ব্যারিস্টার সুমন একজন ছাত্রলীগ নেতা, পরে একটিভ যুবলীগ নেতা।
তার বর্খাস্তে ছাত্রলীগ বা যুবলীগে তার তার অনুসারি সমর্থকরা কষ্ট পাবে বা অসন্তুষ্ট হবে। কিন্তু হোল উল্টাটা।
কিন্তু ফেবু বা সোশাল মিডিয়াতে দেখা যাচ্ছে কট্টর আওয়ামী বিরোধীরাই সুমনের জন্য বেশী উদবিগ্ন। আর ছাগ ছানাপোনা গুলো তো সুমনের জন্য বুকভাসিয়ে কান্নাকাটি করছে।
তবে কি 'ডাল মে কুচকালা হ্যায়'?
পাকিস্তানে বা ভারতে কোন সরকারি কর্মকর্তা 'জয় হিন্দ' বা 'পাকিস্তান জিন্দাবাদ' বলে বক্তৃতা শেষ করলে বিনা তর্কে সবাই হাততালি দেয়। এরকমটা বাংলাদেশ বাদে পাকিস্তান ভারতে সঠিক। বাংলাদেশে বেঠিক।
ব্যারিস্টার সুমন আজ প্রথমআলো কে বলেছেন
সবদেশ পারলেও বাংলাদেশে কোন সরকারি বেতনবুক্ত কেউ 'জয়বাংলা' বলতে পারবে না।
বললে নৈতিকতা নিরোপেক্ষতা হারাবে।
বিএনপি জামাত অবস্য সবসময় দাবী করে আসছে " মুক্তিযুদ্ধ ও জয়বাংলাকে আওয়ামীলীগ কুক্ষিগত করে দলীয় স্লোগান বানিয়ে ফেলেছে।
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে জয়বাংলাকে কেউ দলীয় স্লোগান বানায় নি।
জয়বাংলা ছিল মুক্তিযুদ্ধ পুর্ববর্তি আন্দোলন সংগ্রামের প্রধান স্লোগান। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান স্লোগান, মুক্তিযোদ্ধাদের সবচেয়ে উদ্দিপক স্লোগান পরবর্তিতে স্বাধীন বাংলাদেশের সার্বজনিন স্লোগান, সব দলের স্লোগান।
এ ব্যাপারে ১৯৭১ পর ৫ বছর কোন বিতর্ক ছিলনা।
যুদ্ধ শুরু হয়েছিল জয়বাংলা বলে। বিজয়ও হয়েছে জয়বাংলা বলে। জিয়া বহুরার জয়বাংলা বলেছে, বিচিত্রায় তার লেখা আর্টিকেলে তার লেখায় এখনো জয়বাংলা পাওয়া যায়। অটোগ্রাফ দিতেন জয়বাংলা লিখে তারপর সাইন।
কিন্তু ১৯৭৫এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ঘাতক জিয়ার দল দল কার্ফিউ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও জয়বাংলা শব্দগুলো পরিত্যাগ করে। নতুন দল করে, যুদ্ধাপরাধীদের দেশে ফিরিয়ে আনে।
১৯৭৫এর পরবর্তি ২১ বছর মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও জয়বাংলা শব্দগুলো। কোন মিডিয়াতে প্রচার করতে দেয়া হয় নি,
পাকিস্তান বা রাজাকার শব্দও নিষিদ্ধ ছিল। এমনকি পুরোনো বাংলাসিনেমার ফিল্ম থেকে পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর ছবি ও জয়বাংলা শব্দগুলো ইরেজ করে ফেলে।
এখন আওয়ামীলীগকে অপবাদ দেয় - 'জয়বাংলাকে দলীয় স্লোগান বানানো হয়েছে'।
বাস্তবতা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের নাম নিশানা মুছে ফেলতে জয়বাংলাকে পরিত্যাগ করেছিল ঘাতক বিম্পি-জামাত, সেই জয়বাংলা পরিত্যাগ এখনো বহাল।
বিএনপি জামাত ও সমমনা সমর্থকরা এখনো ৪৫ বছর জাবৎ জয়বাংলা বা বঙ্গবন্ধু নামটি ভুলেও উচ্চারন করে না। এখনো করে না।
ব্যারিস্টার সুমনকে খুবএকটা দোষ দেয়াও যায় না।
১৯৭৫এর পরবর্তি ২১ বছর মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও জয়বাংলা শব্দগুলো। কোন মিডিয়াতে প্রচার করতে দেয়া হয় নি,
পাকিস্তান বা রাজাকার শব্দও কঠিনভাবে নিষিদ্ধ ছিল। বিটিভিতে পাকিস্তানি হানাদারকে সুধু হানাদার বলা হতো।
তাই ৮০-৯০ জেনারেশনের বিটিভি দেখে বড় হওয়া ব্যারিস্টার সুমন সহ সে সময়ে জন্ম নেয়া তরুণদের মানসপটে এটা একদলিও স্লোগান মনে হতেও পারে।
তবে যাই হোক
যাদের আপাত জয়বাংলা নিয়ে আপত্তি, তাদের আপত্তির তালিকা আরো দীর্ঘ।
১। জাতীয় পতাকা নিয়ে তাদের স্পষ্ট আপত্তি।
২। জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে তাদের প্রবল আপত্তি। হিন্দুয়ানি। এখুনি বিলুপ্তি চায়।
৩। জাতীর পিতার ব্যাপারে আপত্তি আছে, তবে সেটা হজরত ইব্রাহিম, কায়দে আজম, গোলাম আজম, মাওলানা মৌদুদি হলে সমস্যা নেই।
৪। বঙ্গবন্ধু নামটি উচ্চারন করা যাবে না, অস্লিল ভাবে ডাইরেক্ট নাম ধরে ডাকতে হবে, নইলে নৈতিকতা নিরোপেক্ষতা হারাবে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ৭:৩০