প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে যাওয়ার আগে গতবছরের ১০ জানুয়ারি মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করেননি বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গওহর রিজভী।
উইকিলিকসের ফাঁস করে দেওয়া মার্কিন দূতাবাসের তার বার্তা থেকে জানা যায়, ওই দিন রিজভী মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করে প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে কথা বলেন।
শুক্রবার রাতে গওহর রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমি নিশ্চয়তা দিতে পারি ওই দিন আমি মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করিনি।"
"প্রধানমন্ত্রীর সফর শেষে আমি নয়া দিল্লি থেকে ঢাকা ফিরিনি বরং সেখান থেকে সরাসরি ওয়াশিংটনে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে মার্কিন প্রশাসনকে প্রধানমন্ত্রীর সফরের ফলাফল অবহিত করেছি", বলেন তিনি।
"আমি সেখানে হোয়াইট হাউস, পেন্টাগন, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল, কংগ্রেস, ইউএসএইড ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করি।"
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসাবে যোগ দেওয়ার আগে প্রায় ৩০ বছর গওহর রিজভী অক্সফোর্ড ও হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরের ব্যবস্থা করেছিলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং এক্ষেত্রে পররাষ্ট্রমন্ত্রীই নেতৃত্ব দিয়েছেন।
উইকিলিকসে প্রকাশিত বার্তায় বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সফরের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে চার দফা বৈঠক শেষে ৮ জানুয়রি নয়া দিল্লি থেকে ঢাকা ফেরেন রিজভী। এরপর ১০ জানুয়ারি সকালে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করেন।
এ সময় তিনি উপদেষ্টা মরিয়ার্টিকে জানান, ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের 'রূপান্তর' ঘটানোর লক্ষে সমঝোতার 'মঞ্চ' প্রস্তুত করা হয়েছে। বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের অল্প কয়েকজন ছাড়া সবার কাছেই গোপন রাখা হয়েছে। এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেও (দিপু মনি) এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় মাত্র এক সপ্তাহ আগে।
বার্তা থেকে জানা যায়, রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ওই বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমলাতন্ত্রের বিষয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ প্রকাশ করেন রিজভী। আমলাদের সৃজনশীলতা ও দূরদৃষ্টির অভাব রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ ব্যাপারে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে রিজভী বলেন, "এ তথ্য ফালতু। এই তথ্য দিয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।"
দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যৌথ ঘোষণা থেকেই বিষয়টি পরিষ্কার, যোগ করেন তিনি।
উইকিলিকসে রিজভীকে উদ্ধৃত করে মরিয়ার্টির বার্তায় বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী আজমির জিয়ারত শেষে ১৩ জানুয়ারি ঢাকায় না ফিরে কলকাতায় যাত্রাবিরতি করার সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি 'ভুল' করতে যাচ্ছিলেন। তবে যাত্রাবিরতির সেই পরিকল্পনা 'স্যাবোটাজ' করে দিয়েছেন রিজভী।
এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরের আয়োজন করেছিলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আমি নই।