somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্তরে অন্তরে

২৩ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রতিদিন সকালে বাইকটাকে ধোয়ামোছা করা অভ্যাস হয়ে গেছে। বিশেষ করে বাইকের সিটটা একটু বেশি সময় নিয়ে পরিষ্কার করি। তুমি একদমই ধুলো পছন্দ করতে না, বাইকে করে যতবার তোমায় নিয়ে বাইরে গেছি ততবার সিটের ধুলো নিয়ে অভিযোগ ছিল। 
আচ্ছা এখনও কি ধুলো তোমার অপছন্দের?

মোবাইলটা বেজে উঠলো, স্ক্রিনে ভেসে উঠলো সেই চেনা নাম্বারটা।

:হ্যালো....
:শোনো,আজকে তিনটায় কাসুন্দি রেস্টুরেন্ট'এ আসবে।কোন অজুহাত না,তুমি আসবে।
আর কোন কথা না বলেই কল কেটে দিলো, আমি কেন যাবো! আর আমার কোর্টে কাজও আছে।ভালো আছি কিনা,তাও জিজ্ঞেস করলো না।আমি যাবো না দেখা করতে!

পিয়ার সাথে আমার প্রেম ছিলো ৩ বছর।সমস্যাটা তৈরি হল আমরা যখন বিয়ে করতে চাইলাম।সে ছিল দেবনাথ আর আমি খান,হিন্দু মুসলিম বিয়ে হবে কি করে?আমি বাকি কট্টরপন্থী ছেলেদের মত তাকে মুসলিম হতে বললাম। সে রাজি না।হয় আমাকে হিন্দু হতে হবে,নয়তো আমরা যার যার মত থাকবো।কিন্তু আমার জন্য,দেশের বাকি ছেলেদের মত এটা মেনে নেয়া সম্ভব ছিল না।সেও রাজি না,সে পরিবার পরিজন ছাড়ছে,সব সম্পর্ক ছাড়ছে,আমাকেও কিছু ছাড় দিতে হবে,আমি কেন দেব না।

আমি বেকে বসলাম।কিন্তু একদম সহজ ছিল না ব্যপারটি। পিয়ার পেটে তখন আমার বাচ্চা,আমি বাকি নিচু ছেলেদের মত তাকে এবরশন করাতে বললাম। পিয়া আমাকে এলোপাতাড়ি কিল-চড় মেরে সেই যে চলে গেল, আর দেখা হয়নি।সেটাও ২০১০ সালের কথা।আমিও খোজ নেইনি,যে মেয়ে ভালোবাসার জন্য ধর্ম ছাড়তে পারবে না তার সাথে আবার কিসের প্রেম?

আজ প্রায় ৮ বছর পর সে কল দিয়ে বলে,এখানে এসো।যেন সব আগের মতই আছে!কিছুই আগেরমত নেই।যাবো না আমি দেখা করতে!

০২ঃ৫৯এ আমি কাসুন্দি'র সামনে বাইক থামাতেই দু'জন জমজ বাচ্ছা দৌড়ে এল।ছোট ছেলেটা বাইক ধরতে যাবে,ছোট মেয়েটা বলে উঠলো
:এটা ধরবে না।এটার সিটে ধূলোয় ভরা।একদম ধরবে না।
পিয়াও সিটে ময়লা থাকলে এমনি রিয়্যাক্ট করতো।

একজন ভদ্রলোক এগিয়ে এসে হ্যান্ডশেক করলেন।ধরে নিলাম, ইনি পিয়ার হাসবেন্ড।
পিয়া এগিয়ে এলো। পিয়া আগের মতই আছে।বরং গায়ের রংটা ফ্রোজেন'এর কুইন এলছা'র মত হয়েছে।তাতে আমার কি?সে আমার কেউ না।

ছেলে-মেয়ে দু'টি আমার পাশে এসে বসলো।ছেলেটি বললো, মাম্মা,ইনি আমার কি হন?ইনাকে বল না,আমাকে বাইক চালাতে শিখাবেন কিনা?

পিয়া বললো, শাবাব একটু চুপ করে বস।ইনি অবশ্যই তোমাকে শেখাবেন।কারণ ইনার কাজই হল বাজে কাজগুলোকে যত্ন নিয়ে করা।আমি বললাম,তোমার ছেলের নাম শাবাব কেন রেখেছ?এটাতো আমাদের ছেলের নাম হওয়ার কথা ছিল।এখন নিশ্চয় বলবে না,মেয়েটির নামও ছাফিনা?
আমাকে অবাক করে দিয়ে পিয়া বললো, হ্যা,আমার মেয়েটির নামও ছাফিনা।আর তাদের বাবার দেয়া নামই রেখেছি।

শাবাব,ছাফিনা একসাথে বলে উঠলো, তুমি আমাদের বাবা?এতদিন কোথায় ছিলে?আমি পাথর হয়ে গেলাম!

পিয়া আমার পাশে এসে বসলো;বললো, হ্যা,ছাফিনা আমার মতই নোংরা একদম পছন্দ করে না।তবে শাবাব তোমার মতই, এত মিথ্যে বলে,আর একদম অগোছালো নোংরা। তবে সারাদিন তোমার কথাই জিজ্ঞেস করে।আর আমি মিথ্যে বলতে বলতে ক্লান্ত।তাই নিয়ে এসেছি। তোমার সন্তানের দায়িত্ব আমি কেন নেব?তুমি যদি আর ধর্ম নিয়ে টানাটানি না কর,তবে আমি কিছুটা শেয়ার করতে পারি........

আমরা বাড়ি ফিরছি,শাবাব বললো, বাবা ১২০ গতি উঠাওতো!ছাফিনা চিৎকার করে বললো, না না বাবা!তুমি নিশ্চিত এক্সিডেন্ট করবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১২:২৫
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×