যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছিলো, ভারত জ্বালানির জন্য ইরানের ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে আনুক। আর এর বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশের গ্যাস সম্পদের কথা ভেবেছিলো তারা।
স¤প্রতি উইকিলিকসের ফাঁস করা ২০০৫ সালের এক তারবার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থানের কথা প্রকাশিত হলো।
নয়া দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত ডেভিড সি মুলফোর্ড তার দেশের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিজা রাইসকে এ তারবার্তা পাঠিয়েছিলেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী নটবর সিংয়ের ওয়াশিংটন সফরের আগে সম্ভাব্য আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে ওই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর রাইসকে একটি ধারণা দিয়েছিলেন মুলফোর্ড।
তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়, জ্বালানির জন্য ওপর নির্ভরতার সুযোগে ভারতের ওপর ইরান প্রভাব বাড়াতে পারে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিপক্ষে যায়।
ওই সময়ে ভারতে গ্যাস রপ্তানি নিয়ে বাংলাদেশে আলোচনাও উঠেছিলো, যার প্রতিবাদ করে বিভিন্ন দল ও সংগঠন, বিশেষ করে বামপন্থীদের গড়া নাগরিক সংগঠন তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।
এর আগে ২০০২ সালে ভারতে গ্যাস রপ্তানির জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে জোর সুপারিশ চলে। খনিজ অনুসন্ধানকারী যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ইউনকল তখন আশা প্রকাশ করেছিলো, বাংলাদেশ সরকার ভারতে গ্যাস রপ্তানির সিদ্ধান্তই নেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার অর্থায়নে পরিচালিত এক সমীক্ষায়ও পাইপলাইনে ভারতে গ্যাস রপ্তানির পক্ষে মত দেওয়া হয়।
২০০১ সালে সাধারণ নির্বাচনে পরাজয়ের পর তখনকার বিরোধীদলীয় নেতা (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী) শেখ হাসিনাও বলেছিলেন, দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ অন্যের হাতে তুলে দিতে রাজি না হওয়ায় আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে হারতে হয়েছে।
মুলফোর্ড তারবার্তায় কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় ভারতের সঙ্গে ইরানের জ্বালানি গাটছাড়া ভাঙতে তার দেশের উদ্যোগ প্রত্যাশা করেছিলেন।