আসলে আমাদের দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনটা কোনদিকে?
বড় রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে অনৈক্য সুস্পষ্ট।
বিএনপি ও চারদলীয় জোট মনে করে তারা আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ষড়যন্ত্রের শিকার। আওয়ামী লীগ মনে করে চারদলীয় জোটের কারণেই আজকের এ বিপর্যয়। ওয়ার্কার্স পার্টি মনে করে বিদ্যমান ব্যবস্থার রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের জন্য নানা চুনকাম প্রক্রিয়া চলছে মাত্র। সরকার চায় রাজনৈতিক সংস্কার। চায় এমন একটি সরকার যারা তাদের নিয়ন্ত্রণকে নির্বিঘ্ন করবে। এবং ১/১১ পরবর্তী অর্জনকে অব্যাহত রাখবে।
চারদলীয় জোটের অবস্থা সুদৃঢ় হলেও ১৪ দলীয় জোটে অবিশ্বাস দানা বেঁধেছে। বিএনপির ভেতরে সংস্কারপন্থীরা নরম হলেও তারা সরকারপন্থী। আওয়ামী লীগের ভেতরে সংস্কারপন্থীরা এখনো সক্রিয়।
দলগুলোর নিজেদের ভেতর এবং জোটের ভেতর এ অনৈক্য এবং মতান্তর কি উসকে দেবে অন্য কিছুকে?
কোনো সরল পথে রাজনৈতিক সমাধান এগুচ্ছে না। বরং দিন দিন পরিস্থিতির নানা নতুন মোড় ও বাঁক দেখা দিচ্ছে। সকল পক্ষের মধ্যে অতিসঞ্চিত ক্ষমতার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সবার ক্ষেত্রে এ মনোভাব দৃশ্যমান। অতিসঞ্চিত ক্ষমতার তাপ অস্বাস্থ্যের কারণ হয়। উত্তাপ-উত্তেজনার সৃষ্টি করে। সমাধানের পথ দূরে সরে যায়। সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল ও সরকারের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অবস্থান কি নতুনতর কোনো পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে দেশকে? সরকার যদি জরুরি অবস্থায় নির্বাচন নিশ্চিত করতে চায়, রাজনৈতিক দলগুলো যদি বেঁকে বসে, তাহলে কি আরেকটি ১/১১ আসন্ন?
নির্বাচনের পথ থেকে সরে নতুন মুখের নতুন ক্ষমতার উপস্থিতি কি অনিবার্য? নাকি নির্বাচনবিহীন কথিত দলছুটদের জাতীয় সরকার গঠনের পথে বাংলাদেশ?- এর প্রত্যেকটি সম্ভাবনাকেই এখন আর উপেক্ষ্ করা যায় না।