somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

>কলকাতা ভ্রমণ< অপরিকল্পিত যাত্রার সূচনা> (দ্বিতীয় পর্ব)

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১৮ জানুয়ারি ২০১৬, ৭ রবিউস সানি, ৫ মাঘ সোমবার দিবসে ভিসা প্রাপ্তির পর হিসেব করে দেখলাম, আরবি শাওয়াল মাসের মাঝামাঝি সময়ে ভিসার মেয়াদ সমাপ্ত হবে। অতএব পড়ালেখার ব্যস্ততা ও অন্যান্য বিষয় চিন্তা করে পবিত্র রমযানে ভারত ভ্রমণের নিয়ত করে পাসপোর্ট ড্রয়ারে রেখে দিলাম..........

১ মার্চ ২০১৬ মঙ্গলবার ২য় সাময়িক পরীক্ষা শেষ হলো। ১০ দিনের ছুটি। যেকোনো ছুটিতে আমার কিছু কাজের পরিকল্পনা থাকে। এবারও মোটামুটি পরিকল্পনা করে নিয়ে কাজ শুরু করবো ভাবছি, এমন সময় কলকাতা ভ্রমণের সুযোগ সামনে আসলো। ২ মার্চ বুধবার সন্ধ্যায় ঘনিষ্ঠ ২/৩ জনের কথায় আকস্মিক ঠিক করলাম যে, ৩ মার্চ বৃহস্পতিবার কলকাতার পথে সিলেট থেকে যাত্রা করবো।

সাধারণত আমি একটু সময় নিয়ে নিজেকে গুছিয়ে ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। এবার যেহেতু তড়িঘড়ি করে সফর; তাই কাউকে না জানানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। যাত্রার সিদ্ধান্ত ভ্রমণসঙ্গীকে জানিয়ে দিতেই বুধবার সন্ধ্যায় তিনি গ্রীন লাইন পরিবহণের(১) টিকিট কেটে নিলেন। সময়সূচী ছিলো, বৃহস্পতিবার দুপুর ০১ ঘটিকায় সিলেট থেকে ঢাকা। রাত ১০:৩০ –এ রাজারবাগ গ্রীন লাইন কাউন্টার থেকে বেনাপোল। ইমিগ্রেশন শেষে পেট্রোপোল হতে কলকাতার পথে রওয়ানা। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ সীমান্তকে বেনাপোল আর ভারতীয় সীমান্তকে পেট্রোপোল বলা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুর ০১ ঘটিকায় হুমায়ূন চত্বর থেকে গাড়ী ছাড়বে। বাসা থেকে বের হতেই ঘড়িতে ১২:৫০!!! তখনো এতকিছু আমি জানি না। ভেবেছি, মূল কাউন্টার থেকে ০১:৩০ এর দিকে গাড়ী ছাড়বে। সবকিছু জেনে ট্রেন মিস করার অভিজ্ঞতা স্মরণ হয়ে গেলো। তড়িঘড়ি করে গ্রীন লাইন সিলেট অফিসে ফোন দিয়ে বললাম, আমরা কদমতলী আসছি। একটু সময় যেন আমাদের অপেক্ষা করা হয়। তারা জানালো, সর্বোচ্চ ৫ মিনিট আমাদের অপেক্ষা করতে পারবে। এরমাঝে নাইওরপুল পয়েন্টে জ্যামে আটকে গেলাম। ওদিকে গ্রীন লাইন অফিস থেকে বারবার ফোন দিচ্ছে আর আমি ৫ মিনিট, ২ মিনিট করছি। যাই হোক, গাড়ী যেখানে দুপুর ০১ ঘটিকায় ছাড়ার কথা, সেখানে আমরা ০১:২২ এর দিকে গ্রীন লাইন অফিসে গেলাম। গাড়ী থেকে নেমে বাসে উঠতেই গাড়ী ছেড়ে দিলো। উফফফঃ! কি শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি!!!

গাড়ী ছেড়ে দিতেই জানতে পারলাম, ডলার সাথে নেয়া হয়নি। যাক, ফোনে খুরশেদ ভাই ডলার –এর ব্যবস্থা করে দেবার আশ্বাস দিয়ে দুশ্চিন্তা দূর করলেন। গাড়ী ঢাকার পথে যতো এগুতে লাগলো, আমি চিন্তার জগতে হারিয়ে যেতে থাকলাম। ভাবতে লাগলাম, মাত্র ২৪ ঘণ্টা পূর্বেও ভাবিনি ভারত যাবো। অথচ এখন ভারতের পথে! কি অদ্ভুত! রকমারি চিন্তা মস্তিষ্কে ঘুরপাক খাচ্ছিলো। অনেকেই বলেছে, বর্ডার –এ বেশ হয়রানী করে। না জানি আমাদের সাথে কেমন আচরণ করে! অকারণে না ঝামেলায় ফেলে দেয়! সবকিছু ঠিকঠাক হবে তো! কাউকে বলে আসলাম না। জানতে পারলে সবাই কি ভাববেন! কলকাতায় কি দেখবো!

এসব ভাবতে ভাবতেই বিকেল ০৪ ঘটিকায় হোটেল রাজমনী আশুগঞ্জ(২) –এ পৌঁছে গেলাম। অল্পক্ষণ বিরতি শেষে ঢাকার পথে যাত্রা করে ০৭:১৫ –এর দিকে রাজারবাগ গ্রীন লাইন কাউন্টারে(৩) চলে আসলাম। কিছুক্ষণের ভিতর অত্যন্ত প্রিয় ২ ভাই আসলে যাত্রীদের বসার জন্য নির্ধারিত স্থানে(৪) বসে তাঁদের সাথে গল্প গুজব করতে লাগলাম। এখানে পরিচয় হলো কলকাতা-গামী যাত্রী সিমেন্ট কোম্পানিতে চাকুরীরত মোরশেদ ভাইয়ের সাথে। সবাই একসাথে এশার নামাজ আদায় ও খাওয়া দাওয়া করলাম। খুরশেদ ভাই ০৯:৩০ –এর দিকে ডলার পৌঁছে দিলেন। অতঃপর সবাইকে রাত ১০:০০ ঘটিকার দিকে বিদায় দিয়ে বেনাপোল বর্ডারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়ার জন্য গাড়ির অপেক্ষায় বসে রইলাম। চলবে.......



>>>ভ্রমণ পরামর্শ ২>>> এমনিতে ভ্রমণকে ভিন্ন অর্থে কষ্ট বলা হয়। তাই যথাসম্ভব আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য বাড়তি সতর্কতা আবশ্যক। সবচেয়ে ভালো হয় (১)পরিকল্পনা গ্রহণের সময় ভ্রমণে কাজে আসবে এমন গুরুত্বপূর্ণ বস্তু সম্পর্কে কাগজে লিখে রাখা। যাতে শেষ মুহূর্তে কাগজে চোখ বুলিয়ে মিলিয়ে নেয়া যায় যে, সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা। (২)যাত্রা শুরুর অন্তত ঘণ্টা-খানেক পূর্বে সবকিছু পুরোপুরি গুছিয়ে নেয়া। (৩)রাস্তার জ্যাম ও অন্যান্য বিপত্তির বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা

প্রথম পর্ব পড়তে ক্লিক করুন
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:১৪
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×