somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে..............

২৪ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মধ্যবিত্ত পরিবার। যখন বুঝতে শিখেছি তখন থেকে আমার পরিবারটা আমার কাছে যেমন ছিল এখনো তেমনই আছে। মানে মধ্যবিত্তই আছে। একধাপ উপরে অথবা একধাপ নিচে যায়নি।

সবসময়ই কোনরকমে চলে যায়। বিলাসিতা কি জিনিস সেটা কখনো চোখে দেখিনি মানে উপভোগ করতে পারিনি। দশটা চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে চারটা পূরণ হয় আর বাকি ছয়টা ভাবতে ভাবতে হাওয়ার সাথে মিলিয়ে যায় কল্পনার রাজ্যে। পূরণ হওয়ার সময় কই?

স্বপ্ন দেখতে খুব খুব ভালো লাগে কিন্তু স্বপ্নটা পূরণ হবে এটা ভাবতে গেলে ভয় করে। কারণ পূরণ হওয়ার মত স্বপ্ন যে খুব কমই দেখি।

কল্পনা? এটাকে তো নিজের মনের মত করে সাজানো যায়। তাই যখন কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে যাই তখন মনের মাধুরী মিশিয়ে, হাজারো রঙে রাঙিয়ে তুলি কল্পনার রাজ্যের সবকিছুকেই। উফ ভাবতেই তো মনের ভিতরটা আরও রঙিন হয়ে উঠে।

কল্পনা রাজ্যের সবকিছুই হয় বিনা পয়সায়। তাই আভিজাত্যের মোহে হারিয়ে গেলেও টাকা কোথা থেকে আসছে সেই চিন্তা থাকে না।

কিন্তু যখন বাস্তবতায় থাকি বিলাসিতা দূরে থাক ছোট খাট কোন কিছু চাইতেই যেন হাজারটা চিন্তা মাথায় আসে। আব্বু কি দিতে পারবে? এটা ব্যবহার করা কি আমার মত পরিবারের ছেলের জন্য মানানসই হবে?

কিন্তু যখন কোন বন্ধুদের দামী দামী মোবাইল, ল্যাপটপ, ট্যাব ব্যবহার করতে দেখি তখন ক্ষণিকের জন্য সব চিন্তা উবে গিয়ে ঐসব দামী দামী মোবাইল, ল্যাপটপ, ট্যাব ব্যবহার করতে ইচ্ছে করে। খুব ইচ্ছে করে। তখন নিজের উপর খুব রাগ হয়। সত্যি বলতে আব্বুর উপরও তখন খুব রাগ হয় দিতে পারেনা কেন এই জন্য। তবে সেটা ক্ষণিকের জন্য। যখন মনটাকে স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারি তখন কারো উপরেই রাগ হয় না। শুধুমাত্র প্রবল ইচ্ছা জাগে একদিন সব হবে। আমার অনেক টাকা থাকবে। যা খুশি তাই ব্যবহার করতে পারবো।

বাজের নতুন কোন মোবাইল আসলে নেটে গিয়ে মোবাইলের আপডেট সব ফিচার দেখেই সন্তুষ্ট থাকি। দেখতেই ভালো লাগে। সহজে কেনার স্বাদ জাগে না। খুব বেশি ভালো লাগলে ভয়ে ভয়ে আম্মুর কাছে বলি। জানি কিনে দিতে পারবে না তারপরেও বলি যদি কাজ হয়ে যায়।

এতকিছুর মধ্যেও কিছু ব্যপার আছে যেগুলা আমার জীবনে অক্সিজেন হিসেবে কাজে করে।

আব্বু-আম্মুর ভালোবাসা, ভাই-বোনের দুষ্টমি মাখা কিছু মুহূর্ত সবকিছুকেই যেন ছাড়িয়ে যায়।

আব্বু বাসায় আসার সময় কোন কিছু কিনে নিয়ে আসলে সেটা সবাই একসাথে বসে খাওয়া, পিচ্চিটার চোখ ফাকি দিয়ে একটু বেশি খাওয়ার চেষ্টায় ধরা পরে যাওয়া তারপর জরিমানা স্বরুপ নিজের ভাগ থেকে কিছুটা দিয়ে দেওয়া। অসম্ভব ভালো লাগে তখন।

প্রায়ই আম্মুর প্লেট থেকে ভাত খাইয়ে দিতে বলি। আম্মু যখন খাইয়ে দিতে আসে তখন আমি টিভির দিকে তাকিয়ে ছোট করে হা করি আর আম্মু বলে আগে খাওয়া শেষ কর তারপর টিভি দেখ। একটু বড় করে হা কর।

যখন রাগ করে থাকি তখন আব্বু এসে বার বার খাওয়ার কথা বলে আর আমিও ভাব নিয়ে বলি ক্ষুদা নেই খাবো না। একটা পর্যায়ে আমাকে খেতেই হয়। কতটা ভালোবাসা পেলে এমনটা হয় ভাবতেই যেন আনন্দে মনটা ভরে উঠে।

মধ্যবিত্ত পরিবার বলে যে কেবলমাত্র আমার চাওয়া-পাওয়া ঠিকমত পূরণ হয় না ব্যপারটা এমন না। আব্বু-আম্মুরও কোন শখ পূরণ হয় না। ঈদ আসলে আমরা নতুন কাপড় ঠিকই নেই কিন্তু আব্বুকে কখনো একটা পাঞ্জাবী পর্যন্ত কিনতে দেখিনা। পুরনো পাঞ্জাবী গায়ে দিয়েই ঈদের নামাজ পড়তে যান। তারপরেও আমাদেরটা ঠিক রাখেন।

এতকিছুর পরেও আমার মধ্যবিত্ত অবস্থাটাকেই ভালো লাগে। এখানে চাওয়া-পাওয়ার হিসেব না মিললেও ভালোবাসা ঠিকই পাওয়া যায়। আর এই ভালোবাসাটাই আমার কাছে সবচাইতে বড়। এই ভালোবাসাটাই আমার জীবনের চালিকা শক্তি। যে ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কোন কষ্ট করতে হয় না।

আবেগ থেকে ভালোবাসার সৃষ্টি। আর সেই ভালোবাসা থেকে এই পৃথিবীতে মানুষের উত্‍পত্তি। আর এই ভালোবাসার কারণেই মানুষ আজও প্রিয়জনদের
সাথে গভীর এক মায়া ডোরে আবদ্ধ হয়ে আছে।
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×