সি এন জি তে চেপে বসছি একটু আগে । এই
যন্ত্রটি তীব্র গতিতে ছুটে চলছে গন্তব্য
অভিমুখে । রাস্তা প্রায় জানশূন্য । সাধারণত এই
রাস্তাটি এতো শূন্য থাকে না । একজন পথিক কান
ভারি করলো যে, রাস্তায় এক্সিডেন হইছে । তাই
রাস্তা এতো জনমানব শূন্য ।
প্রভাত বেলায় আম্মুর সাথে ফোন আলাপ হলো ।
তিনি বললেন, "একটু বাসা থেকে বেড়িয়ে যা ।
পরীক্ষা শুরু হলে তো আর আসতে পারবি না ।"
আমার সম্মুখে পরীক্ষার পড়া গিজ গিজ করছে,
তাই একটু অস্বস্থি বোধ করলাম । কিন্তু আম্মুর
আদেশ, অনুরোধ বলে কথা । তাই দ্বিমত
না করে যাত্রা করলাম বাসার উদ্দেশ্যে ।
স্টেশনে এসে অনেক্ষণ অপেক্ষা করলাম কিন্তু
দূরপাল্লার কোন গাড়ি খুঁজে পেলাম না । পথিকের
কথা অনুযায় বুঝতে পারলাম যে, এক
সাথে যেতে পারবো না । ভেঙ্গে ভেঙ্গে যেতে হবে ।
তাই ছোট ভাইকে নিয়ে এই সি এন
জি তে চেপে বসলাম ।
এক্সিডেন্ট হওয়ার একটু আগের
স্থানে নেমে পড়লাম । সারা রাস্তা জ্যাম ।
স্বাভাবিক ভাবে এই জ্যাম পড়ে না । বুঝলাম,
এলাকার মানুষ অবরোধ পাকাইছে । হাঁটা শুরু
করলাম, বিপদজনক স্থানটি পার করতে ।
গাড়ি গুলোর ফাকে ফাকে হাঁটছি । একটু
সামনে চোখে পড়লো বিপদ হওয়ার স্থানটি ।
তাজা রক্ত এখনো পড়ে আছে কালো রাস্তার
পাশের মাটিতে ।অনেক কৌৎহল জাগলো মনের
কোণে । এক পথিক থেকে জানতে পারলাম,
এক্সিডেন্ট হয়ে মৃত্যুর স্বাধ গ্রহণ
করা লোকটি ছিল পথিক । ছোট সড়ক থেকে প্রধান
সড়কে উঠার সময় এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলো ।
আহ! কত বীভৎস । ছোট একটি পিকআপের
মাধ্যমে ঝরে গেল একটি আদম প্রাণ । এখন
কি হবে তার পরিবারের, কিভাবে তার পরিবার
মেনে নেবে এই অস্বাভাবিক মৃত্যু! আহ
কি আহাজারি ! কি করুণ । আল্লাহ
আপনি লোকটিকে জান্নাত দান করুণ । (আমিন )।
আর দাঁড়াতে পারবো না । তাড়াতাড়ি বাসায়
পৌঁছতে হবে । আমি অনুভব করলাম, আমার হাঁটু
পা কাঁপছে । গিয়ে বাসে বসে পড়লাম ।
আমি এখনো কাঁপছি এই দৃশ্য স্মৃতিপটে মনে করে ।
আর চিন্তা করছি । অনেক চিন্তা আমার
মনে প্রতিধ্বনি হতে লাগলো । কি বৈচিত্র্যময় এই
পৃথিবী! আল্লাহর কি লীলা খেলা! কার মৃত্যু কখন,
কোথায়, কিভাবে হয় কেউ জানে না ।