মাহমুদ আহমেদিনেজাদ - ইরানের প্রেসিডেন্ট । আধুনিক বিশ্বের সবচাইতে ক্ষমতাশীল প্রেসিডেন্টদের একজন । তার বাবা একজন সামান্য কামার । সৎ, সাহসী, পরিশ্রমী, দূরদর্শী নেতা হিসেবে সারা বিশ্বেই আহমেদিনেজাদ আজ সমাদৃত । পেশায় তিনি ছিলেন একজন পি এইচ ডি ধারী তুখোড় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার । তেহরান ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির অধ্যাপক , ছিলেন তেহরানের মেয়র । ১৯৭৯ সালে ইরানের যে হাজার হাজার ছাত্র আমেরিকান দূতাবাস আক্রমণ করে ৫৩ জন কূটনীতিক কে বন্দী করে আহমেদিনেজাদ ছিলেন তাদের মধ্যে একজন । তার জীবন যাপন ও চলাফেরার মধ্যে আমরা খুঁজে পাই আল্লাহ ও তার রাসুলের নির্দেশিত পথের স্পষ্ট ছাপ । একটি উন্নত রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান হয়েও তিনি যে সৎ জীবন যাপন করেন সেটা থেকে আমাদের রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা অনেক কিছু শিখতে পারে ।
তার সেই বিচিত্র জীবনের কিছু চিত্র নিচে তুলে ধরার চেষ্টা করব --
(১) জ্ঞান,বিজ্ঞান,শিক্ষা,প্রযুক্তি,শিল্প-সংস্কৃতি,গবেষণা,অর্থনীতি সব দিক থেকে ইরান আজ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর তালিকায় নিজের স্থান করে নিয়েছেন । দেশের উন্নয়নে তার দূরদর্শী চিন্তাভাবনা ইরানকে আজ অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে ।
(২) অথচ আপনি ভাবলে অবাক হবেন ,এই ক্ষমতাশালী লোকটি একসময় তেহরানের মেয়র থাকাকালে নিজ হাতে রাস্তায় ঝাড়ু দিতেন ।
(৩)আপনি ভাবলে অবাক হবেন, এই লোকটি আজো দুই রুমের একটা ছোট্ট বাড়িতে থাকেন । তার বাসায় দুই একটা কাঠের চেয়ার ছাড়া আরা কোন আসবাবপত্র নেই ।
(৪) আপনি ভাবলে অবাক হবেন, এই লোকটি আজো ঘরের ফ্লোরে একটা পুরনো কার্পেটের উপর বালিশ বিছিয়ে তারপর ঘুমান । তার বাসায় কোন শোয়ার খাট নেই ।
(৫)আপনি ভাবলে অবাক হবেন, এই লোকটি প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় তার ছেলে মাহাদির বিয়েতে মাত্র ৪৫ জন অতিথিকে (২৫ জন নারী এবং ২০ জন পুরুষ) নিমন্ত্রন করেন । তাকে যখন NBC নিউজ চ্যানেলের সাংবাদিক এর কারন জিজ্ঞাসা করেন তখন তিনি অত্যন্ত হাসিমুখে বিনয়ের সাথে বলেন, এর চাইতে বেশি মানুষকে দাওয়াত দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই । ভাবুন, পৃথিবীর একটা উন্নত দেশের প্রেসিডেন্ট বলছে এই কথা । তাও সেই বিয়েতে কোন ভোজের ব্যাবস্থা ছিলনা । প্রত্যেক অতিথি কে একটি কমলা, একটি কলা, একটি আপেল আর ছোট্ট এক টুকরো কেক দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়েছিল ।
(৬) আপনি ভাবলে অবাক হবেন, এই লোকটি সবার আগে সকাল ৭ টায় অফিসে যান ।
(৭) আপনি ভাবলে অবাক হবেন, এই লোকটি আজো সকালে বেরিয়ে যাওয়ার সময় নিজের স্ত্রীর হাতের বানানো সকালের ব্রেকফাস্ট এবং দুপুরের খাবার একটা ছোট্ট কালো ব্যাগে করে সাথে নিয়ে যান । অফিসের কার্পেটের ফ্লোরে বসে তৃপ্তির সাথে সবার সামনে তিনি তার খাবার খান ।
(৮) দিনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় তিনি বাসার দারোয়ান, পথচারী ও সাধারন মানুষের সাথে কথা বলে তাদের সুখ দুঃখ শেয়ার করেন ।
(৯)তিনি যখনি কোন মন্ত্রীকে তার অফিসে ডাকেন তাকে একটা মন্ত্রণালয় চালানোর একটা দিকনির্দেশনা দিয়ে দে । পাশাপাশি তিনি তাদের বলে দেন, রাস্ট্রের পক্ষ থেকে তাদের ব্যাক্তিগত হিসাব নিকাশ ও তাদের নিকট আত্নীয় স্বজনের কার্যকলাপ কঠিনভাবে মনিটর করা হচ্ছে ।
(১০)ভাবতে অবাক লাগে তার ব্যাক্তিগত সম্পত্তি বলতে তেহরানের বস্তিতে অবস্থিত ছোট্ট একটি বাড়ি,
যা ৪০ বছর আগে তিনি তার বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। বাড়িটির নাম Peugeot 504. আপনি শুনলে অবাক হবেন তার ব্যাংক একাউন্টে বেতনের জমানো কিছু টাকা ছাড়া আর কিছু নেই। তেহরান ইউনিভার্সিটি তেতার বেতনমাত্র ২৫০ ইউ এস ডলার ।
(১১) আপনি শুনলে অবাক হবেন, তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য রাষ্ট্র থেকে কোন টাকা নেন না। তিনি
ইউনিভার্সিটি থেকে প্রাপ্ত বেতনের টাকা দিয়ে চলেন।BBC সাংবাদিক তাকে এই নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “সব সম্পত্তি হল রাষ্ট্রের আর তার কাজ হল সেগুলো পাহারা দেওয়া”।
(১২)আপনি শুনলে অবাক হবেন, এই লোকটি এত বেশি পরিশ্রম করেন যে,তিনি সারাদিন ৩ ঘণ্টার বেশি ঘুমানোর সময় পান না । তিনি প্রতিদিন সকাল ৫ টায় ফযরের নামায পড়ে কাজ শুরু করেন আর রাত ২টায় ব্যাক্তিগত স্টাডি ও এশার নামায পড়ে ঘুমাতে যান ।
(১৩)আপনি শুনলে অবাক হবেন, এই লোকটি কখনও নামায বাদ দেন না। নামাযের সময় হলে রাস্তায় ছোট্ট কাপড় বিছিয়ে নামায আদায় করেন। রাষ্ট্রীয় সব বড় বড় নামাযের জামাতে তিনি সব সময় পিছনের সারিতে সাধারন মানুষের সাথে বসতে ভালবাসেন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




