somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বপ্নের সমাধি (একটি অখাদ্য,মাইনাস দিয়া ভইরা যাইব :(:(:()

২৩ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ১০:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আন্দাজে একটা নাম্বার ডায়াল করে বনলতা।
:হ্যালো,কে বলছেন?
:আমি বনলতা
:ঠিক চিনলাম না আপনাকে
:আমাকে চিনবেন না,আমি কি একটু কথা বলতে পারি আপনার সাথে?আমার মনটা খুব খারাপ।
ওপাশের কন্ঠটাতে হাসির শব্দ
:আমি তো এখন ব্যাস্ত,পরে একসময় না হয় বলবো।
সাথে সাথে লাইনটা কেটে দেয় বনলতা।
তারপর সন্ধ্যায় কি ভেবে যেন ফোন কোরলো ছেলেটা।নাম ধ্রুব।ইঞ্জীনিয়ার।অনেক কথা হল..........
৩ দিন আগের ঘটে যাওয়া ঘটনার স্নৃতিতে বিভোর হয়ে ছিল বনলতা। ধ্রুবকে কি ওর ভাল লাগতে শুরু কোরলো?তা কিভাবে হয়! ওকে তো দেখইনি বনা।তাহলে কি এটা।কি যেন এক মাদকতা।কথা না বললে ভালো লাগেনা ,কোন কাজে মন বসেনা।না পড়তে না গান শুনতে,না কারো সাথে কথা বলতে।কি বলা যায় একে?মোহ?নেশা?নাকি মনো বিবর্তন?ধুর,কাজের সময় কোন উপমাই মনে আসেনা বনার।আজ সকাল থকেই ধ্রুবর উপর খুব রেগে আছে বনা।সারাদিন ফোন করেনি একবারও।হয়ত ব্যাস্ত।আর তার এত ঠেকাও বা কিসের?! কিন্তু মন টাকে কিছুতেই বোঝাতে পারেনা বনা।যিনি প্রথম ভালবাসার সংবিধান লিখেছিলেন তিনি বোধ হয় লিখে দিয়েছিলেন "মান-অভিমান বাধ্যতামূলক"!
বনা কিছুতেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা।কি করবে সে? বলবে ধ্রুবকে! যদি ফিরিয়ে দেয়।যদি বনাকে খুব সস্তা মেয়ে ভাবে!বনা ভাবতে থাকে যদি ধ্রুব তাকে গ্রহন করে সে ভালবাসায় ভরিয়ে দেবে ধ্রুবকে।প্রতি রাতে গান শোনাবে-বধূঁ কোন আলো লাগলো চোখে..........অথবা, মোর ঘুমো ঘোরে এলে মনোহর........অথবা,আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়......... খুব ক্লান্ত হয়ে ধ্রুব যখন ঘরে ফিরবে গরম চায়ের তাপে পুড়িয়ে দেবে ওর ক্লান্তি,তারপর ওর চুলের মাঝে আঙ্গুল ঢুকিয়ে স্বপ্ন বুনবে...কালকের স্বপ্ন,আজকের স্বপ্ন,পরশু বা তার পর দিনকার স্বপ্ন!অফিসের কাজ যদি ঘরে আনে গাল ফুলিয়ে বসে থাকবে বনা।কথা বলবে না ওর সাথে। ধ্রুব যখন বনাকে মানাবে তখন কিছুতেই মানবেনা সে, ধ্রুবর নাযেহাল অবস্থা দেখে মনে মনে ভীষন হাসবে।রান্না করতে গিয়ে যখন হাত পুড়িয়ে ফেলবে সে ,ধ্রুব ছুটে আসবে,কি করবে না করবে অস্থির হয়ে যাবে তখন গভীর মমতায় বনার চোখে কি দু ফোঁটা জল চিকচিক করবে?প্রতি রাতে ঘুমাতে গিয়ে বিছানায় দুটো বালিশের একটির জায়গা হবে মেঝেতে।এক বালিশে দুটি মাথা.................নাহ,বনা ঘুমাবে ধ্রুবর বুকে মাথা রেখে ! ধ্রুবর প্রতিটি নিঃশ্বাস পড়বে বনার মাথায়,সারারাত।দুটি শরীরের উণ্ষতা যখন জাগিয়ে দিবে প্রতিটি রক্তকনাকে তখন তারা ভুলে যাবে পৃথিবী,ভুলে যাবে অন্যসব।ঝগড়া কি করবে দুজন?হ্যা করবে,নাহ করবে না,আরে ধ্যাত করবে মাঝে মাঝে। ধ্রুব যদি রেগে গিয়ে কিছু বেশি বলে বনা রাগ দেখিয়ে বাড়ি ছাড়বে।আচ্ছা ধ্রুব কি আটকাবে ওকে? অবশ্যই,ও কি থাকতে পারবে নাকি বনাকে ছাড়া?! ছুটির দিনে বেড়াতে যাবে দুইজন।ইস,ধ্রুবর যদি একটা বাইক থাকে কি যে মজা হবে!!ধ্রুবর বয়স টা বোধ হয় একটু বেশি।হোক,তাতে কি।বুড়ো সং বলে ক্ষেপানো যাবে!
:বনা,এই বনা?কি ভাবছিস?
পাশের বাসার অবন্তি এসে ডাকলো বনাকে।বনা সম্বিত ফিরে পেল।অবন্তি খুব করে ধরলো কি হয়েছে বলতে হবে। শেষে বলেই ফেলল।কাউকে তো বলা দরকার।অবন্তি খুব অবাক হল।
:তুই কি জানিস তুই কি বলছিস?চিনিস না জানিস না।এত কিছু ভেবে বসে আছিস মুখপূড়ি?
:আমি এখন কি কোরবো অন্তি?
:অন্তত একবার দেখ তাকে।দেখতে যদি ওরাংওটাং এর মত হয়?
:আমিই বা কি এমন অপ্সরা? তাছাড়া চেহারা যা হয় হোক।বরং লাল শাকেই পোকা বেশি থাকে।
:কি জন্য এত পাগল হয়েছিস শুনি।
:কিভাবে বোঝাবো তোকে?কি যে মায়া ওর কথায়।কি যে অসাধারন আত্মসমর্পন "আমি নিঃস্ব,ফিরিয়ে দিওনা"।নিজেকে ও যত ছোট করে বর্ণনা করে আমি ততই পাগল হয়ে যাই।এই উদারতা কে পায়ে মাড়ায় এমন দূর্মতি কোন পাষানীর আছে রে বল?
:তাহলে বলে ফেল্।
:বলবো? তুই বলছিস?
:হ্যা,বল্।
কেটে যায় আরো দুটি সপ্তাহ......চলে নিয়মিত কথার ফুলঝুরি।হঠাৎ দেখা করতে চায় বনলতা।ধ্রুবও রাজি হয়।ওরা দেখা করে একটা আধুনিক রেস্তোরায়।বনা দেখে ধ্রুবো ক। খুব সুদর্শন না হলেও সুপুরুষ।বনা ওর জীবনের ফেলে আসা এক নষ্ট অতিত বলতে চায় ধ্রুবকে।ধ্রুব ও শুনতে চায়।বনা বলে চলে...............ছায়া ঢাকা গ্রাম,নানুবাড়ি,গরমের ছুটি,চাঁদনি রাতে পিকনিক, তারপর মামাতো বড় ভাই ওকে তার ঘরে ডাকলো, তারপর জোর করে............. তারপর হাসপাতাল,কোর্ট-কাছারি...............উহ্ কি ভীষন!!
সব শুনে ধ্রুবর মুখের হাসি মিলিয়ে যায়।বনা ওর চোখে চেয়েই বুঝে ফেলে সব।ধ্রুবকে আর কষ্ট করে বলতে হয়না "আমাকে ক্ষমা করো বনা"।আস্তে করে নিশ্চুপ বনা নেমে এল রাস্তায়।ওর চোখে ভাসছে গরম চা,স্বপ্ন,বাইক,হাত পুড়িয়ে রান্না,দুটো বালিশ,জড়িয়ে শুয়ে থাকা দুটি শরীর.....................গাল বেয়ে নেমে এল এক ফোঁটা ব্যর্থ স্বপ্ন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১০ রাত ১১:১২
৪৩টি মন্তব্য ৪৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×