somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালো বই মন্দ বই

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


______________________________________________________
জ্ঞানার্জনে পাঠের বিকল্প নেই। যে যত বেশি পড়বে সে তত শিখবে। জ্ঞানার্জনের যেমন কোনো বাঁধাধরা সময় নেই, তেমনি নেই দূরত্বের পরোয়া। ‘ইকরা’ শব্দ দিয়ে বিশ্ববাসীর জন্য আল্লাহ তায়ালা অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেয়ামত কোরআন অধ্যয়নের নির্দেশ দিয়েছেন। রাসুল (সা.) নিজে কোরআন অধ্যয়ন করতেন পাশাপাশি সব সাহাবা (রা.) কে শিখিয়েছেন। সাহাবারা এতবেশি কোরআন অধ্যয়ন করতেন যে প্রায়ই সারা রাত পার হয়ে ভোর হয়ে যেত। ইমাম মালেক (রা.) সম্পর্কে প্রসিদ্ধ আছে যে, পাঠের নিমগ্নতায় বেখেয়ালে বাবার দেয়া এক গ্লাস কেরোসিন পান করেছিলেন অথচ উনি ধরতে পারেননি। বহুবিধ জ্ঞানার্জনের জন্য ইবনে বতুতা পৃথিবীব্যাপী চষে বেরিয়েছেন। মানুষের জানার, বোঝার ও শেখার কোনো সীমারেখা নেই, তেমনি পাঠের কোনো শেষ নেই। মানুষের দুই ধরনের ক্ষুধার সৃষ্টি হয়। একটি হলো দৈহিক ক্ষুধা, অন্যটি মানসিক ক্ষুধা। দৈহিক ক্ষুধার চাহিদা সাময়িক এবং সহজলভ্য। মানসিক ক্ষুধার চাহিদা এর সম্পূর্ণ উল্টো। এটা পূরণ করাও খুব কঠিন যেটা পাঠের মাধ্যমেই নিবারণ হয়। জানার জন্য পড়তে হবে। পড়ার মাধ্যমই বই। পৃথিবীতে জ্ঞান-বিজ্ঞানে যারা সফলতার শীর্ষে অধিষ্ঠিত হয়েছে তাদের সফলতার মূলমন্ত্র ছিল অত্যধিক ও সঠিক পাঠ। পাঠের নিমগ্নতা তাদের কালজয়ী করে তুলেছে। বিশিষ্ট ভাষাবিজ্ঞানী ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ পাঠে এতটাই নিমগ্ন থাকতেন যে, লাইব্রেরির কেয়ারটেকার প্রায়ই ভুলে উনাকে ভেতরে রেখেই তালাবদ্ধ করে চলে যেতেন! উনার অগাধ পা-িত্যের পেছনে একমাত্র অবদান ছিল অত্যধিক পাঠ। একটা ভালো বই আপনার জীবনকে আলোকময় করে তুলবে, যে আলোর ফোয়ারায় পৃথিবীর চারপাশ ঝলমল করে উঠবে। আবার একটা মন্দ বই আপনার বিশ্বাসের মূলে কুঠারাঘাত করে আপনাকে নিক্ষেপ করতে পারে পঙ্কিলতার অতল গহ্বরে। নীতি-নৈতিকতা হারিয়ে আপনি হয়ে উঠবেন মানুষের পোশাকে একটা পশু মাত্র। বর্তমান সমাজে ধর্মহীনতার যে সয়লাব তার অন্যতম কারণ ভুল তত্ত্ব ও তথ্যে ভরপুর বইয়ের বিস্তৃতি। কাল্পনিক ও প্রমাণহীন তথ্যে ভরপুর বইকে সহজলভ্য করে কোমলমতি ছেলেমেয়েদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। সঠিক শিক্ষা না থাকার কারণে ছেলেমেয়েরা সহজেই অবিশ্বাসের ফাঁদে পা দিয়ে ধর্মবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে সমাজ-রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।

বইয়ের ভালো-মন্দ কী? ‘অ’-তে অজগর ওই আসছে তেড়ে পড়ে যে শিশু মনে অজগরের ভয় নিয়ে পড়াশোনার হাতেখড়ি হয় তার মনস্তাত্ত্বিক বিকাশ আর ‘অ’তে অজু করে নামাজ পড়ি শিখে যে শিশু মহান রবের পদতলে নিজেকে সমর্পণ করতে শিখে শিক্ষার হাতেখড়ি হয় তার বিকাশ কখনও এক হবে না। বর্তমান সামাজিক অস্থিরতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাহীনতা, সম্মানবোধ ও সম্প্রীতির অভাব তরুণ সমাজের মাঝে ব্যাপক আকারে বিরাজ করছে তার অন্যতম কারণ, ভুল বই পড়ে ভুল শিক্ষা গ্রহণ। সঠিক শিক্ষার অভাবে আজকের তরুণ কাঁচা অর্থের লোভে বই ফেলে টেন্ডারবাজিতে জড়িয়ে যচ্ছে। কলম ছুড়ে ফেলে হাতে তুলে নিচ্ছে মরণঘাতী অস্ত্র। যুবসমাজের দৃঢ়তা আজ তলানিতে ঠেকেছে। অল্প সময়েই হতাশাগ্রস্ত হয়ে হাতে তুলে নিচ্ছে মদ, গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিল ও হেরোইনের মতো জীবনবিনাশী নেশাদ্রব্য, পরিবারে পরিবারে অশান্তির আগুন ক্রমেই বেড়েই চলেছে, অনেকেই বেছে নিচ্ছে আত্মহননের পথ। শিশু মস্তিষ্ক অনুধাবন ও সংরক্ষণ ক্ষমতায় পরিপূর্ণ থাকে, ফলে সে যা শিখে পরবর্তী জীবনে তার প্রতিফলন দেখা যায়। একজন ছাত্রের হাতে সঠিক বই তুলে দিতে ব্যর্থ হলে সে ভুল শিক্ষাকেই সত্য মেনে বড় হবে, যা পরবর্তী সময়ে সমাজ-রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর বিবেচিত হবে এটা অনস্বীকার্য।
সৎসঙ্গের মতো ভালো বইয়ের সঙ্গ আপনাকে আলোকময় করে তুলবে। ভালো বইকে নিত্যসাথী করতে হবে। শিশুর হাতে তুলে দিতে হবে ভালো বই। অশ্লীল বই বর্জন করতে হবে। কারণ ভালো বই যেভাবে আপনাকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে, তেমনি অশ্লীল, অনৈতিক ও ধর্ম-কর্মহীন বই আপনাকে খারাপ বানাবে। মানবজীবনে ভালো বইয়ের বিকল্প নেই। ব্যক্তি ও পরিবারকে আলোকময় করার মাধ্যমে সমাজকে আলোকিত, উন্নত ও সুখী করতে ভালো বই হয়ে উঠবে আলোকবর্তিকা। সঠিক জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবন হয়ে উঠবে আরও সমৃদ্ধ।
আলোকিত বাংলাদেশ। ১২/০২/১৬

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৩০
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×