পৃথিবীর কোন ভাষা কোন সংস্কৃতি একক মহান বা স্বতন্ত্র দাবী করতে পারে না।
মানব কুল বিবর্তনে উদ্ভব হয়ে আফ্রিকায় জাম্বেজি অববাহিকার দক্ষিণের বতসোয়ানা আফ্রিকার বিশাল হ্রদ অববাহিকায় বসতি হয়ে এক পর্যায়ে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়েছিল। হয়েছিল বিচ্ছিন্ন ভাষা বিচ্ছিন্ন সংস্কৃতি হয়েছিল বহুমুখি ডাইভারশান।
ইসলামী সংস্কৃতি বলে কোনো সংস্কৃতি নেই। কোন কিতাবেই নেই।
ছোট্ট আরব- পারস্য গন্ডির ভেতরেই মুসলিমদের সংস্কৃতি ভিন্ন ভিন্ন। এদেশে জামাতি শ্রেণীর ধর্ম ব্যাবসায়ী টাউট বাটপার ইসলামী সংস্কৃতির নামে মরুভূমির যাযাবরদের বর্বর সংস্কৃতি চালু করতে চায়।
তারা রাষ্ট্রীয় কিছু আমলা পৃষ্ঠপোষকতায় কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও শেষ পর্যন্ত তারা কখনোই সফল হতে পারবেনা।
সময়ের প্রেক্ষাপট বা দাবীতে মানবসমাজ এক একটা আচার তৈরী করে, যেটা সর্বজনপ্রিয়-সমাদৃত হয়ে মানুষের প্রাত্যহিক বা বাৎসরিক বা নির্দিষ্ট কোনো উপলক্ষ্যে পালিত হয় এবং নিয়মিত পালনে তা কৃষ্টি-সংস্কৃতিতে সংযুক্ত হয়।
সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষ কোনকিছুই রেডি পায়নি বা ধর্ম-বর্ণ-গোত্র ভেদে আচার আচরণ, কৃষ্টি-সংস্কৃতি সৃষ্টির প্রথমদিনেই তৈরী হয়নি-করেনি। হয়েছে করেছে সমাজবদ্ধতার চাহিদায় নিজেদের প্রয়োজনে ও সময়ের দাবী বা প্রেক্ষাপটে, এবং ধাপে ধাপে হয়েছে। কখনো তা পরিবর্তিত হয়েছে বা পরিবর্ধিত হয়েছে বা পরিমার্জিত হয়েছে বা বিলুপ্ত হয়ে নতুন কিছু সংযজন হয়েছে।
ফসল সমৃদ্ধ পশ্চিম ভারত, পান্জাবে বৈদিক যুগ থেকে চলমান এই উৎসব আরও স্মরণীয় বরণীয় হয়ে উঠে আরেক ভিন্নতায় মোগল আকবরের আমলে মিশ্রধর্মের প্রভাবে।
১৯৮৯ সালে ঠিক সেভাবেই পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়েছিলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার মাধ্যমে জনপ্রিয়-সমাদৃত হয়ে তা এখনো চলমান আছে, বাংলা নববর্ষ পালনের একটি মাধ্যম হিসেবে টিকে গেছে এবং ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের সাংস্কৃতিক আচারের তালিকাভুক্ত হয়েছে।
বাংলা নববর্ষ উৎসব উদযাপন শুধু বাঙালীর নয়, এই অঞ্চলের বাঙালী ছাড়াও আরও বহু জাতির মানুষ একইসময়ে নতুন বছর উদযাপন করেন; সেজন্য এটাই হচ্ছে একমাত্র উৎসব যাতে এই অঞ্চলের গ্রাম-শহরের বহু জাতি, ভাষা, লিঙ্গ, ধর্ম ও মতের মানুষ নানাভাবে- জমিতে, হাঁড়িতে, ফুলে, বৃক্ষে, নদীতে, পোশাকে, খাদ্যে, গানে, নৃত্যে, প্রার্থনায়, আনন্দে এবং সহমর্মিতায় গা ভাষিয়ে দেয়। এই অঞ্চলের প্রাণবৈচিত্র নির্ভর এই উৎসবে আড়ম্বর কম, কম ব্যয়বহুল, কিন্তু প্রাণবন্ত। এই উৎসব সর্বজনের, তাই পাহাড়ে সমতলে সকল বৈষম্য- নিপীড়ন, ইসলামের নামে নামে প্রাণবিনাশী সব অপতৎপরতা বন্ধের দাবি এই উৎসবের অনিবার্য উচ্চারণ।
সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১:৩০