বাংলা ব্লগে বিচরণ করছি বেশ কিছুদিন হয়ে গেল। প্রথমে বেশ মুগ্ধ হয়েছিলাম। আনন্দিত হয়েছিলাম পোস্টগুলো দেখে, বুঝতে পারছিলাম নিজের অনেক অজানাকে ছুড়ে ফেলা যাবে অন্ধকারে। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্বের উপর তথ্য-উপাত্তগুলো। স্বাধীনতার অনেক পরে আমার জন্ম। তাই মুক্তিযুদ্বের প্রকৃত ইতিহাস গুলো জানতে পারা আমার ব্লগীয় জীবনের অনেক বড় একটা পাওয়া। কিছু ব্লগারের একটা একেকটা পোস্টের পেছনের পরিশ্রম আর পড়াশোনা দেখলে মনে শ্রদ্বা জাগে।
কিন্তু ইদানিং লেখাগুলো পড়তে পড়তে কেমন যেন ক্লান্তি চলে আসে মনে। কেমন যেন একটা একই বৃত্তে ঘুরপাক। ইতিহাস অথবা রাজনৈতিক (আ:লীগ- বিএনপি- জাশি মারামারি)। ইতিহাস জানাটা অবশ্যি জরুরী। কিন্তু রাজনৈতিক ক্যাচাল গুলো অসহ্য হয়ে উঠছে। আর একটা ব্যাপার হলো রাজনৈতিক ইতিহাসের আলোচনা গুলো মূলত ১৯৮১-৮২ এসে থেমে যায়। সম্ভবত এর একটা মূল কারন হলো, আমাদের দেশটা আসলে ঐ সময়ের পর থেকে খুবই ধিরগতিতে এগিয়েছে। এর পরবর্তী শাসকরা বর্তমান কেন যেন, অতীতের জাবর কাটতেই ব্যস্ত। তাদের নিজেদের মোলিক অবদান কেন যেন খুবই কম।
শেখ মুজিব - জিয়া এই দুজনের একটা বিশেষ দিক ছিলো এরা দেশের মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে পেরেছিলেন। যে স্বপ্নে বিশ্বাস করে মানুষ এগিয়ে যেতে পেরেছিলো।
ব্লগে নতুন স্বপ্ন কিংবা নতুন ধারনার কথা বলছে এমন পোস্ট খুব কম পাই। কোথাও একজন কৃষক তার ফসল উৎপাদনে সাফল্য পেলো, কিংবা একজন ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী নতুন ধারনার প্রয়োগ ঘটিয়ে সাফল্য পেলো কিংবা বাংলাদেশী কোন শিক্ষার্থী কোথাও ভাল করল, এমন খবরের পোস্ট আসে না কেন? এমন তো নয় যে, এসব ঘটেনা।
আজকের তরূন প্রজন্মের কাছে কোন আইডল নেই, যে নেতা তাদের স্বপ্ন দেখাতে পারে। তথাকথিত ক্লোস আপ ওয়ান আইডল নয়, সত্যিকারের আইডল, যাকে দেখে বলতে পারি আমি ও ওর মত হতে চাই।
তাই তো একজন জাফর ইকবাল স্যার যখন তার সীমিত সাধ্যের মধ্যে লেখনী আর গণিত অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে স্বপ্ন দেখান , তখন সেটা আমারা লুফে নেই। কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক নেতারা কি এটা থেকে শিক্ষা নিতে পারেনা? আপনাদের হাতে তো এর চেয়ে বেশী ক্ষমতা। একজন জাফর ইকবাল লিখলে সেটা বড়জোর হাজার দশেক লোক পড়ে, আর আপনাদের জনসভায় মানুষের ঢল নামে। আপনারা যেটা বলেন সেটা পরেরদিনের সংবাদপত্রের হেডলাইন হয়। দয়া করে এই ক্ষমতাকে ব্যাবহার করুন। নিজের ছেলেপিলেদের জন্য সম্পদের পাহাড় না গড়ে, দেশের জন্য ভাল কিছু করুন। তাহলে আপনার ছেলে-মেয়েরা যখন রাস্তা দিয়ে হাটবে তখন যে সম্মানটা পাবে, সেটা আপনি তাদের জন্য হাজার সম্পদের বিনিময়েও দিতে পারবেন না।
অনেক আবোল তাবোল বকলাম। আমার প্রিয় একটা লাইন দিয়ে লেখাটা শেষ করি, যেটা প্রায় আমার ফেসবুকে স্ট্যাটাস হিসেবে থাক
জীবন আসলে তাদের জন্য যারা স্বপ্ন দেখে এবং সেই স্বপ্নের জন্য জীবন বাজি রাখতেও দ্বিধা করে না