somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গাঁও গেরামের খোলা চিঠি ’অস্তিত্বের অন্তজ্বালা যখন মানুষকে বির্দীর্ণ করে তখন বাপকে ছেডে কথা কয় না। ’

০১ লা মে, ২০১৪ রাত ৮:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাননীয় প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনা জননী। বাংলাদেশের গাঁও-গেরামের আবাল-বৃদ্ধা-বনিতা ভূখা-নাঙ্গা লক্ষ-কুটি জনতার হাজার -লক্ষ-কুটি সালাম নিবেন।
পর সমাচার, আপনাকে কোন ভাষায় চিঠি লিখব বুঝতে পারতেছি না। আমার আগেও এরকম গাঁও গেরামের চিঠি অনেকে লিখেছেন। কিন্তু অধিকাংশের ভাষা এত তরল আর তেল-তেলে ছিলো যে, মনে হয় যেন গ্রামের মানুষ শক্ত ভাষায় কথা বলতে জানে না। বাঙলার গাঁও-গেরামের কৃষকেরা যখন তাদের রক্ত-ঘামে উৎপাদিত ফসল রাস্তায় ঢেলে এবং নদীতে ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ করেন, তাদের সেই প্রতিবাদের ভাষা আপনার খাদ্য, কৃষি ও বানিজ্যমন্ত্রি কি অনুধাবন করতে পারেন। অপমান আর অস্তিত্বের অন্তজ্বালা যখন মানুষকে বির্দীর্ণ করে তখন বাপকে ছেডে কথা কয় না। যে ফসল কৃষকেরা রক্ত-ঘাম ঝরিয়ে উৎপাদন করে, মূল্যসন্ত্রাসী চক্রের দৈরাত্বে মাঠ পর্যায়ে সে কৃষক তার ফসলের দাম পায় না। সে ফসল কৃষকের হাত ছাড়া হয়ে গেলে দ্বিগুন-তিনগুন দাম দিয়ে আবার কিনে খেতে হয়। কৃষকদের সে বেদনার কথা মন্ত্রী মহোদয়গণ করে বুঝবেন?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রি, ছাত্রগীগের একটি রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে। দেশের স্বাধীনতা ও স্বাধীকার আন্দোলনের চালিকাশক্তি হিসেবে ছাত্রগীগের ভূমিকা ছিলো আগ্রগন্য। কিন্তু আজকে আমরা এ কোন ছাত্রগীলকে দেখি! যে দলেন সন্ত্রাসীরা সারাদেশে টেন্ডাবরাজী, সন্ত্রাস,দখলদারিত্বের পর এবার নিজ সংগঠনের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয় নেতা সায়াদকে পিটিয়ে হত্যা করে। অপর দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগর নেতা রুস্তম আলী হত্যার সন্দেহের তালিকায় ছাত্রলীগরও আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রি আপনিই ভালো বলতে পারবেন এ ছাত্রলীগ আগামীতে আমাদের কি উপহার দিবে।
দেশের উপজেলা নির্বাচন ভালোভাবেই শুরু হেেয়ছিলো, এতে সকল দল সমানভাবে অংশগ্রহণ করেছে। প্রথমদিকে বিএনপি ফলাফলে এগিয়ে ছিলো। বিজয়টা তারা এনজয় করেছে। কিন্তু মাঝপথে এসে কোন কোন স্থানে বিএনপি প্রার্থী নিজেদের পরাজয় দেখতে পেয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জন ও হরতাল ডেকে দিল। এটা যেমন গনতান্ত্রিক আচরণ নয়, অপরদিকে আওয়ামীলীগের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে কোথায়ও কোথাও তৃনমূলের জনপ্রিয় নেতাদের মনোনয়ন দেয় নি। এঁদের কেউ আবার স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থী হয়েছে এবং তাদের পক্ষে জনমত দেখে আওয়ামীলীগ মনোনীতরা এঁদের অত্যন্ত নগ্নভাবে দমন করেছে। গাজিপুরে এমন দমন করতে গিয়ে একজন আওয়ামীলীগ কর্মীকে গুলিকরে হত্যার ঘটনা ক্ষত হয়ে থাকবে। উপজেলা নির্বাচনের শেষ দিকে তালগোল পাকানোর অবস্থা সৃষ্ঠি হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিদেশ সফরে গেছেন। বাকী নির্বাচন কমিশনারগণ পরিস্থিতি ঠিকমত সামাল দিতে পারেন নি। তারউপর তিনি আবার একটি বিশেষ রাজনৈতিক পক্ষকে খোচামেরে কথা বলছেন। নিজেদের নিরপেক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে এমন কথা না বলে নির্বাচন কমিশন নিজেদের কাজ ভালোভাবে করতে পারলে আমরা উপকৃত হই। আমরা গাও-গেরামের মানুষ অনিয়মের ঘটনাগুলো চেয়ে চেয়ে দেখলাম, দেশের গনতান্ত্রিক চর্চা কোন পথে যাচ্ছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রি, আপনি নির্বাচনি ইশতেহারে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার কথা বলেছেন। আমরা গাও-গেরামের মানুষ এর সুফল পাবো বলে আশাবাদী হলাম। কিন্তু আজ যারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচিত হলেন তাদের ক্ষমতা কতটুকু? কেন্দ্রীয় সরকার বা আইন প্রনেতাদের শক্তিশালী হস্তক্ষেপের পর তাঁরা কতটুকু জনগণের জন্য বা স্থানীয় উন্নয়নের জন্য করতে পারবেন। উপজেলা চেয়ারম্যান বা পরিষদবর্গের হাতে আর্থিক ও সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষমতা না দিয়ে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা সম্ভব নয় সেটা আমরা সাধারণ মানুষও বুঝতে পারি। গনতন্ত্রে উত্তরনের জনপ্রত্যাশাকে আপনারা নির্বাচতি ইশতেহারে ঠাই দিয়েছেন। সে ওয়াদা বাস্তবায়ন করা আপনাদের দায়িত্ব।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রি, আপনি বলেছিলেন বিদ্যুতের বাড়ানো হলে নাকি দেশবসি উচ্চবাচ্য করবে না। আপনি কোন আত্মবিশ্বাস থেকে একথাটি বলেছিলেন জানিনা। তবে দেশের মানুষ উচ্চবাচ্য করলেও তা আপনাদের কানে তো পৌছায় না। কুইক রেন্টাল ও সিস্টেমলসের নামে বিদ্যুতখাতে কি পরিমান তসরুপ ও দূর্নীতি হচ্ছে সেদিকে নজর না দিয়ে আপনি নজর দিলেন দেশের মানুষের উপর আর্থিক দায় চাপানোর। অবশেষে বিদ্যুতের দাম আরেক দফা বাড়ানো হল। এতে দেশের গাও-গেরামের মানুষের অবস্থা আরেকধচাপ খারাপের দিকে যাবে।
ভারতের সাথে আমাদের বহু সমস্যা রয়েছে। তার মধ্যে তিস্তা একটি অন্যতম সমস্যা। পত্রিকায় দেখলাম বামমোর্চা তিস্তার সদস্যা সমাধানের দাবীতে রোর্ডমার্চ করেছে। অন্য বামদল গুলোও কর্মসূচি পালন করছে। খালেদা জিয়াও লংমার্চ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। অবশ্য খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকায় অবস্থায় এই বিষয়ে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয় নাই। এখন তাঁদের এই কর্মসূচি হচ্ছে লোক দেখানো। আশা করি তিস্তার ব্যাপারে ভারতের সাথে কথা বলে একটা উদ্যোগে নিবেন এবং এই সমস্যা সমাধান করবে।
বাংলাদেশ রক্তদিয়ে স্বাধীনতা এনেছে। সংবিদানে বলা আছে, মানুষ কি কি অধিকার ভোগ করবে। কিন্তু আমি একটা বিষয় লক্ষ করেছি, ইদানিং মানুষ গুম হয়ে যাচ্ছে। র‌্যাব ক্রসফায়ারের দিলে লাশ পাওয়া যেতো। এখন তাও পাওয়া যাচ্ছে না। পুকুরে-ডোবায়-নদীতে-জঙ্গলে লাশ পাওয়া যাচ্ছে। আরে এই কি কাণ্ড। ঘর থেকে মানুষকে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে। এর কি কোন বিচার নেই। মগের মুল­ুক নাকি? আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বলছে এই কাজ তারা করছে না। তাহলে করছে কে? আইন শৃঙ্খলার বাহিনী সর্বপরি সরকারের এই বিষয়ে সঠিক বক্তব্য এবং থাকতে হবে। আমি আশা করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি এই বিষয়ে উদ্যোগে নিবেন। ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
আর একটি বিষয় বলে আজকের মতো বিদায় নিতে চাই। তাহলো, সকলের শ্রদ্ধেয়, আমার জানা মতে বর্তমান ও সাবেক সংসদ সদস্যদের মৃত্যুর পর সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা হয়। কিন্তু এবিএম মূসা বেলায় তা হয়নি। সংসদের জানাজা হলে সেই লোক বেহস্তবাসী হয়ে যাবে না ঠিক কিন্তু যেহেতু সবার হচ্ছে মূসা কেন হবে না! এই বিষয়ে আপনার নিজের দিক থেকেই দেখবাল করার দরকার ছিলো। তাহলে মনে হয়ে সকলের জন্য ভালো হতো। আশা করি এই বিষয়গুলোর ব্যাপারে আপনি আরো যতœবান হবেন।
আপনার মূল্যবান সময় খরচ করতে চাই না। অবশেষে বাংলার গাঁও-গেরামের মানুষের পক্ষ থেকে আপনার সুমতি ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিদায় নিলাম।
ইতি
মরমি
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×