somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: 'এই সব পুরুষেরা' - রহস্য পত্রিকা, সেপ্টেম্বর, ২০১২

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিরক্তিতে ছেয়ে যায় তিশার মনটা। পাশের লোকটা ওর গায়ের উপর চাপিয়ে দিয়েছে শরীরের ভার। সারাদিনের কর্মব্যস্ততার ঘাম লোকটার শরীর থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সেই গন্ধ তিশার নাক হয়ে ভেতরে ঢুকে মগজটা শুদ্ধ নাড়িয়ে দিচ্ছে, মাথা ঝিম ঝিম করছে তার।

কিছুক্ষণ নাক-মুখ কুঁচকে তিশা বিরক্তির প্রকাশ ধরে রাখলো চেহারায়। কিন্তু এই আলো-আঁধারিতে ওর চেহারার বিরক্তি লোকটার চোখে ধরা পড়লো না বোধহয়। অথবা পড়লেও লোকটা তা নিয়ে যে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন, এমন কোন ভাব লোকটার আচরণে প্রকাশ পেল না। আগের মতই নিজের শরীর চেপে রেখেছে সে তিশার শরীরের উপর। লোকটার শরীরের ডান পাশটা একদম আঠার মতো লেগে আছে তিশার শরীরের বাম পাশে। প্রতিটা ঝাঁকুনির সাথে সাথে অনাবশ্যক এবং অতিরিক্ত সামনে-পিছনে দুলছে লোকটার শরীর। না থাকতে পেরে একসময় মৃদু স্বরে বলেই ফেললো তিশা - ‘একটু সরে বসুন না’।

লোকটাও যেন তার কথার অপেক্ষাতেই ছিল। ঘাড় ঘুরিয়ে তিশার দিকে সরাসরি তাকিয়ে একটুখানি মুচকি হাসলো সে। তারিয়ে তারিয়ে যেন উপভোগ করছে তিশার অসহায়ত্ব - ‘এইটা পাবলিক বাস ম্যাডাম। এইখানে সইরা বসবো কই? এইরকম একটু-আকটু তো হবেই। অসুবিধা হইলে নিজে গাড়ি কিনা চড়লেই তো পারেন।’ - নিচু স্বরেই কটাক্ষ করে লোকটা। পাশের লোকটাও বোধহয় শুনতে পায় না।

ওর দিকে মুখ করে লোকটা কথা বলার সময়টাতেই বাসটা আরেকটা ঝাঁকুনি খায়। আর সেই ঝাঁকুনির সাথে আচমকাই লোকটার মুখটাও সরে আসে তিশার দিকে। লোকটার কপাল আর নাক ছুঁয়ে যায় তিশার চুল আর কান। ঘৃণায় গা রি রি করে ওঠে ওর।

বাসেই যাতায়াত করতে হয় তিশার। রামপুরার বনশ্রী এলাকাতে বাসা ওর। অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা বাবার পেনশন-গ্র্যাচুইটির টাকায় কেনা ফ্ল্যাট। গাড়ি কেনার মতো সামর্থ্য আর হয়ে ওঠেনি। তিশার অফিসটা ধানমন্ডিতে। বেসরকারী একটা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সেলস এক্সিকিউটিভ হিসেবে কাজ করে সে। বেতন ভালই। তবে এতটা নয় যে দুবেলাই সিএনজি ট্যাক্সিতে যাওয়া-আসার বিলাসিতা করতে পারে। সংসার খরচের একটা অংশ তাকেও বহন করতে হয়। বাবা-মা অবশ্য এ ব্যাপারে চাপ দেন না, তবে অতটুকু বোঝার মতো বয়স তো তার হয়েছে।

সকালে অফিসে যাবার সময়টাতে তেমন সমস্যা হয় না। বনশ্রী থেকে ধানমন্ডিগামী বাসটির বনশ্রীর প্রথম কাউন্টার থেকেই বাসে ওঠে সে। সংরক্ষিত মহিলা আসনে সহজেই সীট পেয়ে যায়। এবং অধিকাংশ সময় সীট পায় জানালার ধারেই। অফিস টাইমে যাত্রা শুরুর সময়ই বাসের প্রায় সব সীট পূর্ণ হয়ে যায় যাত্রীতে। পরের কাউন্টারগুলো থেকে যেসব যাত্রী ওঠেন, তাদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয় দুই সারি সীটের মাঝের ফাঁকা জায়গাটুকুতে। বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল বা রামপুরা টিভি সেন্টার সংলগ্ন কাউন্টারের সামনে অপেক্ষমান যাত্রীদের বাসে উঠতে হয় অনেকটা যুদ্ধ করেই। বাসে উঠে কোনমতে দাঁড়িয়ে থাকে মানুষগুলো, বাসের হ্যান্ডেল বা সামনের সীটে হাত রেখে ভারসাম্য বজায় রাখে। কখনো কখনো তা-ও লাগে না - সামনে-পেছনের যাত্রীরা এতটাই গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয় যে, দুজন মানুষের মাঝ দিয়ে একটা সুই পর্যন্ত গলানোর জায়গা থাকে না, ছোটখাট ঝাঁকুনিতে ভারসাম্য হারানোর সুযোগও থাকে না।

পরের কাউন্টারগুলো থেকে যে মহিলারা ওঠেন, তাদের অবস্থা দেখে মনে মনে শিউরে ওঠে তিশা। অনেকেই সীট পান না। দাঁড়িয়ে যেতে হয়। পুরুষগুলো দাঁড়িয়ে থাকে তাদের সামনে-পিছনে-পাশে; শরীর-ঘেঁষে, শরীর-চেপে - ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে। ঐ অবস্থায় মহিলাদের বিরক্ত, অসহায় মুখ দেখে নিজের ভাগ্যকে ধন্যবাদ জানায় তিশা। ভাগ্যিস, একদম প্রথম কাউন্টারটা থেকেই উঠতে পারে সে। নেমেও যায় শেষ স্টপেজের দুই স্টপেজ আগে। ফলে, নামার সময়ও অতটা ভীড় থাকে না। তবু কোন কোন দিন ভীড়ের সময়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষদের মাঝ দিয়েই নামতে হয়। একটু আধটু শরীরের ছোঁয়া লেগেই যায়। অনেকেই সুযোগ নেয়- ইচ্ছে করেই খানিকটা ছুঁয়ে দেয় শরীরের এখানে ওখানে। আর বাসের হেলপার-কন্ডাকটররাও যেন তক্কে তক্কে থাকে। সাহায্য করার নাম করে হাতটা ধরে ফেলে, কিংবা পিঠে, কোমরে হাত বুলিয়ে দেয়। কিছু বলতে পারে না তিশা, বড় গলায় প্রতিবাদ করার মতো সাহস হয়ে ওঠে না তার - বোবা কান্নায় ভেতরটা প্লাবিত হয়।

যেমনটা হচ্ছে এখন। অযথাই হাত-পা নাড়াচ্ছে পাশের লোকটা। একবার আলতো করে হাত বুলিয়ে দিল তিশার বাম উরুতে। জানালার দিকে মুখ ঘুরিয়ে উদগত অশ্র“কে কোনমতে সংবরণ করে তিশা।

অফিস ছুটির পরও সাধারণত তেমন সমস্যা হয় না ওর। আগে-ভাগে বেরুতে পারলে বাসে কাঙ্খিত স্থানে সীট পেয়েই যায়। অথবা রিক্সা করে ধানমন্ডির প্রথম স্টপেজে গিয়ে বাসে ওঠে। কখনো দেরী হলে সিএনজিই নিয়ে নেয়। আজ অফিস ছুটির পরও ঘন্টা দেড়েক থাকতে হয়েছে তাকে। জরুরী কাজ ছিল। অফিস থেকে বের হয়ে কোন সিএনজি ট্যাক্সি বা ক্যাব খালি পায়নি। রিক্সা করে প্রথম কাউন্টারে এসেও দেখে বিরাট লাইন। টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়ায় তিশা। কিন্তু বাসে উঠতে উঠতে দেখা যায় সংরক্ষিত মহিলা আসন ততক্ষণে পূর্ণ। বাধ্য হয়েই পিছনের দিকে চলে যেতে হয় তাকে। শেষ দিক থেকে তিন সারি সামনের একটা সীটে বসার জায়গা পায়। পাশাপাশি তিন জন বসতে পারে - এরকম সীট। জানালার ধারে বসে তিশা। পাশের দুটো সীটে বসে দুজন পুরুষ।

সায়েন্স ল্যাবরেটরীর মোড়ে এসে পাশে বসা লোকটি নেমে যায়। ঐ লোকটা তেমন কোন সমস্যা সৃষ্টি করেনি। চলতি বাসের ঝাঁকুনিতে গায়ে গা তো লাগবেই- এটুকুই। চাপা অস্বস্তি থাকলেও তেমন বিরক্তি বোধ করেনি তিশা। কিন্তু প্রথমজন সায়েন্স ল্যাবে নেমে যাওয়ার পর দাঁড়িয়ে থাকা একটি লোক এসে পাশে বসার পর থেকেই শুরু হয় যন্ত্রণা।

অযথাই নড়াচড়া করছে লোকটা। একবার হাত সামনে নেয়ার ছলে তার উরু, হাঁটু ছুঁয়ে দিচ্ছে। আরেকবার হাত পিছনে নিয়ে তার পিঠে, নিতম্বে চট করে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। যানজটে দীর্ঘক্ষণ আটকে আছে বাস। অনেকক্ষণ পর কয়েক গজ হয়তো এগুচ্ছে, তা-ও ঝাঁকি দিয়ে- আবার ঝাঁকি দিয়ে হঠাৎই থেমে যাচ্ছে। এই ঝাঁকির সুযোগেই লোকটা তার উদ্দেশ্য হাসিল করে নিচ্ছে - যেন বা ঝাঁকিতে অনিচ্ছাকৃতভাবেই ঘটে যাচ্ছে ব্যাপারটা। মাঝে মাঝে কড়া চোখে লোকটার দিকে তাকানোর চেষ্টা করেছে তিশা। কিন্তু নিজের চেহারা না দেখতে পেলেও তিশা বুঝতে পারে, চোখে কড়া ভাবের বদলে ফুটে উঠছে অসহায়ত্ব।

সেই অসহায়ত্বের সুযোগে আরও একটু এগোয় লোকটা। তার ডান কনুই উপরদিকে উঠে আসতে থাকে। বাম হাতটা শক্ত করে রাখে তিশা। ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করে লোকটার কনুই। কিন্তু আচমকা এক ঝাঁকিতে লোকটার কনুই পিছলে আসে তিশার বাম হাতের উপর দিয়ে। কনুই দিয়ে তিশার বাম স্তনে হালকা চাপ দিয়েই দ্রুত হাতটা আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে যায় লোকটা।

এবার অশ্র“ গাল বেয়ে ঝরে পড়ে তিশার। জানালার দিকে মুখ ঘুরিয়ে রাখে সে। কেউ কি দেখছে লোকটার বেলেল্লাপনা? কেউ কি প্রতিবাদ করবে লোকটার অসভ্য আচরণের? কে করবে? তিশা তো নিজেই সাহস করে প্রতিবাদ করছে না, নিজ মুখে জোরালোভাবে করতে পারেও নি কোনদিন। অসম্ভব ভয় লাগে তার এই পুরুষগুলোকে।

কিন্তু কিছু একটা তো করা দরকার। আর তো সহ্য করতে পারছে না সে!
কেউ, বিশেষ করে পাশের লোকটা যেন দেখে না ফেলে এমন ভাবে চোখের অশ্র“ মোছার চেষ্টা করে তিশা। রামপুরা টিভি সেন্টার ছাড়িয়ে ব্রীজের কাছাকাছি চলে এসেছে ততক্ষণে বাসটা। এখন ডানদিকে ঘুরে বনশ্রী এলাকায় ঢুকে যাবে। যারা ব্রীজ-সংলগ্ন কাউন্টারে নেমে যাবে, তারা সীট থেকে ওঠার উদ্যোগ নেয়, দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা এগোতে শুরু করে সামনের দিকে। তিশার পাশের লোকটার মধ্যে ওঠার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। অর্থাৎ রামপুরা ব্রীজের কাউন্টারেও নামবে না লোকটা। তিশাকেও তো যেতে হবে বনশ্রীর শেষ মাথা পর্যন্ত। হালকা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেলে তিশা। এখানেই নেমে যাবে সে। বাকী পথটুকু যাবে রিক্সায় চড়ে। কিন্তু নামার আগে..........

নিজের ডানপাশে নিয়ে কিছুটা আড়াল করে হাতের ভ্যানিটি ব্যাগটা খোলে তিশা। ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে ছোট বাক্সটা বের করে। বাক্সটা সব সময় তার ব্যাগে রাখে সে।

এই সময় বাসের ভেতর টিম টিম করে জ্বলতে থাকা বাতিটা হঠাৎ নিভে যায়। অন্ধকার হয়ে যায় বাসের ভেতরটা। বাইরের পথচলতি যান বা দূরবর্তী ভবনের আলো সহসা বাসের ভেতর ঢুকতে যেন ইতস্তত করে। অন্ধকার একটু যেন বেশীই জমাট বাঁধে তিশার সীটের চারিদিকে। তাতে চক্ষুলজ্জার বাধ পুরোটাই ভেঙে যায় লোকটির। দ্রুত বাম হাতটা উঠিয়ে কাপড়ের উপর দিয়ে তিশার বাম স্তন মুঠো করে ধরে। জোরে একটা চাপ দিয়েই হাত নিয়ে যায় আগের অবস্থানে। যাত্রীরা কেউ কিছু টের পায় না। কেউ ব্যস্ত নেমে যাবার উদ্যোগে। কেউ কেউ ব্যস্ত খুঁজে পেতে খালি সীটে বসার আয়োজনে। বাকীদেরও মনোযোগ সামনে অথবা বাসের জানালা হয়ে বাইরে। কুঁকড়ে যায় তিশা। গোঙানির মতো অস্ফূট একটা আওয়াজ বের হয় মুখ দিয়ে।

দাঁতে দাঁত চেপে বাম হাতে দ্রুত ছোট বাক্সটা খোলে তিশা। কঠোর হয়ে উঠছে ওর চোয়াল। বাক্সে থাকা ছোট, টুকরো কাপড়টা ডান হাতের দু আঙুলে ধরে। তারপর সেই দু আঙুলে সাবধানে আলতো করে ধরে বের করে আনে একটা আলপিন। ইঞ্চি দুয়েক লম্বা, সরু, তীক্ষ্ম অগ্রভাগ আলপিনের।
লোকটা দেখেনি সেটা। সে তখন ব্যস্ত তার ডান কনুইটা তিশার বাম বাহুর উপর দিয়ে নিয়ে স্তনে ঘষা দেয়ার চেষ্টায়। মুখ ফিরিয়ে রেখেছে অন্যদিকে।
এরই মধ্যে বাসটা পুরোপুরি থেমে দাঁড়িয়েছে রামপুরা ব্রীজের কাউন্টারে। নেমে যাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে গেছে যাত্রীদের মধ্যে। তিশা আলপিনের তীক্ষ্ম সূচালো অগ্রভাগ ডান হাতের জোরে ঢুকিয়ে দেয় লোকটার ডান কনুইয়ের কাপড়-খোলা অংশে।

‘আউ’ করে চাপা চিৎকার করে ওঠে লোকটা। হাত সরিয়ে নেয়। ভ্রƒ কুঁচকে তাকায় তিশার দিকে। কিন্তু কিছু বলে না। তিশা শান্ত, স্বাভাবিক চোখে লোকটার দিকে চেয়ে থাকে কিছুক্ষণ। পিনটা কনুই থেকে বের করে নিচে ফেলে দেয় লোকটা। বাম হাত দিয়ে চেপে ধরে রাখে ডান কনুইয়ের ছিদ্র হওয়া জায়গাটা। বসে থাকারা তো নয়-ই, দাঁড়িয়ে থাকা বাসযাত্রীরাও টের পায় না ব্যাপারটা।

তিশা উঠে দাঁড়ায়। তাকে উঠে দাঁড়াতে দেখেও পাশের দুই যাত্রী সীট থেকে উঠে দাঁড়ায় না। সীটে জানালার উল্টো দিকের অংশে বসা ব্যক্তি বসে থেকেই ঘুরে দু পা বাইরে বের করে জায়গা করে দেয়। আর তিশার পাশের লোকটা দু পা খানিকটা ভেতরদিকে গুটিয়ে নেয় মাত্র, তার স্পর্শ বাঁচিয়ে তিশার নেমে যাওয়ার কোন উপায় নেই।

দীর্ঘশ্বাস ফেলে ওটুকু জায়গা দিয়েই বের হয় তিশা, লোকটার হাঁটু ঘেঁষে। লোকটাকে অতিক্রম করার সময় পেছন থেকে নিতম্বে হালকা একটা চাপ অনুভব করে। মাথা নিচু করে আরো অনেক পুরুষের ধাক্কা খেতে খেতে বাস থেকে নেমে আসে।

রিক্সায় উঠে চোখের জল আর বাঁধ মানে না তিশার। নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে ভেতর থেকে উঠে আসা কষ্টের প্রতিধ্বনি রোধ করে সে। অমন একটা কাজ সে করতে চায়নি। কিন্তু কি-ই বা করার ছিল তার?


টিস্যু দিয়ে দু’চোখ ভাল করে মুছে বাসায় ঢোকে সে। তবু, মা কেমন করে যেন টের পান- কিছু ঘটেছে। জিজ্ঞেস করেন- ‘কি রে? মুখ অমন শুকনো কেন? কি হয়েছে?’

‘কিছু না মা, অফিসে খুব চাপ গেছে আজ। টায়ার্ড লাগছে তাই। নাস্তা থাকলে রুমে পাঠিয়ে দাও।’ বলে নিজের রুমে ঢুকে পড়ে তিশা।

বাথরুমে ঢুকে দীর্ঘ সময় নিয়ে গোসল করে তিশা, দীর্ঘক্ষণ ধরে কাঁদে। শাওয়ারের জলের সাথে তার চোখের জল মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।

বাথরুম থেকে বের হয়ে দেখে তার রুমে নাস্তা পাঠিয়ে দিয়েছেন মা। সাধারণত সন্ধ্যের নাস্তাটা তিশা অফিস থেকে ফিরে বাবা-মার সাথেই করে। বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা। মা একটা সময় স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। বনশ্রীতে নিজস্ব ফ্ল্যাটে উঠে আসার পর শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়েছেন। বুয়েট-পড়–য়া ছোট ভাইটি বাসায় থাকলে সে-ও বসে নাস্তার টেবিলে। আজ আর তাদের মুখোমুখি হতে ইচ্ছে করছে না তিশার। জানে, বাবা হয়তো অপেক্ষা করে থাকবেন তার জন্য, নাস্তা সেরে বাবার রুমে গিয়ে আড্ডা দেয়া প্রাত্যহিক রুটিন। বাবা অফিসের কাজকর্মের ব্যাপারে খোঁজখবর নেন, সব কিছু বাবাকে না বললে কেমন অস্থির লাগে তিশারও।

সব কিছু মানে অফিসের সব কিছু, আরো আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু, কলেজের কিছু , স্কুলের সব কিছু। কিন্তু জীবনের সবকিছু না। যেমন, আজকের ঘটনাটা। এমন ঘটনার মুখোমুখি সে হয়ে আসছে তো ছোটবেলা থেকেই। বাবাকে কি আর সেসব কথা বলা যায়?

একটা সময় কিছু কথা মাকে বলতো । সে-ই ছোটবেলায়। খুব ছোটবেলায় মা-কে বললেও তিনি তেমন কিছু বুঝতেন বা গ্রাহ্য করতেন না বলেই মনে হতো তিশার। খুব ছোটবেলায়, তিশার বয়স যখন ছয় কি সাত, তখন তারা থাকতো পুরনো ঢাকার একটা দোতলা বাড়িতে। বাড়িওয়ালারা থাকতো নিচতলায়। বাড়িওয়ালীর এক ভাই থাকতো ও বাড়িতেই। বাড়িওয়ালার ছেলে-মেয়েরা ছিল প্রায় তিশারই সমবয়সী। ওদের সাথেই প্রতিদিন খেলা করতো সে। ছাদে অথবা নিচের বাগানে। বাড়িওয়ালীর ঐ ভাইও থাকতো অনেক সময়। তিশাকে আদর করার ছলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাতড়ে বেড়াতো সে। তখনো শরীর বুঝে ওঠার বয়স হয়নি তিশার। কিন্তু খুব অস্বস্তি লাগতো তার, খুব জঘন্য লাগতো। মাকে সে বলতো - ‘মা সবুর মামাকে আমার একদম ভাল লাগে না।’ মা হেসে বলতেন- ’কেন রে? তোর কাকা তো তোকে কত আদর করে, চকলেট-আইসক্রীম কিনে দেয়। নিজের ভাগ্নে-ভাগ্নির মতোই তো তোকেও আদর করে।’

মাকে আর পুরোটা ভেঙে বলতে পারে না তিশা। একদিন তিশাকে নিচতলায় রেখে বাবা-মা কোন এক দাওয়াতে যান। নিচতলায় ছিল বাড়িওয়ালার ছেলে-মেয়ে দুটি আর ওদের সবুর মামা। লুকোচুরি খেলার ছলে একসময় যখন বাড়িওয়ালার ছেলে-মেয়ে চোখের আড়ালে , সবুর মামা জোর করে তিশার ঠোঁটে চুমু দেন, জিহ্বা দিয়ে চেটে দেন তিশার গাল। ঠাস করে সবুর মামার গালে একটা চড় বসিয়ে দেয় তিশা। সেদিন রাতে লুকিয়ে অনেক কেঁদেছিল তিশা। এর পর যতদিন সবুর মামা ঐ বাসায় ছিল, সে খেলতে যেত না আর ওদের সাথে।

দাদাবাড়ি যেতেও একটা সময় ভয় লাগতো তিশার। ভয় লাগতো দাদাবাড়ির পাশের বাসার এক লোককে। ঐ লোক তার দাদার জমিতে বর্গা চাষ করতো। সে গ্রামে গেলে লোকটা তাকে জমি দেখাতে নিয়ে যেত, পুকুর দেখাতে নিয়ে যেত। তাকে কোলে নিয়ে জমির ধারে বসে দেখাতো কোনটা কোন গাছ, কোনটা কোন শস্য। ঐ লোকটার কোলে বসে থাকতে খুব খারাপ লাগতো তার। লোকটা তাকে দুই উরুর ঠিক মাঝে চেপে ধরে বসে থাকতো। নিজের পিঠে যেন জীবন্ত কোন কিছুর অস্তিত্ব¡ টের পেত তিশা। পেছনে কোন কিছু যেন ঘুরে বেড়াতো, খোঁচা দিত তাকে। কখনো নরম, কখনো শক্ত মনে হতো জিনিসটাকে। তখন ভয় জাগাতো ঐ অনুভূতিটা। চুপি চুপি সমবয়সী ফুফাতো বোনকে বলেছিল কথাটা। তারও নাকি একই অভিজ্ঞতা। তাকেও কোলের ঐ জায়গাটায় নিয়ে বসে থাকতো লোকটা। কিন্তু সাহস করে বড়দের কাউকে বলা হয়নি কথাটা। প্রতিবার দাদাবাড়ি যাওয়ার পথে অজানা এক ভয় সঙ্গী হতো তার।

তবে, ক্লাস ফাইভের পর অনেক বছর দাদাবাড়িতে যায়নি আর তিশা। সেটার কারণ অবশ্য বাবা-মা দুজনেই জানেন। ক্লাস ফাইভের বার্ষিক পরীক্ষা শেষে দাদাবাড়ি গিয়েছিল বাবা-মা আর ছোট ভাইটিসহ। ঐ গ্রামেই এক বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছিল। দাওয়াত ছিল ওদেরও। সেখানে দাওয়াত খেতে গিয়ে ঘটে ঘটনাটা। খাবারের প্যান্ডেল থেকে সে ঐ বাড়ির ভেতরে যাচ্ছিল তার চাচাতো বোনকে ডাকতে। বাড়ির এক কোণে দাঁড়িয়ে ছিল পাঁচ-ছয়টা ছেলে, পনের ষোল বছর বয়সী। ওদের সামনে দিয়েই যেতে হবে বাড়ির ভেতর। তিশা যখন ওদের ঠিক সামনে, তখুনি এক ছেলে জটলা থেকে বের হয়ে এসে ওর বুকে দুহাত দিয়ে খামচি মারে। জটলার সবাই হেসে ওঠে উচ্চস্বরে। একজন উঁচু গলায় জিজ্ঞেস করে ওঠে - ‘আছে না কি রে?’
যে ছেলেটা খামচি দিয়েছিল, সে খ্যাক খ্যাক করে হাসতে হাসতে বলে - ‘তেমন নাই।’

অপমানে, লজ্জায় কেঁদে ফেলে তিশা। পুরোপুরি না হলেও তখন শরীর কিছুটা বোঝার মতো বয়স হয়েছে তার। তখুনি গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ঘটনাটা বলে দেয় ছোট ফুফুকে। ঐ ছেলেগুলোর বাবা-মার কাছে নালিশ দেয়া হয়। মা-ফুফু-কাজিনরা সান্ত্বনা দেন।

সেবার ঢাকায় ফিরে অনেক কিছু বলেন মা। অনেক কিছু। পুরুষদের লালসার কথা, নির্যাতনের কথা, মেয়েদের অসহায়ত্বের কথা, সহনশীল হওয়ার কথা -অনেক কিছু। মায়ের কাছ থেকে সে শেখে - সারা জীবনই তাকে এ ধরণের পরিস্থিতিতে পড়তে হবে, মুখ বুজে, চোখ নিচু করে সয়ে যেতে হবে সেগুলো, যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। মাস্তান, সন্ত্রাসী গোছের ঐ ছেলেগুলোর মুখের উপর কিছু বলা যাবে না। তাতে আরও বড় দুর্গতির শিকার হতে হবে হয়তো। হয়তো এসিড ছুঁড়ে মারবে তার উপর, হয়ত অপহরণ করে নিয়ে যাবে, হয়তো .........

আরও একটা ঘটনা মা জানতেন। ওর প্রাইভেট টিউটরের কথা। ক্লাস নাইনে থাকতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া এক ছাত্রকে তার প্রাইভেট টিউটর রাখা হয়। সে তাকে ইংরেজী আর অংক পড়াতো। পড়ার ছলে টিউটর তার হাতটা ছুঁয়ে দিত, পায়ে ছুঁয়ে দিত পা দিয়ে। একদিন কি একটা পড়াতে গিয়ে টিউটর তার উরুতে হাত রাখলে সে সোজা উঠে মায়ের কাছে গিয়ে জানায়। পরদিন থেকেই সেই টিউটর বাদ। এরপর থেকে কোন পুরুষ টিউটরের কাছে আর পড়েনি তিশা।

কিন্তু তাতে যে পুরুষগুলোর অত্যাচার বন্ধ ছিল তা নয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে, স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন পড়েছে, পুরুষদের লালসা আর বিকৃতির ভিন্ন ভিন্ন রূপ দেখেছে। পুরনো ঢাকা ছেড়ে সেগুনবাগিচা, পরে বনশ্রীতে- সব জায়গাতেই পুরুষের লালসার শিকার হতে হচ্ছে কোন না কোন ভাবে। রাস্তায়, বাসে, রিক্সায়, মার্কেটে, রেস্তোরায়। ধীরে ধীরে মায়ের কাছে এসব বলা বন্ধ হয়েছে। কত আর বলবে? কত আর বলা যায়? কতটুকুই বা বলা যায়? আর বললেও মায়ের ভাষ্য কি হবে তাতো সে জেনেই গেছে।

অন্তর্গত এসব বেদনার কথা অবশ্য একজনকে বলতো তিশা। পুরুষদের লোভাতুর দৃষ্টির কথা, তাদের প্রতি তার ক্লেদাক্ত ঘৃণার কথা, বোবা কান্নার কথা- সব বলার সঙ্গী ছিল একজনই। শ্রাবণী। তার কলেজ জীবনের বান্ধবী। সেই বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে প্রগাঢ় হয়েছে। দুজনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো বলে সেই সুযোগও ছিল।

শ্রাবণীরও পুরুষ-সংক্রান্ত বিরূপ অভিজ্ঞতা ছিল সেই ছোটবেলা থেকেই। তিশার মতোই সে-ও পুরুষদের প্রতি তীব্র ঘৃণা পোষণ করতো হৃদয়ে। বিকৃতমনা পুরুষদের শায়েস্তা করার নানা পরিকল্পনা করতো ওরা। কিন্তু সেই পরিকল্পনা পর্যন্তই। বাস্তবে রূপ নেওয়াতে পারেনি তারা কোনটাই। বরং কলেজে-বিশ্ববিদ্যালয়ে নীরবে, বিনা প্রতিবাদে, মুখ বুজে সয়ে গেছে সব।
অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার পর হুট করেই বিয়ে হয়ে গেল ওর। প্রেম করে নয়- পারিবারিকভাবে। ছেলে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকায়। বিয়ের পর শ্রাবণীও পাকাপাকিভাবে চলে গেল দক্ষিণ আফ্রিকাতেই। তবে, তিশার সাথে ওর যোগাযোগটা নিয়মিতই - ফোন, ফেসবুক, আর স্কাইপির কল্যাণে।
যে কথাগুলো বাবা-মাকে বলা হয় না, তা এখনও শ্রাবণীর সাথেই শেয়ার করে তিশা।


আজও নাস্তা করেই স্কাইপি খুলে বসলো তিশা। শ্রাবণী আছে অন-লাইনেই। ওকে অন-লাইন হতে দেখে শ্রাবণীই নক করে- ‘কিরে কি খবর? অফিস থেকে ফিরলি?’

‘হু। খবর ভাল না। আজ আবারো।’

‘আবারো! দাঁড়া ফোন দিচ্ছি।’

এতক্ষণ কথা হচ্ছিল কম্পিউটারের পর্দায়, অক্ষরের ভাষায়।

এখন হেডফোনটা কানে লাগায় তিশা। শ্রাবণীর কন্ঠ ভেসে আসে- ‘কোথায়? কি ঘটনা?’

পুরো কাহিনীটাই বলে তিশা। ওর অফিসের দেরীর কারণ থেকে শুরু করে ঐ লোকটার গায়ে আলপিন ঢুকিয়ে দেয়া পর্যন্ত - সব।

‘মন খারাপ করিস না। এতে তো তোর কোন দোষ নেই।’ শ্রাবণী বলে।

‘কিন্তু এটা করলে খুব কষ্ট হয় আমার। সে রাতে ঘুম হয় না। আজও আমি ঘুমাতে পারবো না রে। আমি করতে চাই না কখনোই। শেষ সময় পর্যন্ত চেষ্টা করি নিজেকে রুখতে।’ ম্লান গলায় বলে তিশা।

‘উহু। তুই ভেঙে পড়লে তো চলবে না। ওরা যুগের পর যুগ এরকমটা করে যাবে, আর আমরা কিছুই করতে পারবো না, তা তো হয় না। মনে রাখ, এই সব পুরুষের বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই।’

............................................................

সারারাত নির্ঘুম কাটে তিশার। প্রতিবারই হয় এমনটা। তবে, ঐ এক রাতই। পরদিনই মনটা প্রফুল্ল হয়ে ওঠে। আনন্দে ভরে ওঠে। অন্তত একজনকে তো শাস্তি দেয়া গেছে। কেউ জানুক আর না জানুক।

প্ল্যানটা শ্রাবণীর। দক্ষিণ আফ্রিকা যাবার পর ওর মাথায় আসে এই আইডিয়াটা। শুনেই ঘাবড়ে যায় তিশা। শ্রাবণী তাকে বোঝায়। একসময় তিশার ভীতি হেরে যায় পুরুষের প্রতি ওর প্রবল ঘৃণার কাছে। আট মাস আগে শ্রাবণীই ওকে পাঠায় দশটা আলপিন ভর্তি ছোট বাক্সটা।....

সকালে দরজার নিচ দিয়ে হকারের রেখে যাওয়া দৈনিক পত্রিকাটা সবার আগে হাতে নেয় তিশা। দ্বিতীয় পাতায় ওই লোকটার ছবি। কি কাকতালীয় ব্যাপার! গতবার ঠিক ছয় নম্বর কলামের নিচের অর্ধে ছাপা হয়েছিল খবরটা, ছবিসহ। এবারও সেখানেই। ছবির নিচে খবর টা। শিরোনাম - ‘বাসযাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু’।

পুরো খবরটা কি রকম হবে জানে তিশা। তবু পড়ে - গত রাতে রাজধানীর খিলগাঁও থানাধীন রামপুরা বনশ্রী এলাকায় অজ্ঞাত এক যাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ধানমন্ডি-বনশ্রীগামী একটি বেসরকারী পরিবহন সংস্থার বাসে আনুমানিক ৩৫-৩৬ বছর বয়সী ঐ ব্যক্তির মৃতদেহ পাওয়া যায়। ধানমন্ডি থেকে ছেড়ে আসা বাসটি বনশ্রীতে পৌঁছলে তাকে সীটের উপর অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। বাস শ্রমিকরা ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে গেলে রাত নয়টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশের ধারণা, অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পরে লোকটির মৃত্যু হয়েছে। আজ লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। গভীর রাতে এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত নিহতের পরিচয় জানা যায়নি।

আর কোন খবর পড়ে না তিশা। খবরের কাগজটা রেখে দেয় খাবারের টেবিলের উপর। নিজের রুমে গিয়ে ভ্যানিটি ব্যাগটা খোলে। ভেতর থেকে বের করে আনে ছোট বাক্সটা। ওর ভেতর আর মাত্র তিনটা আলপিন আছে। তুলোর বালিশে শুয়ে আছে পিনগুলো, এমনভাবে সাজিয়ে রাখা যাতে যে ধরবে তার হাতে চোখা অগ্রভাগের খোঁচা না লাগে। সাথে বিশেষ ধরণের ছোট এক টুকরো কাপড়, পিনটা ধরার জন্য। আলপিনের মাথায় মাখানো আছে তীব্র বিষ। ব্লো-ডার্টগানের ধারণায় বিশেষ এ আলপিনগুলো বানানো হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। একবার শরীরে ঐ বিষ ঢুকলে সাত মিনিটের মাথায় নিশ্চিত মৃত্যু। মৃত্যুর এক ঘন্টা পর শরীরে আর বিষের কোন অস্তিত্ব থাকে না। ফলে পোস্টমর্টেম বা ভিসেরা অ্যানালাইসিসে কিছু ধরা পড়ে না।
অদ্ভুত এক প্রশান্তি অনুভব করে তিশা।

ভাবে - আরও কিছু আলপিন পাঠাতে বলতে হবে শ্রাবণীকে।

ঠিকই বলে ও- এই সব পুরুষের বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই।

...........................................
রহস্যপত্রিকা, সেপ্টেম্বর, ২০১২ সংখ্যায় প্রকাশিত

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:০৩
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×