somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র অসন্তোষ দরকার সুষ্ঠ তদন্ত

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১০ সকাল ১০:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র অসন্তোষ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নজিরবিহীন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে গত সোমবার। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি বাসসহ শতাধিক কক্ষ, প্রশাসনিক ভবন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, আইটি ভবন, ব্যাংক, পোস্ট অফিস, জাদুঘর, টেলিফোন অফিস সর্বত্রই চলে এ তাণ্ডব। এসব ভবনের কম্পিউটার, ফটোকপি মেশিন, এমনকি রাস্তার পাশে থাকা সাইনবোর্ডগুলোও রক্ষা পায়নি ভাঙচুরের হাত থেকে। এ সময় পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একজন শিক্ষক, পুলিশের একজন এএসপিসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় দেড় মাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
কেন এ ভাঙচুর? শিক্ষার্থীদের একটি অংশ দাবি করে আসছিল, বর্ধিত টিউশন ফি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে এবং সে আন্দোলন তারা চালিয়েও যাচ্ছিল। সোমবার হঠাৎ মুখে কালো কাপড় বেঁধে একদল তরুণ লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে এবং ভাঙচুর শুরু করে দেয়। প্রত্যক্ষদর্শী এবং পুলিশের অভিযোগ, এরা ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ভাঙচুরের সময় বহদ্দারহাটে আট খুনের মামলার আসামি শিবির নেতা তৌফিকসহ কিছু বহিরাগত সেখানে উপস্থিত ছিল বলে শিবির নেতারাও স্বীকার করেছেন। পুলিশের ধারণা, হামলার ঘটনাটি অত্যন্ত সুপরিকল্পিত। জানা যায়, সকাল ১০টার দিকে ক্যাম্পাসে হাজার দেড়েক শিক্ষার্থী মিছিল বের করেন। তাঁদের মধ্য থেকে কয়েকজন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা এক পুলিশের প্লাস্টিকের ঢাল কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন এবং পুলিশকে চ্যাংদোলা করে কচুরিপানাভর্তি পুকুরে ফেলে দেন এবং আরেক পুলিশকে মারধর করেন। এ সময় আরো পুলিশ জড়ো হয়ে প্রথম দফা লাঠিপেটা করে। এরপর পুলিশ শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান নেয়। মিছিলকারীরা সেখানে গিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে কয়েকজন পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ দ্বিতীয় দফা লাঠিপেটা করে। একপর্যায়ে মুখে কাপড় বাঁধা তরুণরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে এবং নির্বিচারে ভাঙচুর চালাতে থাকে। এ তাণ্ডবে ক্যাম্পাসে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি কত বেড়েছে? গত ২২ মে সিন্ডিকেট সভায় ভর্তি ও টিউশন ফি বাড়ানোর এবং ১ জুলাই থেকে তা কার্যকর করার সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়। বিজ্ঞান অনুষদে ভর্তি ফি ৬৮০ টাকা বাড়িয়ে চার হাজার ১০০ টাকা করা হয়েছে। অন্যান্য অনুষদে ১৭০ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে তিন হাজার ২০০ টাকা। বিজ্ঞান অনুষদে (গণিত বিভাগ ছাড়া) সম্মান শ্রেণীতে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের অনাবাসিক শিক্ষার্থীর বার্ষিক টিউশন ফি ৯০৩ টাকা (মাসে ৭৫ টাকার মতো) বাড়িয়ে দুই হাজার ২৩০ টাকা করা হয়েছে। অন্যান্য অনুষদে ৯২৯ টাকা বাড়িয়ে দুই হাজার ১৭০ টাকা করা হয়েছে। অনাবাসিক ছাত্রদের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান অনুষদে ৬২৯ টাকা (মাসে ৫২ টাকার মতো) বাড়িয়ে বছরে দুই হাজার ৭৪০ টাকা এবং অন্যান্য অনুষদে ৮২৯ টাকা বাড়িয়ে (মাসে ৬৯ টাকা) দুই হাজার ৬৮০ টাকা করা হয়েছে। স্নাতকোত্তর শ্রেণীতেও বৃদ্ধির হার একই রকম।
টিউশন ফি কমানোর যে দাবি শিক্ষার্থীরা করেছেন তা অবশ্যই যৌক্তিক। প্রশাসন একসঙ্গে এত টাকা না বাড়িয়ে মাসে ১০ বা ২০ টাকা বাড়ালে শিক্ষার্থীদের হয়তো এতটা গায়ে লাগত না। বিষয়টি অবিলম্বে সিন্ডিকেট পুনর্বিবেচনা করবে বলে আমরা আশা করি। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি করা অত্যন্ত অনভিপ্রেত। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষককেও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ঘটনা। আন্দোলন মানে নৈরাজ্য নয়। অনেক অভিভাবক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি ও সেশনজটের ভয়ে বাধ্য হন শিক্ষার্থীদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাতে এবং তিন-চার মাসের একেকটি সেমিস্টারে ৫০ হাজার টাকা করে দিতে। তাঁরা যে খুব একটা বিত্তশালী তা নন, কেবল সন্তানের মঙ্গল কামনায় এ খরচ করতে বাধ্য হন তাঁরা।
আমরা চাই, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষার্থী সবার মধ্যেই শুভ বোধ জন্ম নেবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ কিভাবে আরো উন্নত হয়, সে চেষ্টাই তারা করে যাবে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×