না ছোট্ট একটা শব্দ..জীবনের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে এই না..না শব্দটার আর মা শব্দখানার মাঝে ব্যাপক মিল.. সেইরকম মাখামাখিপূর্ণ সম্পর্ক.. এই যেমন ধরুন
আপনি পুইচকা থাকা অবস্থায় আপনার পরম মমতাময়ী মাতাকে বলতেন “আম্মা আইসক্রিম খাইতে চাই”..তখন স্বভাবতই আপনার আম্মাজান আপনার কোমল হৃদয়ে আঘাত হানিয়া বলত “না..ঠাণ্ডা লাগবে”..তখন অনেক ঘোরপ্যাচের পর যদিও আপনি সম্মতি পাইতেন তবুও তা থাকত নাবোধক সম্মতি..যেমন “এইটাই শেষ..আর কোনদিন পাবিনা”..তখন নিশ্চয়ই আমার মত ভাবতেন,”বড় হই নিজের টাকা দিয়া কিন্না খামু”..কিন্তু আমরা কি জানতাম এইটা তো সবে শুরু না আর মা এর খেলা..
যাই হোক একটু বড় হইসেন..শুরু করসেন পড়া নিয়া ঘ্যানপ্যানানি..সকালবেলা উকষ্টও শুরু হইসে..আরামে উরাধুরা ঘুম দিছেন..স্বপ্নে চার ছক্কা মাইরা টেন্ডুলকার ও হয়া যাইতেসেন কিংবা রাজকন্যা হইয়া পঙ্খীরাজ ঘোড়াতেও চেপে গেসেন..কিন্তু হবে কি জানেন?মা নামক না এর উপদ্রব..”উউঠঠ..না আর এক মিনিট ও না..বুড়া বয়সে আর কত জ্বালাবি..কয়লা কইরা ফেলছস এক্কেবারে”(জন্মের পর থেকে শুনতেসি উনা বুড়ি হয়া গেছেন কিন্তু এখনও প্রমাণ পাইলাম না..না উনি এখনো কয়লা হইতেছেন, ছাই এখনো হন নাই..)
যৌবনে মাত্র পদার্পন করেছেন..এখন মোবাইল লাগবে,নেট এর টাকা লাগবে,কিংবা নতুন একটা জামা পছন্দ হল..এইসব কথা তো আর বাপজানকে যেয়ে বলা যায় না তা তিনি যত স্যাকারিনের মত মিষ্টিই হন না কেন(আমার মত অধিকাংশই পারেন না)..তো যথারীতি গেলেন লেডী হিটলারের নিকট..উত্তরে কি আসবে তাতো জানেনই.. “আমি কামাই করি? তোর বাপেরে যায়া বল”..উনি হাউজ ওয়াইফ ই হোন অথবা চাকরিজীবি..উত্তর তাদের সকলের এক..উনারা কোন ইনকামই করেননা! কিন্তু দুইদিন পর আবদার করা জিনিসটি আপনি ঠিকই পেয়ে যান তখন লেডি হিটলার তথা আম্মাজানকে জিগ্গাসা করতে মন চায় যে আপনার টাকা নাই তো জিনিসখানা কি আলাদীনের জ্বিন দিয়া গেছে?
তবে আপনি যে বয়সেরই হোন না কেন একখানা জিনিস নিয়া উনার না শুনবেনই না..আপনি যত সাস্থ্যবানই হোন না কেন,’খাব না’ বা ‘ক্ষুদা নাই’ এইটা শুনতে উনারা নারাজ..এইটা শুনলে ডাক দিয়া খাওয়াইতে না পারলে উনারা হাজির হয়ে যান খাবারের প্লেট নিয়া.. তখন পেটখানা ময়দার বস্তা মনে করে খাবার ঢুকাইতেই থাকেন.. সাথে একগাদা বকা ফ্রি!!
এই নাবাচক শব্দের মাঝে সবচেয়ে বেশী ব্যবহার মনে হয় একটা জিনিসের বিরুদ্ধেই করেন মায়েরা..আর তা হল ইন্টারনেট..তা মোবাইল ই হোক বা ল্যাপটপ/পিসিই হোক..উনাদের বক্তব্য হল “উউঠঠ..সারাদিন এই মটকার মত পইড়া পইড়া টিপাটিপি করা লাগবে না!
বয়স হইতেই আপনার বিবাহ করতে মন চাইবে..কিন্তু কোনমতেই মা সেইটা বুঝবেন না..অতঃপর মর্জি হইলে আপনি কোনভাবেই আর না করতে পারবেন না..কিন্তু পাত্র পাত্রী দেখা শুরু হইতেই উনি হাজির হইবেন একগাদা না নিয়া..দুনিয়াতে কোন মনুষ্যই উনার সন্তানের যোগ্য মনে করবেন না..
তো বিবাহ করেছেন..বাচ্চাও হইছে..মনে করছেন সিনিয়র সিটিজেন হয়া গেছেন?..কিন্তু না আপনি তো ছোটই..উনার নাতি নাতনিদের কিছু বলছেন উনার সামনে তো না কত প্রকার ও কি কি তা বুঝায়ে দিবে..
আসলে আজ আমরা যে যেই অবস্থায়ই আছি না কেন তার সমস্ত ভাল দিকগুলোর দাবিদার আমাদের ‘মা’..আমাদের চালিকাশক্তি..আমাদের সিপিইউ..এই ভালবাসার পরম মমতাময়ী মানুষটির জন্য থাকুক পৃথিবীর সকল ভালোবাসা....