয়া গুটিকয়েক মুসলিমদের একজন ছিলেন উম্মে সালামা (রাঃ)। তিনি পরবর্তীতে বিধবা হন, এবং আমাদের রাসূলের (সঃ) সাথে তাঁর বিয়ে হয়। তিনি মক্কায় বড় হয়েছিলেন। মক্কায় দর্শনীয় কিছুই নেই। আবি সিনিয়ায় গিয়ে দামি দামি বিশাল বিশাল গির্জা, সেখানে রঙিন কাঁচের ডিজাইন ইত্যাদি দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছিলেন। সেই মুগ্ধতার কথাই আমাদের নবীজিকে (সঃ) তিনি শোনাচ্ছিলেন। আমাদের নবী (সঃ) কী ধমক দিয়ে বলেছিলেন যে কেন তিনি গির্জায় গেলেন। ইহুদি নাসারাদের ধর্মীয় উপাসনালয়ের সাজসজ্জা দেখে মুগ্ধ হওয়ার জন্য তাঁর লজ্জিত হওয়া উচিৎ। ইত্যাদি ইত্যাদি।
না। কারন তিনি জানেন সৌন্দর্য্যের প্রতি মানুষের মুগ্ধতা জন্মগত। আল্লাহ নিজে সুন্দর, তাঁর সৃষ্টি সুন্দর। এবং তাঁর সেরা সৃষ্টি মানুষতো সৌন্দর্য্যে আকৃষ্ট হবেই। এই আকর্ষণ ছিল বলেই মুসলিমরা তাঁদের রাজধানী শহর ইস্তাম্বুলকে সেইভাবে সাজিয়েছিল। মক্কা মদিনা বা আরবের মসজিদগুলোর সৌন্দর্য্যে আমাদের চোখ ঝলসে উঠে। রাতের আকাশে আলোক সজ্জাও তেমনই এক সৌন্দর্য্য। এক ফার্নিচার। যা এদিক ওদিক করলে কোন অবস্থাতেই আমার বাড়ির ফাউন্ডেশন নষ্ট হবেনা। উল্টো নিশ্চিত করবে, আমার ছেলে আমার বাড়িতেই থাকবে। পূর্বপুরুষের ভিটার সাথে নাড়ির সম্পর্ক স্থাপিত হবে। ভবিষ্যতে যখন এই বাড়ি ভাঙ্গার ষড়যন্ত্রকারীরা আবারও আক্রমন করবে, এই ছেলেই তখন জান প্রাণ দিয়ে ডিফেন্ড করবে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৪৬
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×