somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুদ্ধ শিশু : মুভি রিভিউ (যেখানে "গেরিলা এবং "জয়যাত্রা" সহ অন্য বাংলাদেশির ছবির জয়গান)

২৫ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তির সংগ্রাম, আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে বহু ইতিহাস, গল্প, প্রামান্য চিত্র এবং অনেক অসাধারন ছবি আছে। যা যতবার দেখি শিউরে উঠি। মনে হয় চোখের সামনে ভেসে উঠছে সব কিছু। যেমন বলা যায় সৈয়দ শামসুল হক এর নিষিদ্ধ লোবান এর কথা। আমি যতবার পড়েছি শিউরে উঠেছি। আবার বলা যায় ওরা ১১ জন ছবির কথা আমার দেখা সেরা মুক্তিযুদ্ধের ছবি এটা।

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখা উপন্যাস, গল্প এবং প্রামান্য চিত্র ও ছবির কথা শুনলে আমি অপেক্ষায় থাকি কথন এটা হাতে পাবে বা দেথতে পারবো। তেমনিই যখন শুনলাম ওপার বাংলার পরিচালক মৃত্যুঞ্জয় দেবব্রত আমাদের গর্বের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ছবি বানাচ্ছেন তখন থেকে মুখিয়ে আছি কখন দেখতে পারবো তার জন্য। ছবির নাম হচ্ছে "চিলড্রেন অফ ওয়ার" বাংলায় যার নাম যুদ্ধ শিশু।

গতকয়েক দিন দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন এবং মৃত্যুঞ্জয়ের এক সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে জানতে পারলাম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তিনি ছবি করার অনু্প্রেরনা পেয়েছেন, তার ছোট বেলায় পাচঁ বছরের মত বাংলাদেশের দৌলতে থাকা এবং মুক্তিযু্দ্ধ নিয়ে নানা বই পড়ার মাধ্যমে। আবার শেখ মুজিবর রহমানের "দি আনফিনিশড মেমরিস্" এর ওপর ভিত্তি করেও নাকি লেখা হয়েছে "যুদ্ধ" শিশুর চিত্রনাট্য।

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তৈরি বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি ছবি এর আগে আমি দেখেছি। যতবার দেখিছি শুধু অশ্রু জড়িয়েছি। এর মধ্যে অন্যতম হল- ওরা এগারো জন, হাঙ্গর নদী গ্রেনেড, কলমিলতা, আগুনের পরশমনি, জয়যাত্রা, আমার বন্ধু রাশেদ, মেহের জান, গেরিলা ইত্যাদি। এ ছবিগুলো আমি কতবার দেখিছি তার শেষ নেই। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তৈরি এ ছবি গুলো এতবার দেখিছি যে, যতবার দেখিছি ততবার মনে হয়ে এ যন্ত্রনার এক অংশ আমি।

যাই হোক এবার আসি "যুদ্ধ শিশুর" কথায়। অনেক আগ্রহ নিয়ে বসলাম যুদ্ধ শিশু ছবিটি দেখতে, নতুন কোন যন্ত্রনা পাবার জন্য আর নতুন কোন তথ্য জানার জন্য। কিন্তু ছবির শুরুতেই আমি হতাশ হলাম এবং পুরো ছবিটি দেখি আমার কাছে যা মনে হল-----

এরকম একটি দেশে ইতিহাস এবং গর্বের বিষয় নিয়ে ছবি বানানো পূর্বে মৃত্যুঞ্জয়ের আরো গভীর ভাবে চিন্তা করা দরকার ছিল। ছবির শুরুতেই আমার যে বিষয় নিয়ে খটকা লাগে তা হলো ভাষাঃ

আমার দেশ, দেশের ইতিহাস, মা-মাটি মানুষের আবেগ এবং আমার দেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ছবি তৈরির প্রথমে মৃত্যুঞ্জয়ের যে বিষয়টির উপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া দরকার ছিল তা হলো ছবির ভাষা। ছবির শুরুতেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরা হলো অন্য একটি ভাষায়। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তৈরি ছবিতে সে দেশের ইতিহাস এবং মানুষের কথা বলা হল অন্যভাষায় এবং মাঝে মাঝে জুড়ে দেওয়া হল জয় বাংলা ধ্বনি, এটা ভাবাই অবাস্তব। যে দেশ তাদের ভাষার জন্য আন্দোলন করলো, যে দেশ পৃথিবীকে উপহার দিল মাতৃভাষা দিবস, যে দেশ একমাত্র দেশ যারা তাদের ভাষার জন্য বুকের তারা রক্ত ঢেলে দিল রাজপথে, সে দেশের মুক্তিযুদ্ধের ছবিতে মু্ক্তিযুুদ্ধের ইতিহাস বলা হল অন্যভাষায়। পৃথিবীতে একমাত্র দেশ বাংলাদেশ, যে দেশের নাম তার ভাষার অনুসারে রাখা। ভাষার নাম অনুযায়ী রাখার পৃথিবীতে একমাত্র দেশ বাংলাদেশ। ভাষা নিয়ে আমাদের আবেগ আমাদের গর্ব অনেকটা তরতাজা।

যে দেশের মানুষের হৃদয়ে, দৃশ্য-শ্রব্যের, চেতনার সবটুকু অধিকার করে আছে একটিমাত্র ভাষা- বাংলাভাষা, সেখানে কী না এ ছবির চরিত্ররাও কথা বলে অবাঙ্গলীদের মতো, অকেশনালি। তাদের ভাষার উচ্চারন থেকে মনে হয় খুব কষ্টে তারা কোন মতে বাংলা বলে তাদের অভিনয়টুকু শেষ করলেন। এটা কি ছবির পরিচালক বা ছবি সংশ্লিষ্ট অন্য কারো বিবেকবোধে একবার আসেনি?

ছবিতে অনেক উর্দু সংলাপ থাকায় সাবটাইটেল ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানেও দেখা গেছে না অসংগতি, ভূল ব্যাকরনের ছড়াছড়ি এবং ভূল শব্দের ব্যবহার যা অনেকক্ষেত্রেই চরম বিরক্তিকর। যেমন: (তারা যেন এই ঘটনা থেইকা আখেরি 'চেতবানি' পায়)

এতখন তো গেলে ভাষার কথা এবার আসি ছবির কাহিনীতে। ছবির শুরুর কাহিনী দেখে আমিতো অবাক, এরকম কাহিনীতো দেখিছি বা শুনেছি। পড়ক্ষনেই মনে পড়লো "গেরিলা"র কথা। অবাক হলেন! মিলিয়ে দেখুন গেরিলা শুরু দৃশ্য এবং "যুদ্ধশিশুর " শুরু দৃশ্য।

গেরিলা আর যুদ্ধ শিশু ছবির কাহিনী সাদৃশ্য। ছবি দুটো শুরু হয় প্রায় একই ভাবে। দুটি ছবিতেই শুরু হয় নির্মম রাষ্টনায়ক ইয়াহিয়া খানের হিংস্র ভাষন বা বানীর মাধ্যমে। অতিরিক্ত পাওনার মধ্যে শুধু থাকে ইন্দিরা গান্ধীর দুর্লভ কিছু ফুটেজ।

এবার আসি এরপরের দৃশ্যে। যুদ্ধ শিশু ছবি শুরু হয় সাংবাদিক আমির (ইন্দ্রনীল) আর ফিদার (রাইমা সেন) সুখী সংসার নিয়ে। দিনের রিপোর্ট লেখা শেষ করে আমির (ইন্দ্রনীল) বৌকে আদর করতে দেখা যায় বা আদর করার জন্য বিছানায় ওঠে। তারা মুসলিম দম্পত্তি। ছবি শুরু হয় ২৬ মার্চ, ১৯৭১। যুদ্ধ শিশু ছবিতে দেখা যায় আমির (ইন্দ্রনীল) আর ফিদার (রাইমা সেন) বাড়িতে ঢুকে আমিরের চোখের সামনে তার বৌকে ধর্ষন করে। অত্যাচারে জ্ঞান হারানো আমির জ্ঞান ফিরে তার বৌকে খুজতে থাকে। ছবিতে একসময় আমিরকে (ইন্দ্রনীল) ঢাকা থেকে সুদূর গ্রামে একলা পাড়ি দিতে দেখা যায়। সে সময় আমির (ইন্দ্রনীল) থাকে একজন মুক্তিযোদ্ধা।

"গেরিলা" ছবিটিও শুরু হয় এক তরুন সাংবাদিক দম্পত্তি নিয়ে। তারাও মুসলিম দম্পত্তি। এ ছবিতেও হাসান (ফেরদৌস) এবং বিলকিস (জয়া আহসান) এর দম্পত্তির সুখি সংসার দেখা যায়। হাসানও (ফেরদৌস) অফিসে যাওয়া আগে বৌ এর সাথে আদর করার খুনসুটি দেখা যায়। তারাও মুসলিম দম্পত্তি। উভয় ছবিতে স্বামীর আসন্ন বিপদের কথা ভেবে গৃহবধুকে চিন্তিত দেখা যায়। ছবির শুরু তারিখ প্রায় একই দিন: ২৫ মার্চ, ১৯৭১। গেরিলা ছবিতেও সাংবাদিক হাসান (ফেরদৌস) বউয়ের বারন উপেক্ষা করে অফিসে গেল, এরপর আর খোজ মিলেনি হাসানের। একক্ষেতে পার্থক্য শুরু এতটুকু বিলকিস (জয়া আহসান) তার স্বামী আর খুজে পায়নি কিন্তু যুদ্ধ শিশু ছবিতে এক পর্যায়ে আমির (ইন্দ্রনীল) তার বউকে খুজে পায়)। গেরিলা ছবিতেও দেখা যায়, প্রান বাচাতে বিলকিস (জয়া আহসান) ঢাকা থেকে গ্রামের পাড়ি জমায়।

এখন বুঝতে পারছেনতো ছবি দুটির কাহিনীতে কতমলি? গেরিলা ছবি দেখতে বসে আপনি অনুভব করবেন যে, ছবিটিতে কাচা মাটির গন্ধ এবং মুক্তিযদ্ধের একখন্ড চিত্র আপনার সামনে ভেসে উঠেছে। আর যুদ্ধ শিশু যেন কোন গল্পকারের লেখা ইমাজিনারী কোন কাহীনি, অনেকটা সাজানো এবং মেকি টাইপের। তাইতো আমির (ইন্দ্রনীল) মুক্তিযোদ্ধা দলে যোগদান করার পর প্রথম যে অপারেশনে অংশগ্রহন করে সেখানে খুজে পায় নিজের হারিয়ে যাওয়া ধর্ষিতা বউকে। যা অবাস্তব। হতাশ হয়ে ভাবতে থাকি, আরে ব্যাটা বেছে বেছে মুক্তিবাহীনি সেই ক্যাম্পে আক্রমন করল যেখানে কিনা ফিদা ছিল। এতখানি কাকতলীয় যে এটা পরিচালক বা রচনাকারীর ইচ্ছার খেয়াল ছাড়া আর কিছু নয়। আরে এত বর্তমানে সস্তা বাংলা কিংবা হিন্দী ছবিতেও দেখা যায় না। এটা কি বাংলা বা হিন্দী ছবির নায়কের এক আঘাতে জ্ঞান হারানো এবং অপর আঘাতে জ্ঞান ফিরে পাওয়া কাহিনী? কিংবা আমাদের কাসাফাদ্দৌজা নোমান ভাইয়ের এক আঘাতে ল্যাপটপ এর আওয়াজ বন্ধ এবং ২য় আঘাতে আওয়াজ ফিরে পাওয়ার কাকতালীয় ঘটনা? মানলাম একটা না হয় কাকতালীয় ঘটনা হতেই পারে! তাহলে পরবর্তী দৃশ্য কি?

ছবিতে পা্ওয়া যায় আরো দুটি কিশোর- কিশোরী ভাই বোনের দৃশ্য। পাক হানাদারের হিংস্র ছোবলে তাদের গ্রাম পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তারা দুজন বেচেঁ যায়। দুজন দুজনের হাত ধরে খুজতে থাকে আশ্রয়ের ঠিকানা। দুজনেই যেতে চায় ভারতে। কিন্তু ভারত কোথায়, কিভাবে যাবে বা কতদুর তা তারা জানে না। যাওয়ার মাঝে মাঝে তাদের সাথে দেখা হচ্ছে অন্য গ্রাম থেকে আসা তাদের মতই শনার্থীদের সাথে- আবার কখনও কখনও সেই গোটা দলটাই ঝাঁঝড়া হয়ে যাচ্ছে পাক সেনাদের গুলিতে। কিন্তু বেচে যাচ্ছে তারা দুই ভাই-বোন। এখানেই কাকতালীয় ব্যাপার, মিরাক্কেল! আরে ভাই এত গোলাগুলির মধ্যে তারা কিভাবে বেচেঁ থাকে কোন প্রকার আঘাত বা ক্ষতি ছাড়া। দুই ভাই -বোনের কাউকে শেষ দৃশ্য পর্যন্ত আঘাত পেতে দেখা যায়না এবং হানাদার বাহীনির একটি গুলি তাদের স্পর্শ করতে পারেনা! একটি ছবিতে এতগুলো কাকতালীয় ঘটনা জুড়ে দেওয়ার আগে বারবার ভেবে দেখা উচিত ছিল, এটা কোন কল্পকাহীনি নয়, এটা একটা দেশের ইতিহাস, গর্বের জায়গা এবং একটি নির্মম বাস্তব ঘটনা নিয়ে একটি চিত্রনাট্য। এখানে পাওয়া যায় "জয়যাত্রা" ছবির দৃশ্য। জয়যাত্রাও দুই ভাই-বোনের বেচেঁ থাকার জন্য সংগ্রাম করতে দেখা যায়। তাই বলা যায় ছবির এই দৃশ্য বা কাহীনি জয়যাত্রা থেকে নেয়া। তবে জয়যাত্রার মতো ফিনিশিং দিতে পারেনি দুই ভাই-বোনের কাহিনী।

এবার আশে দুই ছবির বাংলার বউয়ের লুক নিয়ে। " যুদ্ধশিশু" আর "গেরিলা" এর গৃহবধুর মধ্যে রয়েছে আকাশ পাতাল ব্যবধান। "গেরিলা ছবি যত এগিয়েছে, গৃহবধু জয়ার শরীরে ফুটে উঠেছে তত যন্ত্রনার গ্লানী। "গেরিলা"র গৃহবধু তার স্বামী, বন্ধু, তার পরিবার এবং দেশের কথা চিন্তা করেই এতটা ভেঙ্গে পড়ে যেখানে, সেখানে "যুদ্ধশিশু"র গৃহবধু বারবার গনধর্ষনের শিকার হয়ে, পাকিদের ক্যাম্পের দাসী থেকেও যেন পুরো শরীর জুড়ে রাজত্ব করছে গ্লামার। যেখানে দেখা যায় ক্যাম্পের অন্য নারীরা অত্যাচারে, গনধর্ষনের ফলে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে, উন্মাদিনী হয়ে যাচ্ছে, তাদের দেখা বোঝা যাচ্ছে যে কতটা কষ্ট তারা সহ্য করেছে, কতটা যন্ত্রনায় তারা দিন গুনছে মৃত্যু কবে আসবে। সেখানে ফিদারকে (রাইমা সেন) দেখা যায় ফ্রেশ সুশ্রীময় বাঙ্গালী বধু টাইপের, মনে হচ্ছে এই মাত্র তিনি ফ্রেশ হয়ে এসেছে ফটোসুটের জন্য। তাকে দেখে একবারে জন্য মনে হয় না তিনি এতদিন যাবত গনধর্ষনের শিকার এবং পাকিদের নির্যাতনের শিকার ছিল।
এটা যেন কোন হিন্দী সিরিয়াল যেখানে দেখা যায়, ঘুম থেকে স্বামী-স্ত্রী উঠার পর মনে হয় তারা ঘুম থেকে নয় বরং বিউটি পারলার থেকে এসেছে।

এবার আসি চরিত্রগুলো কথায়। ঈন্দ্রনীলকে মুক্তিযোদ্ধার চরিত্রে বেমানান লাগছিল। তার অভিনয় দেখে মনে হয়েছে তিনি মুক্তিযুদ্ধে নয়, পাড়ার কোন লাঠি খেলায় এসেছে। সবচাইতে পীড়াদায়ক ছিল সংলাপ বলাটা। এমন বাংলা উচ্চারনে বাংলাদশের কেউ কথা বলে কী না আমার জানা নেই। ছবিতে বাংলাকে শুদ্ধভাবে উচ্চারনের চেষ্টা করা হয়েছে, তাই সেটা না হয়েছে আমাদের বাংলা ভাষা আবার নাই হয়েছে ওপারে বাংলা।

ছবির বেশির ভাগ বাংলাদেশের বাহিরে চিত্রায়িত হওয়া চোখে পড়ে বেশ কিছু অসংগতি। সিনেমার কিছু দৃশ্যে দেখা যায় পাকি ক্যাম্পের পিছনে পাহাড়ি দৃশ্য। ক্যাম্পে বন্ধি নারী বা বীরাঙ্গনাদের পোশাকও যুদ্ধচলাকালীন পোশাকের সাথে যায়না।

তবে ছবিটির চিত্রগ্রহণ ও সংগীতের ক্ষেত্রে ভাল করেছে। ‘রক্তই তো’ শিরোনামের গানটি তো অসাধারন লাগছে। ছবিটির শেষ দৃশ্যে দেখা যায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এসে মিলেছে বর্তমান কালে আলোচিত একটি আন্দোলনে। এই আন্দোলনের অন্যতম নেতা হল সেই মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্ষিতা এক বীরাঙ্গনার নাতী যা এক "বাস্টার্ড চাইল্ড"। আর তা হলো নায়িকা ফিদার (রাইমা সেন) সন্তানের, যা পাকি সেনাদের ধর্ষনের ফলে জন্ম নেয়। এদিক দিয়ে মৃত্যুঞ্জকে বাহবা দেওয়া যায়, কারন ঘৃনা আর অপমানের জবাব ভালবাসা দিয়ে দেয়াটা ভাল লাগছে।

শত্রু পাকিদের বীর্যে জন্ম নেয়া তরুনটি যখন, হানাদারদের বিরুদ্ধে চিৎকার করে বলতে থাকে, নিজের পরিচয় দেয় বাংলাদেশি হিসেবে, যখন মৃত্যুঞ্জয় বাহবা পাওয়ার অধিকারী হয়।

এতখন এসব পড়ে মনে হতে পারে ছবিটি না দেখাই ভালো, কিন্তু না এই ভূল করবেনা। হতে পারে এই ছবির চিত্রনাট্য অন্য বাংলাদেশি ছবি থেকে ধার করে নেওয়া। তাতে কি? এই ছবি দেখে আপনি কিছুটা হলে জানতে পারবেন নির্মম ইতিহাসের কথা। আগে যদি আপনার মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তেমন কোন ছবি দেখা না হয় তাহলে এই ছবি দেখা আপনার আমার কর্তব্য। বাংলাদেশি না হয়েও ১৯৭১ কে তুলে ধরার যে মহৎ প্রয়াস দেখিয়েছেন পরিচালক- তা অস্বীকার করা যাবে না কিছুতেই। বীরাঙ্গনাদের নিয়ে এই মানের কাজ এটাই প্রথম। সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি গণহত্যার দালিলিক বিবরণ হিসেবেও এই সিনেমাটির গ্রহণযোগ্যতা থেকে যাবে।

পরিশেষে আমি কখনও কোন ছবি নিয়ে লিখিনি। তাই ভূল ত্রুটি থাকতে পারে। ঠিক মত গুছিয়ে লিখতে পারিনি। তাই ভূলত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টি দেখবেন।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট, বিভিন্ন সময় অনেকরে আলোচনামূলক মন্তব্য এবং আমার ছবি দর্শন।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৫০
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×