somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Living-being Psychology 3.0

২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১...
Living instinct মানুষের চেয়ে গাছের অনেক বেশি।মানুষ প্রবল সমস্যায় হতাশ হয়ে পরে, আত্মহত্যা করতে চায়। গাছ কিন্তু উল্টো, এটা চেষ্টা করতেই থাকে।একটা গাছকে রুমে রেখে দিন। ক্লোরোফিল কমে সাধাটে হয়ে যাবে, কারণ সালোকসংশ্লেষণ কমে গেছে। পরিক্ষা কিন্তু এটা নিয়ে নয়!

আমি একটা গাছকে জানালার কাছে রেখে দিলাম, এটার শাখাপ্রশাখা জানালার দিকে ঝুকে গেল।এমনটাই হবার কথা, খাদ্য তৈরির জন্য এটার আলো দরকার।
আমার রুমে দুইটা জানালা। আমি করলাম কি, গাছটাকে দুইটা জানালার মাঝখানে রেখে দিলাম। যে জানালা দিয়ে সূর্যের আলো আগে আসে, গাছটি সেদিকে ঝুকে গেল!
আরেকটু চালাকি করে গাছটাকে দুইটি জানালার ঠিক মাঝখানে রেখে দিলাম, আশ্চর্য ঘটনা ঘটলো! গাছটি সোজা হয়ে গেল। এটা ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না কোন দিকে ঝুকবে!আলো দু'দিক দিয়েই আসছে!
তারপর একটা ক্যাকটাস রাখলাম, যেটার শাখাপ্রশাখা আছে। এবার এর শাখাপ্রশাখাগুলো দু'ভাগ হয়ে গেল!

এবার একদম অন্ধকারে রেখে দিন, এটা সব পাতা ঝরিয়ে ফেলবে। কেবল কুড়ি বাচিঁয়ে রেখে, অনেকদিন টিকে থাকবে।

২...
একটা বিড়াল, প্রতিদিন বারান্দায় আসে। কিছু করে না, চুপচাপ বসে থাকে। কিছুই বলি না, সেদিন একটা কুবুদ্ধি মাথায় এল!কথায় বলে না, অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা।

খাবার দিয়ে এটাকে রুমে আনলাম। দরজা, জানালাসহ যেদিকেই এটা বেড়িয়ে যেতে পারে সব বন্ধ করে দিলাম! এটাকে ধরার চেষ্টা করলাম। বিড়ালটি শুরুতে বেড়িয়ে যাবার সম্ভাব্য সব রাস্তা খুজলো। জানালা, দরজায় খামচি দিল; আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।
এটাকে অনাগত বিপদের ভয়াবহতা আরেকটু বোঝাতে র‍্যাকেটটা হাতে নিলাম!যেইনা র‍্যাকেটটা উঁচিয়েছি; এটা আমার দিকে তাকিয়ে থাকা বন্ধ করে, আবার পালিয়ে যাবার পথ খুজলো। না পেয়ে যা করলো, তা বর্ণনা করার ভাষা আমার জানা নেই।

এতটুকু বলতে পারি, বিড়ালটার অগ্নিমূর্তি দেখে আমিই দরজা খুলে ভেগেছি!
এমন শান্ত প্রানিটা, জীবননাশের হুমকিতে আমাকে আক্রমণের প্রস্তুতি নিয়েছিল, ওটার গলার আওয়াজও ভয়াবহ হয়ে গিয়েছিল।

আপনিও চেষ্টা করে দেখতে পারেন, তবে দরজার পাশেই থাকবেন; যাতে দ্রুত সরে পড়তে পারেন।

৩...
নির্বাচন চলছে, বেশ জোরেশোরেই চলছে! সকাল সন্ধ্যা একনাগাড়ে গান বাজে। আমার খারাপ লাগে না, কেমন উৎসব উৎসব ভাব।
এটা দেখে অবাক লাগে যে, একদল ছেলে প্রত্যেক প্রার্থীর মিছিলেই যায়! বলাই বাহুল্য, এরা টাকার জন্য যায়।
আচ্ছা, প্রার্থী কি এসব খেয়াল করে না?সৎপথে উপার্জিত টাকা নষ্ট হলেতো সবারই খারাপ লাগে, নাকি?

কিন্তু আরেকদল অনার্স পড়ুয়া ছেলেদেরও দেখি ঐ দলে।সকালে টিউশন থেকে ফেরার পথে ওদের দেখি বসে আছে বা নেতার সাথে ঘুরে লিফলেট বিলি করছে, বিকালে টিউশনে যাবার সময় দেখি আবার রাতে ফেরার পথেও দেখি একই পোশাকে বসে আছে।
এদের সবাই স্বচ্ছল, ভদ্রও!তাই নিশ্চয়ই এরা টাকার জন্য যায় না, হয়তোবা কেউ লজ্জায় টাকা চাইতেও পারে না। এরা যায় নেতার সাথে একটা সেলফি তোলার জন্য।

এখানে মোটেই বড় কোন নেতা নেই, বা আসেও না।ঘন্টার পর ঘন্টা সময় নষ্ট করে, টেনেটুনে স্কুল পাস পাতিনেতার সাথে এরা হাসিমুখে সেলফি তুলে ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করে, "অমুক" ভাইয়ের সাথে একটা সেলফি!
এই ছেলেগুলোর জন্য মায়া হয়।

৪...
বাসে সহজে সিট পেয়ে গেলেই আমার পাশের যাত্রী মোটা হবে, এটা প্রায় নিশ্চিত। এজন্য আমি জানালার পাশের সিটে বসি না, মোটা মানুষটা আমাকে হাত দিয়ে চাপ দিয়ে রাখে।
আজও ব্যতিক্রম হয়নি! আমার পাশে মোটামুটি একজন মোটা মানুষ বসেছে। তার পা-ও বেশ লম্বা,তবে সিটের সামনে ঠিকই এটে যাচ্ছে। ভিক্টর ক্লাসিক'এর সিটগুলোর সামনে বেশ জায়গা।

মোটা মধ্যবয়সী লোকটা দুই পা ফাক করে এমন ভাবে বসলেন, আমার ছোট দেহটার আর জায়গাতো হচ্ছেই না;আবার এক হাটুও সিটের বাইরে চলে এল। আমি মেনেই নিলাম, আল্লাহ ইনাকে মোটা বানিয়েছেন আবার বুদ্ধিও কম দিয়েছেন। লোকটার আর কি করার আছে? এয়ারপোর্ট পার না হতেই উনি ঘুমিয়ে পড়লেন। যা ভাবছেন তাই, আমার ঘাড়ে মাথা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুম!

একেতো ভালোভাবে বসতে পারছি না, উনার এক বাহুর নিচে পড়ে আছি, আবার আমার কাধেই ঘুমিয়ে পড়ছেন।বাস বিশ্বরোড আসতেই আমার অসীম ধৈর্য্য ফুরিয়ে গেল!
আমি উনাকে ডেকে লজ্জা দেয়ার জন্য বললাম,"আংকেল, সিটে আপনি একাই বসুন। আপনারতো জায়গা হচ্ছে না!" আমি সিট ছেড়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম।
উনি আমার দিকে তাকালেন, তারপর সিটের মাঝখানে বসে আবার ঘুমিয়ে পড়লেন।ভাবটা এমন যে, এতক্ষণ সিট না ছেড়ে অপরাধ করেছি। আল্লাহ যে উনাকে লজ্জাও দেননি!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×