somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জেনে রাখা ভালো -দুই ধর্মের মানুষের বিয়ের পদ্ধতি!

১০ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিজ নিজ ধর্মীয় বিশ্বাস অটুট রেখে সংসার করছেন অনেক দম্পতি। বেড়ে উঠছে নতুন একটি প্রজন্ম, যাদের উত্তরাধিকার সূত্রে ধর্মীয় কোন পরিচয় নেই। এটাকে সমাজের অনেক বড় পরিবর্তন বলছেন সমাজবিজ্ঞানীরা ধর্ম পরিবর্তন না করেই দু’টি ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের মধ্যে বিয়ের ঘটনা বাড়ছে। একই ধর্মের দু’জন বিয়ে করে ঘর সংসার করতে হবে এমন ধারণা থেকে বের হয়ে আসছেন অনেকেই। দুই ধর্মের দু’জন তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় বিশ্বাস ঠিক রেখে বিয়ে করছেন। আচার-আচরণ পালন করছেন যে যার বিশ্বাস মত। এভাবে দেশের আইন অনুযায়ী বিয়ে করে সংসার করছেন অসংখ্য দম্পতি। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের জুটি এখন অনেক। আর এই বিয়ের ফলে বেড়ে উঠছে নতুন একটি প্রজন্ম। যারা উত্তরাধিকার সূত্রে কোন ধর্মীয় পরিচয় বহন করছেন না। আধুনিক সমাজে সেটা প্রয়োজনও মনে করছেন না অনেকে। এই উত্তরাধিকারীদের মধ্যে আবার কেউ কেউ নিজেই একটি ধর্ম বেছে নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ধর্ম বিশ্বাস থেকে সরে আসছেন। তবে রাষ্ট্র আইন করে এমন বিয়ের ব্যবস্থা করলেও এইসব পরিবারের সম্পত্তি বন্টনের জন্য কোন আইন নেই। বাংলাদেশে ইসলাম, হিন্দু ও খৃষ্টান ধর্মীয় আইনে সম্পত্তি ভাগ হয়। কিন্তু এই পরিবারের সম্পত্তি যদি বাবা-মা ভাগ করে দিয়ে না যান বা উইল না করেন, তবে ভাগ করার কোন নিয়ম নেই।

বাংলাদেশের বিশেষ বিবাহ আইন ১৮৭২ (সংশোধিত ২০০৭) অনুযায়ী এই বিয়ে হচ্ছে। এই আইন অনুযায়ী, একজন মুসলমান, হিন্দু, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, ইহুদি বা অন্য যে কোন ধর্মের যে কেউ যে কারো সাথে বিয়ে করতে পারবে। ধর্মের পরিবর্তন করা প্রয়োজন হবে না। অথবা দু’জনই ধর্মীয় বিশ্বাস বাদ দিয়ে বিয়ে করতে পারবে। অথবা একজন অন্যজনের ধর্ম মেনে নিতে পারবে। তবে নাবালকের সাথে কেউ বিয়ে করতে পারবে না। আইন অনুযায়ী এই বিয়ে রেজিষ্ট্রি করার জন্য সরকার একজনকে নিয়োগ দিয়েছে। বাংলাদেশে একজনই এই বিয়ে পড়িয়ে থাকেন।

প্রায় প্রতিমাসেই এই বিয়ে হচ্ছে। গত কয়েক বছরে এই বিয়ের হার বেড়েছে। ১৯৮৩ সাল থেকে এপর্যন্ত এক হিসেবে দেখা গেছে, প্রায় ৫০০ দম্পত্তি কোন ধর্ম পরিবর্তন না করেই এমন বিয়ে করেছেন। এদের মধ্যে ছেলে হিন্দু, মেয়ে মুসলমান। কিম্বা ছেলে মুসলমান, মেয়ে হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী। অনেকে আছেন আবেগে বিয়ে করছেন। অনেকে জেনে বুঝে গন্ডি ভাঙ্গার তাগিদে। অনেক পরিবার আছে এই বিয়ে মেনে নিচ্ছেন, আবার অনেক পরিবার আছে যারা মানছেন না।

প্রসঙ্গত, সরকারিভাবে এমন বিয়ে পড়ানোর একমাত্র স্থান পুরানো ঢাকার পাটুয়াটুলি। প্রাণেশ সমাদ্দার এই বিয়ের রেজিস্ট্রার। একই সাথে তিনি রাজধানীর পাটুয়াটুলির শরত্চন্দ্র ব্রাহ্ম প্রচারক নিবাসের আচার্য ও ট্রাস্টি। সেখানেই থাকেন তিনি। শুধু ঢাকা নয় দেশের অন্যান্য জেলা থেকেও ছেলে মেয়েরা আসে বিয়ে করতে। বিশেষ করে যারা দেশের বাইরে যেতে চায় তাদের আসতেই হয়। কারণ কোর্টে বিয়ে করলে বিয়ে রেজিস্ট্রির কোন প্রমাণপত্র পাওয়া যায় না। অবশ্য কোর্টে দুই ধর্মের দু’জন বিয়ে করতে পারে না। অনেক সময় যারা জানে না তারা প্রথমে কোর্টে যায়। আর তখন আইনজীবীরা এখানে নিয়ে আসে। এখানে বিয়ে হলেও ডিভোর্স করানো যায় না। ওটা করতে হয় কোর্টে।
আইন মতে, বিয়ের ১৪ দিন আগে রেজিস্ট্রারের কাছে নোটিস দিতে হয়। এরমধ্যে কারো কোন আপত্তি থাকলে সে তা জানাবে। তারপর তিনজন সাক্ষী আর পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে হাজির হতে হবে। নির্দিষ্ট ছকে ছেলে-মেয়ে দু’জন স্বাক্ষর করবে আর স্বাক্ষর করবে তিনজন সাক্ষী। এতেই হয়ে যাবে দু’জনের বিয়ে। সামাজিক আর কোন আনুষ্ঠানিকতা এখানে নেই। তবে বিয়ের পরে কেউ কেউ মিস্টি নিয়ে আসেন। উপস্থিত সবাই মিষ্টি খেয়ে নব দম্পতির মঙ্গল কামনা করেন।

আরও উল্লেখ্য, লেখক কিন্তু এই রকম বিয়ের একদম পক্ষপাতী নন। শুধু আইন টা তুলে ধরতে এই প্রয়াস।


বর্তমানে এই বিয়ে পড়াচ্ছেন যিনি তার সাইন বোর্ড এখানে দিয়ে দিলাম।
যোগাযোগ করে নিয়েন। কিন্তু, কোন দালাল এর দ্বারস্থ হবেন না দয়া করে। তাতে সর্বনাশ হওয়ার ১০০ ভাগ সুযোগ আছে।


সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৭
১৪টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×