রূপগঞ্জ সিধু কানুর গ্রাম।এই গ্রামের মানুষ মুঘলের তরবারি,বৃটিশের বেয়নেট,পাকিস্তানের বন্দুক আর বাংলাদেশের ফুলের আঘাতে মোস্তফা জামালের লাশ নিয়ে সভ্যতার উদযাপন করছে। নূর হোসেন,চলেশ রিসিল,মোস্তফা জামাল এদের নিয়তি সভ্যতার বুলেট।
মুঘল-বৃটিশ-পাকিস্তান-বাংলাদেশ; শাসক মানেই সম্পদ লুণ্ঠন,শাসক মানেই জীবন লুন্ঠন।
এইসব আজে বাজে চিন্তা করে অনেক তরুণ জীবন ফেলে ময়মনসিং হ জেলে বিদ্রোহে গেছে।
কিন্তু বুদ্ধিমান তরুণেরা জামালদের জমি দখলের জন্য অস্ত্র-ক্ষমতা-কালোটাকা নিয়ে ঘুরছে।
রূপগঞ্জে জলপাই চাষের চেষ্টা চলছে। আবার কংক্রীটের বসুন্ধরা সৃজনের আয়োজন অনতিদূরে।
দুর্নীতির প্লেগাক্রান্ত ঢাকাশহরের সামরিক-বেসামরিক ভূমিদস্যুতা ধেয়ে আসছে সিধু-কানু জামালের গ্রামে।
কারো হাতে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার, কারো পকেটে কালো টাকা,উদ্দেশ্য একটাই ভূমি দখল।
বাঙ্গালী মুসলমান প্রোটোজায়ায় ভূমির প্রতি লোভ ৪৭ এর পর সবাই প্রত্যক্ষ করেছে।
নীটশে নীল রক্ত বলতে ভূমিদখলের সক্ষমতা বুঝিয়েছেন।
নূর হোসেন-চলেশ রিসিল-মোস্তফা জামাল এরা ছোটখাট মানুষের ঈশর,তাদের রক্ত লাল, টিভি ফুটেজে দেখছেন।
কিন্তু বাঙ্গালী মুসলমান যখন অস্ত্র,ভয় বা কালো টাকা দিয়ে সিধু কানুর জমি দখল করতে যায় তখন তার রক্ত নীল হতে শুরু করে।
কর্ণেল বাতেন বা টাকাওলা মফিজ জামালের জমির ওপর প্রাসাদ তৈরীর পর তার বউ মেয়ে যখন ওয়্যাক্সিং বা পেডিকিওর করতে পার্লারে যায়, তাদের পা ধরে জামালের বোন দেখে এদের রক্ত নীল হয়ে গেছে, নীটশে লাল রক্ত নীল করার এই ল্যান্ড বা প্যালেস বা পেডিকিওর কম্পলেক্স চাগিয়ে দিয়ে যাবার কারণে বাতেন-মফিজ অস্ত্র দেখিয়ে,দলবাজি করে,চোরাচালান করে,মানুষ খুন করে,ঘুষ খেয়ে বাচ্চাকে ইংলিশ মিডিয়ামে পাঠাচ্ছে,বউকে স্টারপ্লাস নিট মেক আপে রাখছে যাতে রক্ত নীলিকরণ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে।
জামালের অভিশাপে আমার ছেলে ইয়াবাসেবী হলে ক্ষতি নেই, আমার মেয়ের আভাগার্দ ছবি ডিজুস উপাঙ্গকেন্দ্রিক সারমেয়দের মুঠোফোনবৃত্তির রসদ হবে। তাতে ক্ষতি নেই জবা কুসুম রোকন দুলালের মাম্মি এগুলো নীল রক্তের সূচক। জয়তু নীটশে।
ঢাকা বা ঢাকান্তরের হিন্দু বা বিহারীদের দখল করা ধানমন্ডি বা র্যাং কিন স্ট্রীটের প্রাসাদে বসে অবসর প্রাপ্ত সিএসপি-মেজর জেনারেল বা চেম্বার অফ পাওয়ার আজ পত্রিকা পড়ে আহা উহু করছেন। টকশো না ডাকলেই বাঁচি ভেবে হিউম্যান রাইটস ইস্যুতে টেনশন করে সুগার লেভেল বাড়াচ্ছেন।
হাসিনা পারছেন না।
এজ ইফ মার্গারেট থ্যাচার পারতেন। যাদের রক্তের মধ্যে জামালের জমি দখলের, রবি রায়ের বাড়ী দখলের ধূসর কণিকা তাকে সামলাবেন শেখ হাসিনা।
রুপগঞ্জের ঘটনার মধ্যে ষড়যন্ত্র বলে এখন আওয়ামীলীগ বিএনপি মুখরা রমনীসুলভ সদস্যরা এখন টিভিতে কলতলাশোতে একে অপরের সঙ্গে খিস্তি করছেন। হাসিনাকে বিব্রত করতে কয়েকজন ব্যর্থ বক্তা আছেন। বয়সকালে তোফায়েল-সুরঞ্জিতের চেহারা বিটিভিতে দেখতো আর ভাবতো,দেখে নিস একদিন আমরাও।
অন্যদিকে খালেদাকে বিব্রত হননা আর। সালাউদ্দীন কাদের তার নবরত্নের একজন। কাজেই খালেদার সয়ে গেছে। আর দেলোয়ার জাকের নায়েকের মতো মিডিয়া ক্যারিয়ার করেছেন। উনি ল্যারিকিং এর গ্রামের আত্মীয় নাকি।
এই কাইজ্জাতে রুপগঞ্জ ইস্যুটা মাটিচাপা পড়বে জামালের মতো। শাহরুখ খান আসছে ঢাকার মেট্রোসেক্সুয়াল ইভনিং এ। জবাকুসুম রোকন দুলাল অনলাইনে টিকেট বুক করেছে।মাম্মিও বায়না ধরেছে। মাম্মিতো শাহরুখের বয়েসী তারি তো প্রথম অধিকার।
ড্যাডি এবার বাইনোকুলারে দেখছে কোন গ্রামটা ঢাকার কাছে, ইছামতী নাকি রুপগঞ্জ নাকি অন্য কোন গ্রাম কোথায় হবে জলপাই চাষ,কোথায় বসুন্ধরা সৃজন।
আমি তো মাটি কিনিনারে ড্যাডি পানি কিনি পানি।
২০২১ এর ভীষণ বাংলাদেশে খান বাহাদুর হতে গেলে ঢাকায় বাড়ী থাকতে হবে,ছেলে হার্ভাড থেকে ডাব্বা মেরে ফিরতে হবে, মেয়েকে সমস্ত কিছুর বিনিময়ে টিভিতে আসতে হবে,বউকে বোট্যাক্স করিয়ে ম্যায় কুসুমের মতো দেখতে হবে।ঢাকান্তরে বাগান বাড়ী থাকতে হবে,সেইখানে জমির রাজনৈতিক দালালরা ব্লু লেবেল খাওয়া শিখবে জরিনাকে ডিভোর্স করে। মডেল কন্যার সামনে ড্যাডি সুগার ড্যাডী হয়ে যাবেন।
ঢাকার ফাঁপা মানুষের এলিট হয়ে ওঠার বাতিক বদলাতে আওয়ামী লীগ পারবে না।
বাংলাদেশে রাষ্ট্রিক পর্যায়ে কোন ইতিবাচক পরিবর্তন অসম্ভব।
পারলে পরিবার আর স্কুল পারবে। বাংলাদেশের আসছে প্রজন্মের বাবা-মা-শিক্ষক ছাড়া আর কারো কাছে কোন জাদু নেই। হতাশায় সময় কাটিয়ে জামালের জন্য কিছু করা যাবেনা।
চলেন তার চেয়ে আমাদের বাচ্চাগুলোকে নির্লোভ করে গড়ে তুলি। ঘুষখোর ইঞ্জিনিয়ার,আমলা ক্লিনিকখোর ডাক্তার,ভূমিখোর সেনা কর্মকর্তা, চাঁদাবাজ পুলিশ বা টেন্ডার সন্ত্রাসী না বানিয়ে সুস্থ মানুষ বানাই।
সিরাজুল ইসলাম চোধুরী বা আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদের উপদেশ শুনে আমরা যারা ভাবতাম,
স্যাররা কি যে কল্পনার জগতে থাকেন।
উনাদের কথা শুনলে এগোনো যাবে না।
উনাদের কথা না শোনাতেই আজ বাংলাদেশ অন্ধকার যুগে ঘড়ি ঘুরালো। এখনো আমরা চালাক মানুষরা ভাবছি,আগুন লেগেছে রুপগঞ্জে। আমাদের কী। আগুন কতো দ্রুত আপনার চৌকাঠে আসতে পারে তাতো জানিনা আমরা। আমাদের বালিতে মুখ গুজে দেশপ্রেম বিলাসের নিষ্কর্মতায় আমরা নূরহোসেন,রিসিল,জামালদের লাশের অংক কষে যখন ব্রেকিং নিউজ দেখছি,
তখন যুদ্ধাপরাধীরা রুপগঞ্জের ঘটনাকে কীভাবে ঘোলা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার পন্ড করা যায় তার রেসিপি তৈরী করছে।বিএনপি এখন ত্যানা পেচিয়ে আওয়ামী লীগকে অজনপ্রিয় করে তুলবে। কারণ বিএনপির শয়নে সপনে জাগরণে শুধু ক্ষমতায় যাওয়া। দেশের চেয়ে দল বড়। মানুষের চেয়ে জমি বড়।
ধর্মব্যবসায়ীরা সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর শত্রুতার চেষ্টা পিলখানা থেকেই করছে,রূপগঞ্জ ঘটনায় করবে। সরকার ও সেনাবাহিনীর সম্পর্ক খারাপ হবার আশংকা নাই। কারণ এসব ভিলেজ পলিটিক্স সরকার সেনাবাহিনী বোঝে।
কিন্ত আমাদের সিধু কানু বা অস্ত্রহীন-কালোটাকাহীন-রাজনৈতিক ক্ষমতাহীন সুস্থ মানুষগুলোকে মাঝে মাঝেই যারা পাখির মত গুলি করে মারছেন তাদের কিছু করার সামর্থ আমার নেই। আমি আমজনতা।
কিন্তু অভিশাপ দিচ্ছি তোর ছেলে নিউইয়র্কে আফ্রিকান সমকামী বন্ধুর গুলি খেয়ে মরবে। তোর মেয়ে লন্ডনের সোহোতে নাচবে।তোর বউয়ের মেরুদন্ড শুকিয়ে যাবে,আর তুই মাউন্ট এলিজাবেথে বিছানায় হেগে মরবি। গুডলাক ভূমিদস্যু মাংসের কারবারী ক্ষমতাধর মলকীটবর্গ।