আশ্চর্যতম সন্ধ্যা
...............
পৃথিবীর নিঃসঙ্গতম গোধূলীরে আমি দেখেছি
কতো যে শীতকালে,
তার মধ্য থেকে কোন ধুধু-দূরের হট্টগোলে
তুমি পাখি খালি উড়ে গেছো,
তাতে সন্ধ্যা আরও গাঢ় হতে গিয়ে নামে
রকমারি রাত।
নিজের কাঁধেই নিজে হাত রেখে বসে থাকা
দূরপাল্লার কতোসব নিশা-অমানিশা
কেটে গেছে,
সেইসব তবে গেছে বা কোথায়!
ভাবতে বসলেই আজ রাত সব দিন
দিন সব রাত-
একাকার, পিঠ রেখে দাঁড়াচ্ছে সন্ধ্যায়।
জীবনানন্দ দাশকে ফিরতে দেখা বিকেল
.................
কলাপাতার ঠোঁটে ঝুলে আছে
বিকেলের শরম,
আলতা মেঘের হাত-পায়।
দূর থেকে অস্পষ্ট দেখি
বুঝি না, শালিক, নাকি সে
বাতাসে পাখনা মেলে ওড়ে,
আবার দাঁড়ায়।
বুকের গভীরে
নিজস্ব অরণ্যে ঢুকে দেখি,
সেখানেও নিভৃতে বসে তিনি
ঠেস দিয়ে বুনোচালতার গায়!
*২২ অক্টোবর, ২০০৮ সালে লেখা
২০১৩ ও ১৪ সালের ২২ অক্টোবর লেখা ৩টি কবিতা
(শিউলী)
শিউলীর সাথে পরিচয়ের আগে আমি
সব শিউলীদের সফেদ ঘ্রাণময় ভাবতাম।
মনে হতো, তারা কিনা সন্ধ্যার দিকে ফুটে
রাতের শুশ্রুষা শেষে
স্বতঃপ্রনোদিত হয়ে প্রভাতের দিকে ঝরে যায়!
এওতো শিউলী এক-
প্রায় প্রভাতে যে কালোমুখ
শুকনো ফুল
উদ্যানে জলমগ্ন বসে
ভেতরে ভেতরে যেন কার সঙ্গে লড়ে যায়! (রচনাকাল: ২২ অক্টোবর, ২০১৪)
(রমনা)
তার মধ্যে তারে ঢুকায়া
তার মধ্যে তারে
কী সুন্দর কী অপরূপ
একে অন্যতে পোড়ে।
তার ভাবনা সে ভেবে নেয়
সে'র ভাবনা তার
দুয়ের এহেন কীর্তি দেখতে
খোদায় ফিরায় ঘাড়! (রচনাকাল: ২২ অক্টোবর, ২০১৩)
(মর্যাদা)
বাইরে গুলির শব্দ, তাঁবুতে দিশেহারা বাতাসের আশ্রয়
সন্ধ্যা তবুও আসে যুদ্ধ দামামা না মেনে।
তারাদের মৌন নির্যাতনে উভয় শিবিরে সৈন্যদল
কেমন যে উচাটন হয়!
ঘামে শ্রান্ত; কাঁধের রাইফেলও চাইলে বিশ্রাম
রাত বাড়ে আরও রাতে,
সব রাত সকালের দিকে ধাবমান।
সৈন্যদল ঘুমিয়ে পড়ে প্রতিরোধহীন,
জেগে থাকে তাদের সব সতর্ক কান।
যুদ্ধ ময়দানেও ঢোকে ভোর-
পাশের নদীতে ভাসে লাশ,
পক্ষ না প্রতিপক্ষের- মৃত্যুতে তা হয়ে ওঠে ধাঁধাঁ,
লাশকে বুলেট দেয় দুই পক্ষেই শহীদের মর্যাদা! (রচনাকাল: ২২ অক্টোবর, ২০১৪)
গেলো বছর
...........
সিগারেট সুখটান দিতে দিতে
আরাম আসন নিয়ে,
গেলো বছরটা আমি খেতে চাই
চায়েতে ভিজিয়ে, আজ!
ফেরেস্তারও আব্বা
................
ওহে জলাধার,
শহরে জন্ম নিয়ে শহরেই বড় হওয়া কবিরা কিন্তু
বিরাট ব্যাপার।
তারা অভিজাত লর্ড ক্লাইভের গুপ্ত বংশধর,
তাদের কবিতায় রপ্ত ইংরেজ কবিদের স্বর,
তারা ফেরেস্তারও আব্বা,
তারা গায় দেয় না কেন লম্বা লম্বা জোব্বা!
বর
......
তাহলে আংশিক হৃদ্যতা রেখে
দৃশ্যত ফিরে যাওয়া-
যেভাবে বন্ধুর মুখ
সন্দেহে
অংশত শত্রুর ছায়া হয়ে ভাসে
ঋতুর প্রবাহে।
বেল বাজাচ্ছে হেমন্ত,
আলগোছে পথ করে দিচ্ছে শরতের কাশবন,
একটা ছোট্ট পুতুল তাও
আকাঙ্খায় বসে আছে সোকেসে নীরব;
তাকে যাও, নিয়ে যাও আংশিক ধবধবে বনে
হৃদয়ে বিবাহ এলে, বর জেনে নেবে!
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:২১