somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গড়ে প্রতি ২০জন হত্যা ও ২০টি ধর্ষণের জন্যে মাত্র একবছর করে কারাদণ্ড!!! শহীদ ও নারীদের ইজ্জতের দাম এতোই সস্তা! মূল্যহীন! (রি-পোষ্ট)

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ সকালে মনটা বেশ চনমনে ছিল। আশা ছিল জাতি হয়তো কলঙ্কমুক্ত হবে। মনে খুব আনন্দ নিয়ে লাইভ আপডেট দেখছিলাম এই আশায় যে আজ মুক্তিযোদ্ধাদের কিছুটা সম্মান বা তাদের রক্তের দাম কিছুটা হলেও শোধ করতে পারবো বলে। প্রথম রায়ে তেমন খুশি বা আনন্দিত হতে পারিনি কারন প্রথম রায়ে ফাসিঁ হয়তো হয়েছে কিন্তু তা হয়েছে পলাতক কোন অপরাধীর যা বাস্তবায়ন নিয়ে শংকা আছে। তাই আজ আশায় বুক বেধে ছিলাম। কিন্তু আমার মনে আজ আবার মহান মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা অপমানিত করলাম বিচারের নামে প্রহসন করলাম।

মাঝে মাঝে পত্রিকায় দেখি খবরে শুনে অনেকের ফাসিঁ হয়। একজন মারার দায়ে ৩-৪ জনের ফাসিঁ, দুজনে যাবৎ জীবন এবং কয়েকজনের মুক্তি। একজনের মূত্যুর জন্য যদি ৩-৪ জনের ফাসিঁ হয় তাহলে কেন এমন হল আমাদের আশা- আকাঙ্খার।
বর্তমানে আমাদের রাষ্টপতিকে দেখা কিছুটা দয়ালু হতে তার বিশেষ বিবেচনায় বেশ কিছু রাঘব বোয়াল মুক্তি পেয়েছে। অবশ্য এগুলো হচ্ছে আমাদের মত সাধারন আমজনতার রক্তের সাধারন মূল্য। তাতে কার কি আসে যায়। আমাদের দেশে আমজনতার দাম কত? একেবারে মূল্যহীন আমরা!!! যখন কোন রাঘব বোয়াল বা ক্ষমতাসীন বা নামীদামি লোক দ্বারা সাধারন জনতা খুন হয় বা নির্যাতিত হয় তখন আমাদের বিচারের বানী অনেকটা নির্ভূতে কাদে। কিন্তু পরক্ষনে দেখা যায় বিপরীতটি ঘটলে অর্থাৎ নামীদামি বা রাঘব বোয়ালদের কেউ সাধারন কারো হাতে খুন হলে বা গুম হলে বা অপমানিত হলে তখন আইন তার ঝলক দেথায় তখন আইনের শাসন গর্জে ওঠে, সকলে ঝাপিয়ে পড়ে অন্যায় অবিচার রোধে। উদাহরন দেওয়া যায় কিছু দিন আগের বিশ্বজিৎকে দিয়ে। আবার আমাদের দেশে চলছে কিছু দিন ধরে ধর্ষনের প্রতিযোগীতা মনে হয় যেন কোন ওয়াল্ড কাপ চলছে ধর্ষনের উপর তাতে আমাদের আইন ও বিচার ভালো ভাবে আমরা দেথতে পাই। তখন আইন চলে কচ্ছপের গতিতে এবং বিচার চলে প্রহনের নামে। কিন্তু প্রভাবশালী কারো বোনের দিকে বা কন্যার দিকে চোখ তুলে তাকালেও তা হয়ে যায় বিশাল অন্যায় তুলে ফেলা হয় চোখ বা জুতাপেটা করে সমাজ চ্যুত করা হয়। তখন তারা হয়ে যায় ইভটিজার বা বখাটে ছেলে আবার দেখা যায় বাঘব-বোয়ালদের বেলায় তা হয় আধুনিকতা বা ওয়েষ্টার্ন সমাজ। আধুনিকতার নামে নোঙ্গারামী ।
এতখন অনেক প্যাচাল পাড়লাম অনেকে মনে করতে পারে এ আবার নতুন করে বলার কি আছে । আমার কথা লেকচার লেকচার মনে হচ্ছে নিজের কাছেই। এবার আসি আসল কথায়।
আজ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দ্বিতীয় রায় হল। রায়ে তার বিরুদ্ধে আনীত ৬টি অভিযোগের ৫টি প্রমাণিত এবং এ সব অপরাধের জন্য দুইটিতে যাবজ্জীবন এবং ৩টিতে ১৫ বছর করে জেল দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ৫টি প্রমানীত হয়েছে এবং এগুলোতে তার বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। আসুন একবার দেখে নেই তার কারাদন্ডগুলো যা আমাদের মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে শক্তি বলে দাবিদার সরকার এবং ট্রাইবুনাল দিয়েছে-
১। কবি মেহেরুন্নেছা, তার মা ও দুই ভাইকে হত্যা – ১৫ বছর কারাদণ্ড
২। আইনজীবী-সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে হত্যা – ১৫ বছর কারাদণ্ড
৩। বাংলা কলেজের ছাত্র পল্লবসহ সাত জনকে হত্যার নির্দেশ – ১৫ বছর কারাদণ্ড
৪। মিরপুরের আলোকদী গ্রামে হামলায় ৩৪৪ জনের বেশি নিহত – যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
৫। হযরত আলী লস্কর, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও দুই বছরের এক ছেলেকে হত্যা ও ধর্ষণের শিকার মেয়ে – যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ................................. তথ্যসূত্র ইন্টারনেট...

এই রায় দেখে নিজের মুখে না যারা মুক্তিযোদ্ধের পক্ষে শক্তিবলে গলা ফাটায় তাদের মুখে থুথু ফেলতে ইচ্ছা করছে তা বুঝাতে পারবো না। আমার মনে হয় এই রায় একাত্তরের মানবতা অপরাধের চেয়ে কম লজ্জাজনক নয়।প্রায় চারশ হত্যা এবং দেড় শতাধিক ধর্ষনের বিচার করা হয় কেবল মাত্র যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়ে যেখানে লাখো শহীদ ও অগনিত নারীর ইজ্জতের মূল্য দিতে গিয়ে জামাতি কাদের মোল্লাকে হাজার বার ফাসিঁতে ঝোলালেও শোধ হবার নয়। সেখানে এই ন্যুনতম শান্তনা পাওয়ার এই রায় আমরা কতটা আশাহত হতে পারি। গড়ে প্রতি ২০জন হত্যা ও ২০টি ধর্ষণের জন্যে মাত্র একবছর করে কারাদণ্ড!!! শহীদ ও নারীদের ইজ্জতের দাম এতোই সস্তা! মূল্যহীন! কোনো মূল্য নেই তাদের রক্তের? এতোই নগণ্য মা-বোনের সম্মান!। আমাদের হাক-ডাক পেটানো ট্রাইব্যুনাল নিশ্চয়ই শহীদদের রক্তের এবং সম্মানকে মূল্যহীন ভেবেছেন, নাহলে প্রমাণিত হওয়া হত্যার বিপরীতে মাত্র সামান্য ক’বছর জেল ঘোষনার রায় হতো না।
যারা মুক্তিযোদ্ধারে বিচারের দাবী করে গলা ফাটিয়ে চিল্লাইছে তাদের ফাসিঁ দাবি করতে পারি। কারন শত শত মূত্যুর বিপরীতে যদি মাত্র যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয় তাহলে তাদের ফাসি দাবী করা অযৌক্তিক কিছু বলে মনে হবে না। পুরো জাতিকে আশা জাগিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি একি খেলা খেললো আমাদের সাথে।

হয়তো আগামী নির্বাচনে বিশাল অংকের টাকার যোগান দিবে জামাতি অথবা হবে প্রধান বিরোধী দল নির্বাচন জায়েজ করা জন্য।
ক্ষমতাসীন দল পূর্ননির্বাচিত হলে জামাতি রাজাকার অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি পাবে এবং মুক্তির মেয়াদ ক্রমে বাড়তেই থাকবে অথবা অন্যকোন দল এসে কাদের মোল্লার জামিন দিবে অথবা ট্রাইবুনাল বাতিল ঘোষনা করে সকল বিচার স্থগিত করবে। এ আর আমাদের দেশে নতুন কি!!

আবার শুনলাম জামাতিরা আগামী কাল হরতাল দিছে, আরে ভাই তোরা হরতাল দিলি কেন তোরা তো এখন মিষ্টি বিলি করবি। তোদের আশা পূরন হইছে। আগামী নির্বাচন হইতে দে তারপর তোরা যা চাইবি তাই হবে। এই রায়ে তো তোদের জয় হল। মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হল। যেখানে হরতাল দেয়া কথা সাধারন জনগনের, অতি আশায় বুক বাধা মানুষের, শহিদ পরিবারে। সেখানে কিনা তোরা হরতাল দেছ । আজিব দেশ আমার বাংলাদেশ..................
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×