গতকাল বাংলানিউজ ডটকম এর 'সাম্বাদিক' খবর ছাপিয়েছেঃ "বিষপানের রোগীকে ঢামেকে হাত-পা বেঁধে চিকিৎসা"
খবরটি পড়ে আমার মনে হলো, হে আল্লাহ তুমি উপর থেকে দড়ি ডাউনলোড করো, আমি নীচ থেকে আপলোড হই।
একজন এইট পাশ মুর্খ সাংবাদিকের কাছে ডাক্তারী শিখতে হবে ডাক্তারদেরকে।
আমাদের সাংবাদিকদের অবস্থা নেই কাজ তো খই ভাজ। এরা যে কি করে সাংবাদিক হইছে তা আল্লাহ জানে আর ওই বেটার সম্পাদক জানে। সে আবার বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নেয় একজন আনসার সদস্যর কাছ থেকে!! যেন রতনে রতন চেনে আর শুয়োরে চেনে কচু।
পয়জনিং এর কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগীকে হাপ পা বেঁধেই চিকিৎসা দিতে হয়। কারন এসব ক্ষেত্রে রোগী অনেক সময় স্নায়ুর অধিক উত্তেজনার কারনে রোগী বেশ ভাইয়োলেন্ট ও নন কো-অপারেটিভ থাকে৷ তার থাকে সুইসাইডাল টেনডেনসি, সে তার স্যালাইনের নল, নাকের নল বিভিন্ন কিছু খুলে ফেলতে চায়, এমনকি চিকিৎসা দানকারী ব্যাক্তিদেরকেও আঘাত করার চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে যদি রোগী আমাদের কোন নিকটাত্নীয়ও হয় তবে তাদের ক্ষেত্রেও একইভাবে চিকিৎসা করা হবে।
কাজেই এই সাংবাদিকদের কি বলা উচিত? গলায় একটা দড়িতে কার্ড ঝুলাইলে সাংবাদিক হওয়া যায়, কিন্তু ডাক্তার হতে হলে তাকে মোট ছয় বছরের কষ্টসাধ্য লেখাপড়া ও প্রশিক্ষণ শেষে ডাক্তার হতে হয়।
এদেরকে ঠিক করতে গেলে একটাই পথ আছে তা হচ্ছে মেডিকেলে ৫ বছর আমরা যে সমস্ত বই পড়েছি তা ওদেরকে পড়তে দিতে হবে। অবশ্য তাতেও ভরসা নেই ৷ নীলক্ষেতে "১ মাসে ডাক্তার হউন" টাইপের বই মুড়ির মতো পাওয়া যায়!
এপ্রসঙ্গে একটা গল্প মনে পড়ে যায়---
একসময় ছোটখাট সার্জারী অর্থাৎ ফোঁড়া কাটা এগুলি নাপিতেরা করত। তো একগ্রামে এরকম একজন নাপিতের ছিল ভীষণ প্রসার, গ্রামে এমবিবিএস ডাক্তার আসার পরও গ্রামবাসী ঐ নাপিতের কাছে যেত। ডাক্তারতো ভীষণ অবাক ও হতাশ। সে একজন তার সিনিয়র ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করল কি করা যায়। সিনিয়র ডাক্তার পরামর্শ দিল যে নাপিতকে শরীরের অ্যানাটমি শিখাতে হবে!!
তো নাপিতকে বলা হল তুমিতো অনেক ভাল অপারেশন কর তবে তুমি যদি মানুষের শরীরের কোথায় কি থাকে তা জানতে পার তবে তুমি আর ভাল করে অপারেশন করতে পারবা। নাপিততো খুব খুশি, তাইতো সে যদি ডাক্তারী শিখতে পারে তাহলে তার আরও অনেক বেশি প্রসার হবে ও বেশি বেশি ফোঁড়া কাটতে পারবে।
কাজেই নাপিতকে অ্যানাটমি শিখানো শুরু হল এবং কোথায় কোন নার্ভ, ধমনী, শিরা বা মাংসপেশী থাকে এবং ওগুলো কেটে গেলে কি কি ক্ষতি হতে পারে।
এসব শেখার পর নাপিততো আর সাহস পায়না ফোঁড়া কাটতে। কাজেই সাংবাদিকদের যদি ডাক্তারি শিখানো যায় তবে তাদের ঐ নাপিতের মত অবস্থা হবে।