৯ম বাংলা ব্লগ দিবসে সকল ব্লগার ভাইদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
গত ১৬ই ডিসেম্বর ২০১৭ প্রথমআলো পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। প্রতিবেদনটির শিরোনাম নিম্নরূপ-
"বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উগ্রবাদের প্রভাব প্রকট"
প্রতিবেদনের প্রথমাংশে বলা হয়েছে-
"তরুণদের মধ্যে রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ আছে। তাঁরা মনে করেন, দেশে কোনো নিয়মকানুন, ব্যবস্থা কাজ করে না। কেউ লেখাপড়া শেষ করে সঠিক উপায়ে চেষ্টা করে চাকরি পাবে, সে ভরসা নেই। এমন নানা বিষয় তাঁদের উগ্রবাদের প্রতি আকর্ষণ বাড়াচ্ছে।"
"উপরোক্ত বিষয়গুলো নাকি শিক্ষার্থীদেরকে উগ্রবাদের প্রতি আকর্ষণ বাড়াচ্ছে। ব্যপারটি আমার কাছে খুবই হাস্যকর মনে হয়েছে। শিক্ষার্থীদের এমন মনোভাব প্রকাশ করা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত সেটা আমাদের সবারই জানা আছে। এমন বাস্তব মনোভাব প্রকাশ করার সাথে উগ্রবাদের কি সম্পর্ক আছে সেটা আমার বোধগম্য নয়। প্রতিবেদনের আরেকাংশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক "আমেনা মহসিন" এর ভাষ্য নিম্নরূপ-
"সম্ভাষণ, বিদায়সহ দৈনন্দিন নানা বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কথাবার্তায় আরবি শব্দের ব্যবহার বাড়ছে। নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে হিজাব, নেকাব পরা এবং ছেলেদের মধ্যে ওয়াহাবি মতাদর্শ অনুসরণকারীদের মতো গোড়ালির ওপর প্যান্ট পড়ার প্রবণতা বাড়ছে।"
মানে কি ভাই? আজব তো! মানে এই বিষয়গুলোও উগ্রবাদীকে শো করে? মানুষের বিচার বিশ্লেষণ আজ কোথায়। কোথা থেকে পায় উনারা এগুলো। বাংলাদেশের একজন মানুষ আমার জানামতে বিশ্বের যে কোন ভাষা চর্চা করতে পারবে। সংবিধান অনুযায়ী এর কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। আর উগ্রবাদ কোন ভাষার সাথে সম্পৃক্ত নয়, এই নূন্যতম জ্ঞানতো আমাদের সবারই থাকার কথা। মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ আরবি ভাষায় রচিত, সেই ধর্মগ্রন্থের সঠিক মর্মার্থ উদ্ঘাটন করার জন্য একজন মুসলমান আরবি ভাষা চর্চা করতেই পারে। আর এটাই যুক্তিযুক্ত।
"মুসলিম ধর্মগ্রন্থের ভাষ্য অনুযায়ী প্রত্যেক নারীর জন্য নিজের অঙ্গ - প্রত্যঙ্গ কে কাপড় দ্বারা আবৃত করে রাখা আবশ্যক। যেন মানুষের কাছে তার শরীরের ভাজ প্রদর্শিত না হয়। সে কারনে একজন নারী তাঁর ধর্মের প্রতি যত্নবান হয়ে বোরকা - হিজাব পড়তেই পারে। আর এই ব্যপারে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন নিষেধাজ্ঞা ও নেই। এটা মুসলিম ধর্মের একটি আবশ্যিক বিধান। এই বিধানের সাথে উগ্রবাদিতা কে সম্পৃক্ত করা আমি মুর্খ্যতা বৈ আর কিছুই মনে করিনা।
"এমনিভাবে পায়ের গোড়ালির উপর প্যান্ট পড়ার বিষয়টা ও। এটা শুধু ওহাবী মতাদর্শীদের জন্য নয়। গোটা মুসলিম পুরুষ জাতির জন্য যে কোন কাপড় পায়ের গোড়ালির উপর পড়া আবশ্যক। অনেক চিন্তা - ভাবনা করার পরেও গোড়ালির উপর প্যান্ট পড়া আর উগ্রবাদের সাথে সম্পৃক্ততা খুজে পেলাম না। মাননীয় অধ্যাপক এর মনে হয় উগ্রবাদের সঠিক সংজ্ঞাটা জানা নেই তাই লোক সমাজে উগ্রবাদের ভুলভাল সংজ্ঞা দাড় করাচ্ছেন। তিনি উগ্রবাদের উপর আঙ্গুল তুলছেন নাকি গোটা মুসলিম জাতির উপর আঙ্গুল তোলার অপচেষ্টা করছেন তা সহজেই অনুমেয়। একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হয়ে এইসব মনগড়া, শিশুসুলভ যুক্তি পেশ করার কোন মানেই হয়না। প্রকৃতপক্ষেই যদি উগ্রবাদ চিহ্নিত করতে হয় তাহলে উগ্রবাদের সঠিক সংজ্ঞা অনুসারে উগ্রবাদ চিহ্নিত করুন। অনর্থক ধর্মীয় বিষয়গুলোকে উগ্রবাদের সাথে সম্পৃক্ত করবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১৩