একজন ডাক্তার ই শুধু আরেকজন ডাক্তারের মনের ব্যাথা বুঝতে পারে। তারা ছুটির দিন ও মানবসেবায় বিলিয়ে দেয়। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা আর রাত-দিন সবই তাদের জন্য সমান। সেজন্যেই যখন কোন ইন্টার্নী ডাক্তার রোগীর সজনকে মারধোর করে, তাহারা ইন্টার্নী ডাক্তারের পক্ষে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়।
একজন পুলিশ ই শুধু বুঝতে পারে, তার লাইফ কত কষ্টের। শীত গ্রীষ্ম বর্ষা, রাত-দিন সবই সমান। সবসময় মানবসেবায় ব্যস্ত থাকে। মানবসেবার ব্যস্ততায় তাদের কোন ভাটা নেই। ঈদের দিনেও ডিউটি করে। পরিবার সজন থেকে দূরে। তাদেরও তো মন কাঁদে একটু পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের সময়টা একত্রে কাটাই। জনগনের জন্য তারা এত কিছু করে, এটাকে পুষিয়ে নেয়ার জন্যে তারা মাঝেমধ্যে একটু চা-পানির খরচা দাবি করতেই পারে, সরকারি বেতন দিয়ে কি আর চা-পুরী খাওয়া সম্ভব।
আর মাঝেমধ্যে একটু খেলে আর কি। জঙ্গি- জঙ্গি নাটক। বাংলাদেশের পুলিশ খুব ইস্মার্ট, জঙ্গিরা কখনো তাদের টিকিটাও স্পর্শ করতে পারে না। বনানীতে শুধু দুইজন আনইস্মার্ট পুলিশ মারা গিয়েছিল। সালাউদ্দিন যে কত গ্রেট পুলিশ অফিসার ছিলেন, তাহার সহকর্মী পুলিশ অফিসাররাই জানিয়েছিলেন। সালাউদ্দিন পুলিশের গর্ব। তাহারা হাইকোর্টের বিচারপতিকে চড়-থাপ্পড় মেরেও অবশ্য গর্ববোধ করেছিল। পুলিশই সম্ভবত একমাত্র নিরপরাধ পানি, যাহাদের জন্য খুন রাহাজানি চাঁদাবাজি সবই জায়েজ। তাদের এই অধিকারে কেউ হস্তক্ষেপ করিলে তাহারাও কিন্তু সহযোগ আন্দোলনে ঘরে বসিয়া থাকিবে। হুঁ!!
একজন বেসরকারি কর্পোরেট এর কষ্ট শুধুমাত্র একজন বেসরকারি চাকুরিজীবিই বুঝতে পারে। তাহাদের বাচ্চারা মায়েদের প্রশ্ন করে, মা মা,প্রতিরাতে তোমার বাসায় লোকটা কে আসে?? মায়েদের উত্তর, এটা তোমার বাবা। তাহারা শুধু কলুর বলদের মত খেটেই যায়, কেউ তাদের কষ্ট বুঝে না। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, তাদের হাতে আন্দোলনের অপশনটা রইল না। তবে তাহারাও অনেক কষ্টে থাকে।
স্কুলশিক্ষক ই জানে তার কষ্ট। সেই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কিচির কিচির ক্যাসেট কানের কাছে বাজতেই থাকে। প্রচুর পরিশ্রম করতে হয় তাদের। ৯ টা ৫ টা অফিস করে পোষায় না, তাই টিউশনি করে কিছু বাড়তি উপার্জনের চেষ্টা। পরিবার পরিজনকে সময় না দিয়ে অর্থের পেছনে দৌড়াদোড়ি সব সময় লেগেই থাকে। বাংলাদেশ আসলে খারাপ দেশ, এখানে শিক্ষকদের কোন মূল্যায়নই হয় না। তাই প্রায়ই তারা আন্দলনের ডাক দিয়ে বোঝাতে চায়, তাদের ও দাম আছে। ভিকারুন্নেসা অকারেন্স এর পর হোসনেয়ারা আপারা পরিমল এর পক্ষ নেয়, তাও যদি শিক্ষকদের একটু মর্যাদা ফিরে আসে।
আমাদের দেশপ্রেমিক প্রবাসীরা তো পরিবার পরিজন বিসর্জন দিয়ে, অনেক দুঃখ কষ্ট বুকে পাথর দিয়ে চেপে ধরে রাখে। অনেক পরিশ্রম করে রেমিটেন্স দেয় দেশকে। তাদের কষ্টের শেষ নাই। তারা শুধু অত্যাচারিত, তাদের দুঃখ-কষ্টের সীমানা নাই। ঈদের দিন তারা কাজ করে, অন্যের জুটা খাবার খেয়ে দেশে ফোন দিয়ে তাহারা স্বর্গোক্তি করে। এভাবে কষ্টের ফিরিস্তি দিয়ে শেষ করা যাবে না। বিদেশে কষ্ট আর কষ্ট শুধু, কিন্তু তাদের বেশিরভাগই দেশে থাকতে চায় না। এত অত্যাচার নিয়ে তারা কেন বিদেশে পড়ে থাকে, আই ডোন্ট নো।
সব মিলিয়ে যা বুঝলাম, বাংলাদেশে সুখী মানুষ হচ্ছে, টোকাই, রিক্সাওয়ালা, দিনমজুর, শ্রমিক, চাষী, পথশিশুরা।
ভাগ্যভাল এদের বেশিরভাগই ফেসবুকে নিজেদেরকে তুলে ধরতে পারে না, তাই তারা খুব সুখে আছে।