somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দৃশ্যপট

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সামনের গ্লাসটির দিকে এক
পলকে তাকিয়ে রয়েছি ।সিএনজির গ্লাসে বৃষ্টির
পানি মৃদু আওয়াজ তুলে পড়ছে অনবরত । গ্লাসের
উপর ফোটা ফোটা পানিবিন্দু
ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এলোমেলো ভাবে ।
মাঝে মাঝে দু'এক ফোটা গড়িয়ে পড়েছে নিম্নের
দিকে । এক একটি ফোটা নিচের দিকে গড়িয়ে পড়ার
সময় আরো কয়েক ফোটাকে সঙ্গী বানিয়ে নেয় ।
এভাবে সে এক ফোটাতে পরিণত হয়ে ঝরে পড়ে ।
গ্লাসটির ভিতর দিয়ে সামনের অংশ
স্বচ্ছভাবে দেখা যাচ্ছে না । একটু মুছে দিলে হয়ত
অস্বচ্ছতা দূর হয়ে সামনের রাস্তার
অংশটি প্রকাশ পেত, রাস্তা দেখা যেত আনায়েসে ।
গ্লাসের উপরে লাঠির মতো কালো একটি দন্ড
পড়ে আছে স্থির হয়ে । কিছু কিছু
ফোটা গড়িয়ে তার গায়ে পড়ছে, তারপর তার
গা বেড়িয়ে নিচের অংশ দিয়ে ঝরে যাচ্ছে অন্য
ফোটা গুলোর মতো ।

যাত্রীর সংখ্যা কম হওয়ায় ড্রাইবার
সিএনজি ছাড়ছেন না ।আমি বসে বসে বৃষ্টির
পানি পড়ার দৃশ্য উপভোগ করছি ।শত শত,
এলোমেলো ভাবনা মাথায় ভর করছে ।
আজাইরা বসে থাকলে প্রায় মানুষকেই এই রকম
চিন্তা আক্রমণ করে ।আমার বেলায়ও ঠিক
তেমনি হল ।
সিএনজির পাশের পর্দার ফাক
দিয়ে বাহিরে দৃষ্টি ফেললাম । সবুজ গাছ
পালা গুলো দাঁড়িয়ে আছে স্থির মূর্তির মতো ।
বৃষ্টির পানির আভায় গাছ গুলোর সবুজের
লাবণ্যতা, সজিবতা মনে হয় আরো বহু
গুণে বেড়ে গেছে ।
রাস্তায় দূরের দিকে তাকালাম, বৃষ্টির
ফোটা কালো রাস্তার উপর পড়ছে অনবরত,
সৃষ্টি করছে অস্বচ্ছল, ঘোলা, সাদা স্তর,
দেখা যাচ্ছে শুধু বৃষ্টির ফোটার ছিটকানি ।
দেখতে ভালোই লাগছে ।
কানের মধ্যে রিনিঝিনি মৃদু শব্দ লাগছে ।
সিএনজির প্লাসটিকের ছাদের উপর বৃষ্টি পড়ার
শব্দ, বাহিরের বৃষ্টির শব্দ মিলে সৃষ্টি করছে এক
অন্য রকম রিনি রিনি আওয়াজ । যার মধুরতা বড়ই
গভীর ।

সিএনজি গর্জে উঠলো,
হালকা ঝাকুনি দিয়ে চলা শুরু করলো । দোকানপাট
পেরিয়ে দু'পাশে সবুজ গাছ পালা ছড়ানো রাস্তায়
চলে এসেছে । গাছ গুলোর সজিবতা মনে হয় যেন
বহু গুণে বৃদ্ধি পেয়েছে । সারা গ্লাসের উপর
সরুকালো দন্ডটি এপাশ ওপাশ করে আঁচর
দিয়ে যাচ্ছে । বৃষ্টির ফোটা গুলো আর স্থির
থাকতে পারছে না, এক সঙ্গে গড়িয়ে পড়ছে । উপর
থেকে বর্ষিত হয়ে আবার ফোটা তৈরি করার ব্যর্থ
চেষ্টা করছে, কিন্তু দন্ডের
আঘাতে টিকতে পারছে না ।
গ্লাসটির ভিতর দিয়ে এখন স্বচ্ছ ভাবে সামনের
রাস্তার দেখা যাচ্ছে, আগের মতোই ধূসর
সাদা আস্তর তৈরি করছে ।
গাড়ি এগিয়ে যাচ্ছে তার গন্তব্য পানে ।
মাঝে মাঝে বৃষ্টির ছিটকা পর্দার ফাক
দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করছে, হুমড়ি খেয়ে যাত্রীর
গায়ে পড়ছে । বিরক্ত হচ্ছে, তবুও মেনে নিচ্ছে ।

বাজারের পর বাজার পেরিয়ে ছুটে চলছে তিন চাকার
জ্যান্ত গাড়িটি । এক সময় রাস্তার মাথায়
এসে থেমে গেল ।আমার গন্তব্য এসে গেছে ।

বাহিরে এখনো অঝোর ধারায়
বারিরধারা বয়ে যাচ্ছে ।
ভিতরে বসে ভাড়া মিটিয়ে দিলাম । ব্যাগ
কাঁদে নিয়ে বৃষ্টিতেই নেমে পড়লাম ।বৃষ্টির মৃদু
আঘাত গায়ে লাগছে । মাথা গুজাবার জন্য
হাটা দিলাম । একটা চা দোকানের বারান্দায় ঠাঁই
মিললো । আমাদের মতো আরো অনেকেই
মাথা ঢাকলো । জীবনের ঘূর্ণমান সময়ের জীবিকার
টানে তারা এখানে, তবে গন্তব্য হয়ত অনেক দূরে,
কিন্তু বৃষ্টি তাদের থামিয়ে দিল ।
এই সুযোগে কেউ কেউ আলাপ করছে ,
আমি চুপচাপ বসে বসে বৃষ্টি দেখছি, আর মানুষ
গুলোর ছুটাছুটি দেখছি । সম্মুখের
কালো রাস্তা দিয়ে মাঝে মাঝে ছুটে যাচ্ছ বিশাল
বিশাল যাত্রীবাহী বাস ।
মানুষ গুলোর ছুটাছুটিতেই ডুবে গেলাম ।
চা দোকানটা খোলা থাকলে এখান থেকে গরম গরম
লাল চা যেত । বৃষ্টির এই শীতলতায় চা খেলে হয়ত
বেশ ফুরফুরে লাগতো ।
আধা ঘন্ট পেরিয়ে গেল বৃষ্টি থামার নামগন্ধও
নেই, আর এভাবে থাকা যায় না । নেমে পড়লাম
বৃষ্টি ভেজা রাস্তায়, বৃষ্টি লাগছে পুরা দেহে ।
শীতলতা চেয়ে যাচ্ছে সারা দেহে । উঁচু নিচু রাস্তার
মধ্যে পা ফেলতে এক রকম কষ্টই হচ্ছে, তাও
আবার আকাশের বারি বর্ষণ, এক রকম বিরক্তিকর
অবস্থা । ভিতরে ভিতরে মজাও লাগছে । এরকম
বৃষ্টিতে ভিজা কয়জনেরেই বা ভাগ্যে জোটে ।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই হোটেল এর নাম বাংলা রেস্তেরা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭



অনেক দিন পর আমি আজ এই হোটেলে নাস্তা করেছি। খুব তৃপ্তি করে নাস্তা করেছি। এই হোটেল এর নাম বাংলা রেস্তেরা। ঠিকনা: ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডম ভবেরচর, গজারিয়া, মন্সীগঞ্জ। দুইটি তুন্দুল রুটি আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭


জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×