এক,
বহু বছর আগে আমার বন্ধু আখতারুজ্জামান আখতার বলেছিল, "একজন মানুষের ঐ জায়গায়ই থাকা উচিত, যেখানে সে সম্মান পায়, এটা হতে পারে গ্রাম কিংবা শহর, এতে কোনকিছু যায় আসে না।"
আখতার আমাকে কালি ও কলম সাহিত্য পত্রিকা আর মৌচাকে ঢিল পড়তে বলেছিল। বহু বছর হয়, ওর সাথে কোন যোগাযোগ নেই। ও বলেছিল, একদিন ব্লগে অনেক লেখালেখি করে আস্তে আস্তে বড় একজন লেখক হয়ে উঠবে। আখতার এখনও ব্লগে লেখে কি-না আমি জানিনা।
আমাদের জীবনে অনেক অনেক মানুষ আসে, কিন্তু খুব কম মানুষ আমাদেরকে শানিত করে, শিক্ষিত করে। একটি ভালো বইয়ের কথা বলা মানুষ আপনাকে পরিবর্তিত করে। এজন্য আব্দুল কালাম সাহেব বলেছিলেন, একটি বই একশোটি বন্ধুর সমান, কিন্তু একজন ভালো বন্ধু পুরো একটি লাইব্রেরির সমান। আখতার এই পোস্ট তোমার কাছে পৌঁছালে আওয়াজ দিও।
বি:দ্র: আখতারের মতো আমার আরও কয়েকজন ভাই কিংবা বন্ধু আছে, কিন্তু তারা হারায় যায় নাই। তাই তাদের নিয়ে লেখছি না।
১০ই জানুয়ারি, ২০২৪
দুই,
আমার বন্ধু শুভ দাস। শুভ'র কথা মনে হলে আমার নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর 'অমলকান্তি' কবিতার কথা মনে পড়ে। যদিও সে মোটেও কবিতার অমলকান্তির মতো নয়, বরং একজন সত্যিকারের লড়াকু মানুষ।
ছোটবেলায় সব ছেলেদের মায়েরা যখন টিফিন বক্সে খাবার রেডি করে দিতো, শুভ দাস তখন রুটির দোকানে নাস্তা বানানোর কাজ শেষে স্কুলে আসতো। বিএ ক্লাসে ভর্তি হওয়া সব ছেলেদের জন্য গর্বের বিষয় হলেও শুভ তার বাবাকে বিএ ক্লাসে পড়বার বিষয়টি জানাতে পারেনি, পাছে তার বাবা রাগ করেন। বিএ ক্লাসে পড়বার সময় শুভ তার বাবার দোকানে চা বানাতো, পূজায় কিংবা কোন অনুষ্ঠানে ঢোল বাজাতো। বাজানোর হাত খুব ভালো ছিল তার, এখনও সে বাজায় কি-না জানা নেই আমার। কয়েকবছর হয় যোগাযোগ নেই, অনলাইনে নিয়মিত নয় সে। বিএ ক্লাসের পড়া শেষ, এখনও হয়তো বাবার দোকানে কাজ করে সে। সে যাই করুক না কেন, পৃথিবীর ইতিহাসে আরও অনেক বেশি সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠুক সে, যার কোন অভিনয়ের প্রয়োজন নেই।
বাস্তবে কিংবা সোশ্যালে এতো এতো অভিনেতায় পূর্ণ হয়ে উঠছে পৃথিবী, যার ভেতর একজন শুভ দাসের মতো সত্যিকারের মানুষ পাওয়া দুষ্কর। ভালো থাকুক আমার বন্ধু শুভ দাস।
১৩ই জানুয়ারি, ২০২৪
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:০০