ভ্যালেন্টাইন ডে
সম্পর্কে তিনটি ব্যাখ্যা পাওয়া যায় । তবে
বিভিন্ন বইয়ে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনা উদ্ধৃত
হয়েছে । সেগুলো থেকে প্রসিদ্ধ কয়েকটি
ঘটনা পাঠকের সচেতনার্থে নিম্নে তুলে
ধরা হল-
প্রথম বর্ণনা : রোমের সম্রাট দ্বিতীয়
ক্লাডিয়াস এর আমলে ধর্মযাজক সেন্ট
ভ্যালেন্টাইন ছিলেন শিশু-প্রেমিক,
সামাজিক ও সদালাপী এবং খৃষ্ট ধর্ম-
প্রচারক । অপরদিকে রোম সম্রাট ছিলেন
দেব-দেবীর পূজায় বিশ্বাসী । সম্রাটের
তরফ থেকে ভ্যালেন্টাইনকে দেব-দেবীর
পূজা করতে বলা হলে তিনি তা অস্বীকার
করেন । ফলে ভ্যালেন্টাইনকে কারারুদ্ধ
করা হয় এবং ২৭০ খৃষ্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারী
রাষ্ট্রীয় আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগে সম্রাট
ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করে হত্যা
করেন ।
দ্বিতীয় বর্ণনা : সেন্ট ভ্যালেন্টাইন
কারারুদ্ধ হওয়ার পর প্রেমাসক্ত যুবক-
যুবতীরা অনেকেই প্রতিদিন তাকে
কারাঘারে দেখতে আসত এবং ফুল উপহার
দিত । আগন্তুকরা বিভিন্ন উদ্দীপনামূলক
কথা বলে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে উদ্দীপ্ত
রাখত । জনৈক কারারক্ষীর এক অন্ধ মেয়েও
ভ্যালেন্টাইনের সাথে প্রত্যহ সাক্ষাৎ
করতে আসত । অনেক্ষণ ধরে তারা দু’জন
প্রাণ খুলে কথা বলত । এক সময়
ভ্যালেন্টাইন মেয়েটির প্রেমে পড়ে যায় ।
সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আধ্যাত্মিক
চিকৎসায় অন্ধ মেয়েটি দৃষ্টিশক্তি ফিরে
পায় । ভ্যালেন্টাইনের সাথে কারারক্ষীর
মেয়ের সম্পর্ক এবং ভ্যালেন্টাইনের প্রতি
দেশের যুবক-যুবতীদের ভালবাসার কথা
সম্রাটের কানে পৌঁছে । এতে সম্রাট
ক্ষিপ্ত হয়ে ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদন্ড
প্রদান করেন । তথ্যমতে, তাকে ফাঁসি দেয়া
হয়েছিল ২৬৯ খৃষ্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারী ।
তৃতীয় বর্ণনা : সমস্ত ইউরোপে যখন খৃষ্টান
ধর্মের জয়জয়কার তখনও বড় আয়োজন করে
পালিত হত রোমীয় একটি রীতি । মধ্য
ফেব্রুয়ারীতে গ্রামের সকল যুবকেরা সমস্ত
মেয়েদের নাম চিরকুটে তুলত, অতপর লটারীর
মাধ্যমে যার হাত যে মেয়ের নাম উঠত, সে
যুবক পূর্ণবৎসর ঐ মেয়ের প্রেমে মগ্ন থাকত ।
আর তাকে চিঠি লিখতে এ বলে যে,
‘প্রতিমা মাতার নামে তোমায় প্রেরণ
করছি’। বৎসর সমাপান্তে এ সম্পর্ক নবায়ণ
বা পরিবর্তন করা হত । এ রীতিটি কতক
পাদ্রীর গোচরীভূত হলে তারা একে সমূলে
উৎপাটন করা অসম্ভব ভেবে শুধু নাম পাল্টে
দিয়ে একে খৃষ্টান ধর্মায়ণ করে দেয় এবং
ঘোষণা করে, এখন থেকে এ পত্রগুলো
প্রতিমা মাতার নামে প্রেরণ না করে
‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’ এর নামে প্রেরণ করতে
হবে । কারণ এটা খৃষ্টান নির্দশন, যাতে
কালক্রমে এটা খৃষ্টান ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত
হয়ে যায় ।
চতুর্থ বর্ণনা : প্রাচীন রোমে দেবতাদের
রাণী জুনো (Junno)’র সম্মানে ১৪
ফেব্রুয়ারী ছুটি পালন করা হত । রোমানরা
বিশ্বাস করত যে, জুনোর ইশার-ইঙ্গিত
ছাড়া কোন বিয়ে সফল হয় না । ছুটির
পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারী লুপারকালিয়া ভোজ
উৎসবে হাজারো তরুনের মেলায় র্যাফেল
ড্র্র’র মাধ্যমে পরস্পরের সঙ্গী বাছাই
পক্রিয়া চলত । এ উৎসবে উপস্থিত তরুণীরা
তাদের নামাঙ্কিত কাগজের সিপ
জনসম্মুখে রাখা একটি বড় পাত্রে ফেলত ।
সেখান থেকে যুবকের তোলা সিপের
তরুণীকে কাছে ডেকে নিত । কখনও এ জুটি
সারা বছরের জন্য স্থায়ী হত এবং
ভালবাসার সিঁড়ি বেয়ে বিয়েতে পরিনতি
ঘটত ।
পঞ্চম বর্ণনা : রোমানদের বিশ্বাসে
ব্যবসা, সাহিত্য, পরিকল্পনা ও দস্যুদের প্রভু
‘আতারিত এবং রোমানদের সবচেয়ে বড় প্রভূ
‘জুয়াইবেতার’ সম্পর্কে ভ্যালেনটাইনকে
জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল । এদের সম্পর্কে
ভ্যালেন্টাইন বলেছিল, এগুলো সব মানব
রচিত প্রভূ, প্রকৃত প্রভূ হচ্ছে ‘ঈসা মসীহ’ । এ
কারণে তাকে ১৪ ফ্রেব্রুয়ারীতে হত্যা করা
হয় ।
ষষ্ঠ বর্ণনা : কথিত আছে, খৃষ্টধর্মের প্রথম
দিকে নেতিক চরিত্র বিনষ্টের অপরাধে
রোমের কোন এক গীর্জার ভ্যালেন্টাইন
নামক দু’জন সেন্ট (পাদ্রী) এর মস্তক কর্তন
করা হয় । তাদের মস্তক কর্তনের তারিখ
ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারী । ভক্তেরা তাদের
‘শহীদ’(!) আখ্যা দেয় । রোমান ইতিহাসে
শহীদের তালিকায় এ দু’জন সেন্টের নাম
রয়েছে । একজনকে রোমে এবং অন্যজনকে
রোম থেকে ৬০ মাইল (প্রায় ৯৭ কি.মি)
দূরবর্তী ইন্টরামনায় (বর্তমান Terni) এ
‘শহীদ’ করা হয় । ইতিহাসবিদগণ কর্তৃক এ
ঘটনা স্বীকৃত না হলেও দাবী করা হয যে,
২৬৯ খৃষ্টাব্দে ‘ক্লাইডিয়াস দ্যা গথ’ এর
আমলে নির্যাতনে তাদের মৃত্যু ঘটে । ৩৫০
খৃষ্টাব্দে রোমে তাদের সম্মানে এক
রাজপ্রাসাদ (Basillica) নির্মাণ করা হয় ।
ভূর্গভস্থ সমাধিতে একজনের মৃতদেহ রয়েছে
বলে অনেকের ধারণা ।
সপ্তম বর্ণনা : ৮২৭ খৃষ্টাব্দে সেন্ট
ভ্যালেন্টাইন নামের এক ব্যক্তি রোমের
পোপ নির্বাচিত হয়েছিল । তিনি তার
চারিত্রিক মাধুর্য এবং সুন্দর ব্যবহার দিয়ে
অল্প দিনের মধ্যেই রোমবাসীর মন জয় করে
নিয়েছিল । কিন্তু মাত্র ৪০ দিন দায়িত্ব
পালনের পরেই তার জীবনাবসান ঘটে ।
প্রিয় পোপের মৃত্যুর পর তাঁর স্মরণে ১৪
ফেব্রুয়ারী রোমবাসী এক অনুষ্ঠানের
আয়োজন করেছিল । অনেকের মতে এভাবেই
‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র সূচনা হয় । পশ্চিমা
দেশগুলোতে প্রেমিক-প্রেমিকাদের মধ্যে
এ দিনে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, এমনকি
পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও উপহার
বিনিময় হয় । উপহার সামগ্রীর মধ্যে থাকে
পত্র বিনিময়, খাদ্য দ্রব্য, ফুল, বই, ছবি, `Be
my Valentine’(আমার ভ্যালেন্টাইন হও),
প্রেমের কবিতা, গান কার্ড প্রভৃতি ।
গ্রীটিং কার্ডে, উৎসব স্থলে অথবা অন্য
স্থানে প্রেমদেব (Cupid) এর ছবি বা মূর্তি
স্থাপিত হয় । সেটা হল একটি ডানাওয়ালা
শিশু, তার হাতে ধনুক এবং সে প্রেমিকার
হৃদয়ের প্রতি তীর নিশান লাগিয়ে আছে ।
এ দিন স্কুল শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাসরুম
সাজায় এবং অনুষ্ঠান করে ।১৮শ’ শতাব্দী
থেকেই শুরু হয়েছে ছাপানো কার্ড প্রেরণ
। এ সব কার্ডে ভাল-মন্দ কথা, ভয়-ভীতি আর
হতাশার কথাও থাকত । ১৮শ’ শতাব্দীর
মধ্যভাগ থেকে উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম
দিকে যে সব কার্ড ভ্যালেন্টাইন ডে’তে
বিনিময় হত তাতে অপমানজনক কবিতাও
থাকত । তবে সবচেয়ে যে জঘন্য কাজ এ
দিনে করা হয় তা হল, ১৪ ফেব্রুয়ারী
মিলনাকাঙ্খী অসংখ্য যুগল সবচেয়ে বেশী
সময় চুম্বনাবদ্ধ থাকার প্রতিযোগিতায়
লিপ্ত হয় । আবার কোথাও কোথাও
চুম্বনাবদ্ধ হয়ে ৫ মিনিটি বা তার বেশি
সময় অতিবাহিত করে ঐ দিনের অন্যান্য
আয়োজনে অংশগ্রহন করে ।
বাংলাদেশের ‘যায়যায় দিন’ পত্রিকার
সাবেক সম্পাদক ও বিটিভির এক সময়ের
অত্যন্ত জনপ্রিয় টক’শো “লাল গোলাপ
শুভেচ্ছা” এর পরিচালক ও উপস্থাপক জনাব
শফিক রেহমান বাংলাদেশে ভালবাসা
দিবস চালুর জনক । এ দিবসে ভালবাসায়
মাতোয়ারা থাকে রাজধানী ঢাকাসহ
দেশের বড় বড় শহরগুলো । পার্ক, রোস্তোরাঁ,
ভার্সিটির করিডোর, টিএসসি, ওয়াটার
ফ্রন্ট, ঢাবির চারুকলার বকুলতলা, আশুলিয়া,
কুয়াকাটা এবং কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতসহ-
সর্বত্র থাকে প্রেমিক-প্রেমিকাদের তুমুল
ভীড় । ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষ্যে অনেক
দম্পতিও উপস্থিত হয় প্রেমকুঞ্জগুলোতে ।
আমাদের দেশের এক শ্রেণীর তরুণ-তরুণী,
যুবক-যুবতী এমনকি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও
ভালোবাসা দিবসে নাচতে শুরু করে ! তারা
পাঁচতারা হোটেলে, পার্কে, উদ্যানে,
লেকপাড়ে এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়
উপস্থিত হয় ভালবাসা বিলোতে, অথচ
তাদের নিজেদের ঘর-সংসারে এক ফোঁটাও
ভালবাসার উপস্থিতি নাই । আমাদের
বাংলাদেশী ভ্যালেন্টাইনরা যাদের
অনুরণে এ দিবস পালন করে, তাদের
ভালবাসা জীবন-জ্বালা আর জীবন
জটিলতার নাম; মা-বাবা, ভাই-বোন
হারাবার নাম, নৈতিকতার বন্ধন মুক্ত
হওয়ার নাম । তাদের ভালবাসার লক্ষ্যই ‘ধর-
ছাড়’ আর ‘ছাড়-ধর’ নতুন নতুন সঙ্গী । ১৪
ফেব্রুয়ারী শুরু হলেও তাদের ধরা-ছাড়ার
বেলেল্লাপনা চলতে থাকে সমগ্র
জীবনব্যাপী ।
যে সকল যুবক-যুবতী, তরুণ-তরুণী ও ছাত্র-
ছাত্রীরা আগামী বাংলাদেশের কর্ণধর
সেই তারাই যদি এমন বিপথগামী ও
চরিত্রহননকারী দিবস পালনে অভ্যস্থ হয়ে
যায় তবে দেশের ভবিষ্যত চির অন্ধকারে
ছেয়ে যাবে । তাই নিজ ও দেশের
ভবিষ্যতের স্বার্থে অভিভাবকদেরকে ১৪
ফেব্রুয়ারী এবং এ জাতীয় ক্ষতিকর দিবস
পালনের ব্যাপারে সন্তানদের দিকে আরও
বেশি মনোযোগী ও সচেতন হতে হবে ।
সন্তান-বিপথে গেলে অভিভাবকের
ক্ষতিটাই সবচেয়ে বেশি । অনেক আধুনিক
বাবা-মা বলেন, আমরা আমাদের
সন্তানদেরকে স্বাধীনতা দিয়েছি । এ সব
অভিভাবকরা এ কথা বলে পাড় পেয়ে যেতে
পারেন না । আপনাদের আবেগপ্রবন,
অপ্রাপ্ত বয়সের সন্তানেরা আপনাদের
দেয়া স্বাধীনতাকে অপব্যবহার করে যা
ইচ্ছা তা করে বেড়ালে সমাজে
আপনাদেরকেই অপদস্থ এবং খেসারত দিতে
হবে । সুতরাং আসন্ন ভালোবাসা দিবসের
পূর্বেই সাবধান হোন । দরকার হলে কঠোরতা
প্রদর্শণ করুণ । আপনার কঠোরতায় যদি
আপনার স্নেহধন্য সন্তানের মঙ্গল হয় তাতে
আপনার চেয়ে বেশি উপকৃত কেউ হবে না ।
সন্তান যাতে এ দিনে বাইরে গিয়ে
অনৈতিক ও অন্যায় কিছুর সাথে জড়িত না
হতে পারে তার জন্য প্রয়োজনে পরিবারের
সকল সদস্য মিলে বাসায় বসে সামাজিক
পরিবেশে আনন্দ করুন অথবা সবাই মিলে
কোথাও বেড়িয়ে আসুন । এতে সন্তানের
মারাত্মক ক্ষতি থেকে যেভাবে তাদেরকে
রক্ষা করতে পারবেন তেমনি পারিবারিক
বন্ধন আরও দৃঢ় হবে । আর যে সকল ছাত্র-
ছাত্রী এবং তরুন-তরুনীরা বাবা-মা বা
অভিভাবকদের ছেড়ে দূরে আছেন তার
সংযমী হোন । মনে রাখতে হবে, আমার
ভবিষ্যত আমার উপকারার্থে । আমি যত
সভ্য-ভদ্র হতে পারব সমাজে আমার স্থান
তত উর্ধ্বে হবে । খেয়াল রাখতে হবে, দেশি
সংস্কৃতিকে ভূলে বিজাতীয় সংস্কৃতি গ্রহন
করতে গিয়ে আমরা যেন ‘বাঁদুড়ে’
রুপান্তরিত না হই । বাঁদুড়ের স্বভাব হলো,
সে একূলেও থাকতে পারে না আবার ওকূলেও
যেতে পারে না । আমরা সভ্যতার
উষালগ্নে দাঁড়িয়ে আছি । উন্নত জীবন
আমাদেরকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে ।
আমাদের নিজেদের ঐতিহ্য, সভ্যতা এবং
স্বতন্ত্র সংস্কৃতি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সংস্কৃতি
। সুতরাং বিদেশী সংস্কৃতির পিছে না
ছুটে আমাদের সংস্কৃতিকে শক্তভাবে ধারন
এবং পালন করি । তাতে আমরা যেমন উপকৃত
হব তেমনি আমাদের দেশটাও বিশ্বের
দরবারে নিজস্ব পরিচিতি নিয়ে পরিচিতি
পাবে । বাংলাদেশেকে সোনার দেশ,
স্বতন্ত্র ও সমৃদ্ধশালী সংস্কৃতির, সভ্যতার
এবং স্বতন্ত্র ঐতিহ্যের দেশ হিসেবে
বিশ্বের দরবারে পরিচিত করি ।
ভালবাসা দিবসটি ভালবাসার আদান-
প্রদানের নামে সূচনা হলেও এই দিবসটি
সমাজকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে ।
দিবসটি সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা এবং
নৈতিকতা ধ্বংস করে সমাজকে বিশৃঙ্খল
এবং যুবক-যুবতীদের অনৈতিক কর্মকান্ডে
জড়িত হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে । এ দিনটি
পালনের অনেকগুলো অপকারীতা রয়েছে ।
যার মধ্যে থেকে কয়েকটি বিধৃত হল-
ভালবাসা দিবস পালনের ফলে সমাজের
যুবক-যুবতীরা বিপথগামী হচ্ছে ।
এই দিনটি পালনের ফলে যুবক-যুবতীরা
ধর্মীয় শিক্ষা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ।
এই দিনটির দরুন খৃষ্টান-নাসারারা
তাদের উদ্দেশ্যকে সফল করতে পারছে ।
তারা ইসলামী চেতনায় আঘাত হানছে ।
এই দিনটির ফলে অনেক তরুণীরা তাদের
মহামূল্যবান সতীত্ব বিসর্জন দিচ্ছে ।
এই দিনটি পালনের ফলে অনেক নারী-
পুরুষ প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার পথ
বেছে নিচ্ছে ।
এই দিনটি পালনের ফলে নারী-পুরুষের
অবাধ যৌন মিলনের ফলে এইডসের মত
নানা ধরনের জটিল রোগব্যধি ছড়াচ্ছে ।
এই দিনটিতে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে অবাধ
মেলা-মেশার মাধ্যমে সমাজে জন্ম নেয়
অসংখ্য পিতৃ পরিচয়হীন (জারজ) সন্তান
।
ভালোবাসা দিবস সম্পর্কিত এসব জানা-
অজানা তথ্য জানার পরেও বাংলাদেশী
ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে লালিত কোন নারী
কিংবা পুরুষ কি এইদিনে তার প্রিয়জন
থেকে কোন চিরকুট, প্রেমপত্র, লাল গোলাপ,
ভ্যালেন্টাইন্স ডে কার্ড বা কোন উপহার
পাওয়ার অপেক্ষায় থাকবে ? কিংবা এ
দিনে তথাকথিত ভালবাসা বিনিময়ের
জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবে । এরপরেও কেউ
যদি এ দিবসকে ঘিরে এমন কিছু করে তবে
তা সামাজিক মূল্যবোধ ও নিজ দেশের
মাটি ও মানুষের সংস্কৃতি বিসর্জন দিয়ে
আত্ম-বিস্মৃতির চরম দেউলিয়াপনা ছাড়া
আর কি হতে পারে ? নিশ্চিতভাবে বলা
যায় ভ্যালেন্টাইনের সাথে ভালবাসার
কোন সম্পর্ক নাই । আমাদের ভালোবাসা
নির্দিষ্ট একদিনে সীমাবদ্ধ নয় বরং সারা
বছরের, গোটা জীবনের । আবেগের চেয়ে
বিবেককে বেশি প্রধান্য দিতে শিখলেই
আমাদের মঙ্গল হবে । পরবর্তী প্রজন্মকে
সুস্থ-সংস্কৃতি চর্চার মানসিকতায় গড়ে
তোলার জন্য ভালোবাসা দিবসের মত
ক্ষতিকর উৎসব বর্জন করা আমাদের জন্য
সময়ের দাবী । যতদ্রুত তা অনুধাবন করতে
পারব, কল্যানও ঠিক ততোদ্রুত আমাদের
দ্বারে এসে দাঁড়াবে ।