somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বানরের হাতে খন্তা...

১১ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১০:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেখতে দেখতে কেমন করে যেন পিসি, ট্যাবলেট, আইপড-প্যাড, মোবাইল একেবারে জীবন যাপনের আবশ্যক উপকরণে পরিণত হয়েছে।প্রথম যখন মোবাইল এসেছে তখন তো এলাহি অবস্থা। অনেকটা ডিশ অ্যান্টেনার মতো, যার বাসার ছাদে ডিশ লাগানো তারা কত বড়লোক তার হিসাব কষতাম আমরা। যাদের তা নেই তাদের অ্যান্টেনার সাথে ঢাকনা লাগানো ডিডি বাঙলা আর জিটিভি দেখার জন্য। সেসব দিন গেল। ভিসিপি ভিসি আর এর যুগ গেল। এনালগ টিএন্ডটি ডিজিটাল হলো। কলার আইডি হলো। মোবাইল সহজলভ্য হলো। সাথে সাথে এগুলো সংশ্লিষ্ট অপরাধ পেতে থাকলো অন্য মাত্রা।
ধরেন একজন রিকশাশ্রমিক তার কাছে একটা মোবাইল আছে, এখন একই পেশায় নিয়োজিত তার অন্যান্য কলিগদের মোবাইল নেই। যন্ত্রটা যখন আছে কথা বলার সাধ ও আছে। সে কি করবে? সে র‌্যান্ডমলি ফোন ডায়াল করবে এবং রং নাম্বারে উপযুক্ত অভ্যর্থনা পেলে "বন্ধুত্ব" পাতাবে।
আবার আমাদের আলাল দুলালীরা যাদেরকে আমাদের মতো বাবা মা রা পলকে হারায় তাদের হাতে মোবাইল গেলে তারা মোবাইলে বন্ধু খুঁজবে, কথা আর শেষ হবে না। নানা অফারে এরা থাকবে অগ্রগণ্য ভোক্তা।
এদের মোবাইল আবার লেটেস্ট হতে হবে ক্যামেরা থাকতে হবে। যদি বাই চান্স প্রেম হয়ে যায় তাহলে মোবাইলে মুহুর্মুহূ ছবি উঠবে, ব্রেক আপ হলে এগুলো আবার পাবলিক প্রপার্টি হয়ে যাবে। এদের বয়স ক্লাস সিক্স থেকে শুরু হবে এবং বিস্মিত হবার কিছু নেই যখন আড্ডায় শুনবেন অমুক ইংলিশ মিডিয়ামের ফাইভ পেরোনো বাচ্চারা বাবা মা হবার পথে হাঁটাহাঁটি শুরু করেছে।
মানুষ রসময় গুপ্তের চটি পড়ে বালেগ হয়েছে, তারপর নীলক্ষেতেরে ফুটপাথ থেকে ইংরেজী ছবিওলা বই কিনেছে। এরপর ভিসিআর ভিসিপি তে ভিডিও ক্যাসেট দিয়ে নীল ছবি দেখেছে। তারপর একসময় ফ্লপিতে স্টিল ছবি নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করেছে। প্রি ডায়াল আপ লাইন যখন পেয়েছে তখন হার্ড ডিস্কে পর্নো কপি করেছে। এখন মোবাইলে, ব্লু টুথের মাধ্যমে এক বন্ধুর থেকে আরেক বন্ধুর কাছে প্রভার ভিডিও ট্রান্সফার হয়ে যাচ্ছে।
আলফ্রেড নোবেল যেমন ডায়নামাইট আবিষ্কারের পর এর ভিন্ন ব্যবহার দেখতে পেয়েছেন তেমনি আমাদের অতীব দরকারী অনুসঙ্গগুলো আমাদের বিরুদ্ধেই মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আপনার সাথে আমার কোন কারণে বনছে না - আমি ভুয়া ইমেইল আইডি তৈরী করে যাচ্ছেতাই ইমেইল পাঠালাম। আপনি আইপি দিয়ে আমাকে ট্রেস করতে পারবেন না যদি না পুলিশ কেস হয়। আপনাকে আমার অপছন্দ আমি আপনার ফেসবুকের কনটেন্ট অথবা লিংকড ইনের কনটেন্ট কপি করে আপনার নামেই একটা একাউন্ট খুলে আপনার কাছের মানুষদের আপত্তিকর মেসেজ পাঠাতে থাকব কিংবা আপনাকে এড রিকোয়েস্ট ও পাঠাতে পারি। কোনভাবে বুঝলেন কাজটা আমি করেছি, আপনি আমাকে বললেন কেন আমি একাজ করেছি আমি পৃথিবীর সবকিছুর কসম কেটে বলব আমি কাজটা করিনি।
আপনার অবসরে আপনি এখন ই-বুক পড়তে পারেন তা করবেন না আপনি প্রথম সার্চ মারবেন সেক্স ভিডিওজ। এছাড়া জীবনে আর কিছু নেই।
আমি শ্রেনীহীন সমাজে বিশ্বাস করি না। ফকিরের বাচ্চা (আর্থিক নয় শুধু মানসিকতার দিক থেকেও)দের হাতে প্রযুক্তি পড়লে কি অবস্থা হয় তা আমরা প্রতিদিন দেখতে পা্চ্ছি। আমার খুব দুঃখবোধ হয়।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমরা আপত্তিকর ভিডিও দেখতে পারছি গাটেঁর টাকা খরচ করে এটাকা তো কত ভালো কাজে ব্যয় হতে পারতো!
একটা ভালো লিখা পড়া যেত, ঐ সময়টুকুতে তা না।
আমাদের আরেক জিনিস এখন টিভি-উফ টিভি...ঘরেই ঢুকেই আমাদের প্রথম কাজ টিভি ছেড়ে দেয়া, ঘুমিয়ে গেলেও টিভি চলছেই...হাজারো সিরিয়াল নাটক মালাইকার আনারকলি ডিসকো চলি আমরা দেখেই যাচ্ছি...চোখের চিউইং গাম চলছে...
প্রযুক্তির কঠিনতম ব্যবহার চলছে নারীর বিরুদ্ধে...সম্প্রতি না কি আইন হয়েছে পর্নো দেখা সঙরক্ষণ এগুলোর জন্য ১০বছরের সবোর্চ্চ শাস্তি...পর্নো বানানোর শাস্তিটা কার্যকর হলে ব্যালেন্স হতো ভালোভাবে...
কেন সবার মোবাইল দরকার, কেন সবাইকে নেট কানেকশন মোবাইল ইন্টারনেট দিতে হবে আমি ঠিক বুঝি না। আমি যেমন বুঝি না সবার উচ্চশিক্ষার কি প্রয়োজন। কেন সবাইকে মাস্টার্স পাস করতে হবে, কেন এমবিএ করতে হবে... কেন সবার ডাক্তার হতে হবে...এগুলো আমি বুঝি না।
এরশাদ আমলে যখন বিনামূল্যে কনডম দেয়া শুরু হলো এগুলো বস্তির বাচ্চারা বেলুন হিসেবে খেলা শুরু করলো...সহজ লভ্য ডিগ্রী, সহজলভ্য প্রযুক্তি আমাকে বিনামূল্যে বিতরণকৃত কনডমের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে বারবার।এইসব বানরের হাতে কেন সুবিধা তুলে দেয়া!!!!
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

আমরা সবাই জানি, ইরানের সাথে ইজরায়েলের সম্পর্ক সাপে নেউলে বললেও কম বলা হবে। ইরান ইজরায়েলকে দুচোখে দেখতে পারেনা, এবং ওর ক্ষমতা থাকলে সে আজই এর অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়।
ইজরায়েল ভাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

নগ্ন রাজা কর্তৃক LGBTQ নামক লজ্জা নিবারনকারী গাছের পাতা আবিষ্কার

লিখেছেন মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪০

LGBTQ কমিউনিটি নিয়ে বা এর নরমালাইজেশনের বিরুদ্ধে শোরগোল যারা তুলছেন, তারা যে হিপোক্রেট নন, তার কি নিশ্চয়তা? কয়েক দশক ধরে গোটা সমাজটাই তো অধঃপতনে। পরিস্থিতি এখন এরকম যে "সর্বাঙ্গে ব্যথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×