somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম দেখায় প্রেম......................................................

২৮ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেয়েটা দেখতে খুব সুন্দর। দেখতে অনেকককক ইনোসেন্ট লাগে। হাসলে গালের দুইপাশেই টোল পরে। কি অপূর্ব মায়াবী চেহারা। চোখ সরানো যায় না।

একদিন শুভ্র বন্ধুদের সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছে। ঠিক তখন তাদের পাশ দিয়ে একটা মেয়ে হেটে যাচ্ছে। শুভ্র মেয়েটার দিকে তাকালো। মেয়েটা শুভ্রর দিকে আড় চোখে তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে নিল। মেয়েটার আড় চোখের চাহনী দেখে শুভ্রর ভিতরটা কেমন জানি মোচর দিয়ে উঠলো।

মেয়েটা চলে গেল কিন্তু শুভ্র কোন ভাবেই মেয়েটার কথা ভুলতে পারছে না। আড় চোখের চাহনীটা মনে হলেই শুভ্রর ভিতরটা কেমন জানি করে। মেয়েটাকে ভাবতে ভাবতে শুভ্রর সময় কেটে যাচ্ছে।

গভীর রাত। বাসার সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। শুভ্রর চোখে ঘুম নেই। বিছানায় এপাশ ওপাশ করছে আর মনে মনে কি যেন ভাবছে। মাঝে মাঝে শুয়া থেকে ঊঠে বসে পরছে। বসে বসে কি যেন ভাবতেছে। আবার কি মনে করে যেন অদ্ভুত একটা হাসি দিয়ে শুয়ে পরছে। এভাবেই মেয়েটিকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে শুভ্রর একটি নির্ঘুম রাত কেটে গেল।

শুভ্র মেয়েটার প্রেমে পরে গেছে। হ্যাঁ প্রথম দেখায় সে মেয়েটির প্রেমে পরে গেছে। প্রতিদিন শুভ্র একই সময়ে একই জায়গায় বসে থাকে মেয়েটাকে এক পলক দেখার আশায়। কিন্তু মেয়েটা সপ্তাহে কেবল দুইদিন ঐ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে এবং মেয়ের সাথে সবসময় গার্ড হিসেবে একজন থাকেই।

একদিন শুভ্র মেয়েটার পিছু পিছু হাটা দিল। উদ্দেশ্য মেয়েটার এড্রেস জানা। প্রায় বিশ মিনিট হাটার পর মেয়েটাকে একটা এপার্টমেন্টে ঢুকে যেতে দেখল। শুভ্র লোকশনটা ভালো করে দেখে আসলো।

ইতিমধ্যে মেয়েটা শুভ্রর গতিবিধি বুঝে ফেলেছে। এই ক্ষেত্রে মেয়েদের অসাধারণ দক্ষতা আছে বলতে হবে। একটা ছেলে তার কাছে কি চাচ্ছে সেটা সে মুহূর্তেই বুঝে ফেলতে পারে।

শুভ্র ভাবলো নাহ্ এভাবে আর কতদিন। এবার যেভাবেই হোক মেয়েটার সাথে কথা বলতে হবে। এ কথা ভাবতেই শুভ্রর মাথায় একটা আইডিয়া আসলো। ওর খুব কাছের বন্ধু লাল মিয়াকে কথাটা বলতে হবে। লাল মিয়া আবার এসব কাজে খুব দক্ষ। দুইদিনের মধ্যেই যেকোন মেয়ের নাম্বার তার কাছে চলে আসে। শুধু মেয়েটাকে একবার দেখিয়ে দিলেই হয়।

শুভ্র একদিন লাল মিয়াকে নিয়ে গেলে মেয়েটাকে দেখিয়ে দেওয়ার জন্য। দুইজন বসে গল্প করতেছে। কিছুক্ষণ পরেই মেয়েটা তাদের পাশ দিয়ে গেল। লাল মিয়া তো মেয়েকে দেখেই হা করে তাকিয়ে আছে। এত সুন্দর আর মায়াবী চেহারার মেয়ে সে কোন দিনও দেখিনি।

শুভ্র লাল মিয়ার মাথায় একটা ঠুওয়া দিয়া বললো, দোস্ত এই মেয়েটাই। যেভাবেই হোক নাম্বারটা জোগার করে দে। লাল মিয়া অনেকটা স্বাভাবিক ভাবেই বললো, ধূর ব্যটা এইটা কোন ব্যাপার। মাত্র দুইদিনের কাজ। তুই কোন টেনশন নিসনা।

এইকথা বলেই লাল মিয়া শুভ্রর কাছ থেকে মেয়েটার বাসার ঠিকানা নিয়ে চলে গেল।

লাল মিয়া এমনিতে মেয়েদের নাম্বার জোগাড় করায় পারদর্শী হলেও প্রেম করায় মোটেও পারদর্শী না। এই পর্যন্ত সে যতটা মেয়েকে ফোন দিছে ততটা মেয়েই তার কথা বলার ধরণ ধারণ ফেশন আর ফুশন শুনে এইযে ফোন রাখছে আর দ্বিতীয়বার কোন মেয়ে তার ফোন রিসিভ করে নাই।

লাল মিয়ার এই জন্য কোন আক্ষেপ নাই। ঠিক দুইদিনের মধ্যেই লাল মিয়া ঐ মেয়ের নাম্বার জোগাড় করে ফেললো। কিভাবে জোগাড় করলো সেটা লাল মিয়ার সিক্রেট কৌশল। কাউকেই সে বলেনা।

শুভ্র নাম্বারটা নিল। রাত আটটা বাজে। শুভ্র ঘর থেকে বের হয়ে একটা নির্জন জায়গায় গিয়ে কাপা কাপা হাতে নাম্বারটা উঠিয়ে ফোন দিল। রিং হচ্ছে। এদিকে শুভ্রর হার্টবিটও অনেক বেড়ে গেছে। ফোন রিসিভ করে ওপাশ থেকে.....

: হ্যালো কে বলছেন?

টুট টুট টুট

শুভ্রর মুখ দিয়ে ভয়ে কথা বের হচ্ছিল না। কি বলবে ভেবে পাচ্ছিল না। তাই সে ফোন কেটে দিছে। পাঁচ মিনিট পর আবার কাপা কাপা হাতে ফোন দিল।

এবারও ফোন রিসিভ হলো...

: হ্যালো কে বলছেন?

:: জ্বি আমি শুভ্র বলছি (শুভ্রর গলা প্রায় শুকিয়ে গেছে)।

: সরি কোন শুভ্র?

:: জ্বি আপনি আমাকে চিনবেন না কিন্তু আমি আপনাকে চিনি।

: হুম চিনেন। তো?

:: না মানে, আপনাকে আমার ভালো লাগে। আই লাভ ইউ। আপনাকে আমার ভালোবাসতে হবে সেটা বলছি না। তবে আমি আপনাকে ভালোবাসি। আপনার আড় চোখের চাহনীটা অনেক সুন্দর। ভালো থাকবেন। টা টা। বাই।

এক নিঃশ্বাসে কথাগুলা বলে শুভ্র ফোনটা কেটে দিল। আর ঐদিকে মেয়েটাও টাসকি খাইয়া গেছে। কি আজিব! চেনা নাই জানা নাই হুট করে একটা ছেলে ফোন দিল প্রপোজ করলো সাথে সাথে ফোনটা রেখেও দিল।

পরদিন শুভ্র আবারও ফোন দিল। এবার একটু সাহস নিয়েই কথা বললো।

এভাবেই তাদের মধ্যে কথা চলতে থাকলো। মেয়েটাও কি মনে করে জানি শুভ্রর সাথে কথা বলতেছে।

দুইমাস কথা বলার পর তারা দেখা করার সিদ্ধান্ত নিল (এর মধ্যে তারা এক অপরের সম্পর্কে মোটামুটি জেনে নিয়েছে)। শিশুপার্কের অপজিটে রমনা পার্কের যে গেইটটা আছে সে গেইট বরাবার অল্প একটু ভিতরে গেলেই লেকটার শেষের দিকে ছোট একটা ব্রীজ আছে। ঐ ব্রীজের উপর শুভ্র জিন্স আর খয়েরী কালারের শার্ট পরে দাড়িয়ে থাকবে।

বিকেল চারটা সময় খয়েরী কালারের শাড়ী পরে মেয়েটা আসলো। দূর থেকেই দেখলো একটা ছেলে হাতে গোলাপ ফুল নিয়ে খয়েরী কালারের শার্ট পরে ব্রীজের উপর দাড়িয়ে আছে।

কাছে গিয়েই বললো,

: হাই আমি শায়লা। আপনি শুভ্র?

:: জ্বি আমিই শুভ্র। কেমন আছেন?

: জ্বি ভালো আছি। তো এখানে দিড়িয়েই কথা বলবেন নাকি ভিতরে কোথাও বসে কথা বলবেন?

:: ও শিউর। চুলুন না ভিতরে কোথাও বসি (ফুলগুলো এখনো দেয়নি)।

একটা বেঞ্চে বসার পরেই শুভ্র হাটুগেড়ে বসে ফুলগুলা দিয়েই বলে ফেললো, আই লাভ ইউ।

মেয়েটা মুচকি হাসি দিয়ে ফুলগুলা নিল। চারটা লাল গোলাপ আর একটা সাদা গোলাপ।

কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় তখনও ছেলেটা জানতে চাচ্ছে না মেয়েটা তাকে ভালোবাসে কিনা।

শেষ পর্যন্ত না পেরে মেয়েটাই বলে ফেললো আই লাভ ইউ টু.....

এই কথা শুনার সাথে সাথেই শুভ্র একটা চিল্লানি দিয়ে বলে উঠলো ইয়াহু আমি সফল। একটা মানুষের হৃদয় জয় করতে পেরেছি আমি। এদিকে শায়লা হাসতে হাসতে বলতেছে এইবার থামেন। আশেপাশের লোকজন আপনার পাগলামী দেখতেছে।

তারপর তারা একে অপরের হাত ধরে পার্কের ভিতর হাটতেছে আর কথা বলতেছে। রোমান্টিক কথা।



শুভ্র একবারও জানতে চাইলো না কেন যে, শায়লা তাকে ভালোবাসে কিনা?

শুভ্রর ইচ্ছা ছিল, সে প্রপোজ করবে ঠিকই কিন্তু ভালোবাসে কিনা জানতে চেয়ে কোন প্রশ্ন করবে না। কারণ প্রত্যেকেই প্রপোজ করার পরে একটা প্রশ্ন করে। সে একটু ব্যাতিক্রমভাবেই ভালোবাসাটা পেতে চেয়েছিলো এবং পেয়েছেও।


ভালো থাকুক শুভ্র আর শায়লার ব্যাতিক্রমি ভালোবাসা....................................
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×