দুটি ঘটনা,
ঘটনা-১,
হজরত আলীর চায়ের দোকান।
হজরত আলী চাচা (৬৫-৭০)(ছদ্মনাম)আমাদের এলাকার পুরানো দোকানদার।তার চায়ের দোকান খুবই চালু।
সন্ধায় অনেক লোক তার দোকানে।জায়গার অভাবে কেউ দাড়িয়ে ,কেউ বসে চা সিগারেট খাচ্ছে।এরমধ্যে খেয়াল করলাম চাচা তিন-চারজনের একটা দলের কাছে ৫০০ টাকার একটা নোট সাধছে। এরা এলাকার পুরনো ছাত্রলীগ।যদিও কেউ স্কুল পাশ করতে পারেনি।
১ম জনঃচাচা,এইটা কি দিলেন।কইলাম ৩০০০দিবেন।দিলেন ৫০০।মিনিমাম ২০০০তো দিবেন।আপনে নিজে আওয়ামী লীগ করেন। আপনে না দিলে কেডা দিবো?
চাচাঃযা দিছি,নিয়া যাও।ব্যবসা খারাপ।এহন যাও।কাষ্টোমার আছে।
২য় জনঃকাষ্টোমারের মায়রে …………।আপনের ২০০০ই দেয়া লাগবো।
চাচাঃকইতাছি এহন ভাগো।আমি ৪২ বছর ধইরা নৌকায় ভোট দেই।বংগবন্ধুর জন্য আমরা তোমাগো মত মাইনষের কাছে ভিক্ষা চাই নাই। নিজেগো পকেটের টাকা দিয়া যা করার করছি। তোমার বাপের কুলখানীর লাইগা আইসো,পুরা তিনহাজারই চান্দা দিমু।মনে করুম ছদকা দিছি।
২য় জনঃবুইড়া …………পোলা কয় কি।আমার বাপের কুলখানীর লাইগা ও চান্দা দিবো।
(বাকীরা বাদ দে,বাদ দে বলে থামাতে চাইলো।
চাচাঃএহন লাগে ক্যা।জাতির পিতার জন্য চান্দাবাজী করতে লজ্যা লাগে না?
২য় জন চরম উত্তেজিত।অকথ্য গালাগালি।বাকীরা তাকে থামানোর চেষ্টা করছে।এর মধ্যে ১০/১২ জনের জুনিয়র ছাত্রলীগের একটা দল “ভাই কি হইছে,ভাই কি হইছে?” বলতে বলতে আসলো
২য় জনঃওই বুইড়া ………পোলা শ্যাখ মজিবরে (তার উচ্চারনটা এমনই ছিলো)গালি দিছে।
বলতে না বলতে চেতনার দন্ড দাড়ায়া গেলো।নিমিষেই শুরু হল ভাংচুর।চায়ের কেটলী পড়লো এক কাষ্টোমারের গায়ে।সিগারেটের প্যাকেট হল হরিলুট।ক্যাশের খুচরা টাকা ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেলো।এদেরমধ্যে অবশ্য দু-চারজন বাধা দেয়ার চেষ্টা করল। কিন্তু লাভ হলো না।
এখন চাচা ১৫ আগষ্ট ভোরে যখন ফজর নামাজ পড়বেন,তখন কি মোনাজাতের সময় দোয়াটা কি বংগবন্ধুর জন্য হবে,নাকি অন্য কোনো কারনে হবে?
ঘটনা-২
মহাসড়ক
একটা ট্রাক আসছে। আওয়ামী যুবলীগের কর্মীরা হাত উঠিয়ে ট্রাকটা থা্মানোর চেষ্টা করছে।কিন্তু ট্রাকটা টান মেরে বেড়িয়ে গেলো।ড্রাইভারের ভাগ্য খারাপ।সামনে লেগুনার মত একটা গাড়ীর জন্য স্পীড কমাতে বাধ্য হল।কর্মীরা দৌড়ে এসে ড্রাইভার ও হেলপারকে এলোপাতাড়ি ভাবে মারত লাগলো।এর মধ্যে নেতাগোছের একজন এসে হাতের মুঠোয় কি যেন নিয়ে ট্রাকটা ছেড়ে দিলো।ঘটনা জানা গেলো আগে এখানে চাদা ছিলো ২০ টাকা।এখন ৫০ টাকা। কারন একটাই শোকের মাস আগষ্ট। তাই চাদার পরিমান বেশী!!!
এখন যদি ড্রাইভার যদি গালি দেয়,তাহলে গালিটা কার উপড়ে পড়বে?
এতো গেলো আমার আর আমার বন্ধুর বাস্তব এক্সপিরিয়েন্স।কিন্তু পত্রিকায় প্রকাশ, চাদার জন্য নাকি রীতিমত এজেণ্ট নিয়োগ করা হয়েছে।মায়া সাহেবের এখন নতুন পরিচয় শোকের চাদাবাজ।
অনেক পত্রিকায় প্রতিদিন এমন খবর আসে। যেমন কালকের বাংলাদেশ প্রতিদিনের খবর।
শোকের মাসে সরব চাঁদাবাজি
* দল ও সরকার থেকে কঠোর নির্দেশনা নেই * ভোগান্তিতে ব্যবসায়ীরা
http://www.bd-pratidin.com/2014/08/12/23208
তাই এখন তাই আগষ্ট মাস আসলে কেউ অন্তর থেকে আর গায় না, ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত…………’
এখন অন্তর থেকে কষ্টে গায় বাচ্চুর সেই গান।
আর কত এভাবে,
আমাকে কাদাবে
আরো বেশী কাদালে
উড়াল দেব আকাশে।
আসলেই আওয়ামী লীগ আরো বেশী কাদালে জনগন আকাশে উড়াল দেবে অথবা ঝাপ দেবে দেবে বঙ্গোপসাগরে।এছাড়া আর কিছু করার নাই।