ঝাউবনে ঝাউগাছকে শত ছিদ্র করে পাতার ফাঁক দিয়ে সূর্য ঠিকই মাটিতে তার কিরণ ফেলে।
নির্জন রাতে ঝাউবনে একা হেঁটে গেলে শোঁ শোঁ শব্দ ভয়ের সৃষ্টি করে।
ইন ফ্যাক্ট ভয়টা ছোটবেলায় মনে গেঁথে দেয়া হয়েছিল।
ছোটবেলায় আমার পৃথিবীটা ছিল ছোট। বাড়ি এবং তার আশপাশের পুকুর পাড়, মাঠ, ঝোপঝাড়, পরিত্যক্ত ইটের ভাটা, পীরের মাজারের মেলা, উঠোনে কামরাঙ্গা, পেয়ারা, বরই, আম ইত্যাদি নানা ফল ও ফুলের গাছ, পুরনো পরিত্যক্ত জ্বিনের দালান, মাঠের কিনারে কুয়ো, স্কুল থেকে ফেরার পথে ধান গাছের মধ্য দিয়ে বনবন শব্দের ভেতর হেঁটে যাওয়া- এসবই ছিল আমার ছোট্ট পৃথিবীর উপাদান।
ঝাউবন নিয়ে কিছু ভীতিকর কথা শুনেছিলাম সেই সময়টাতেই। ঝাউবনে ভূতের বাস, বাতাসের শব্দ হল ভূতের হুঙ্কার।
রাত্রিবেলায় চাঁদের আলোয় ভূতের গল্প শুনতাম। এজন্য অপেক্ষা করতাম কখন লোডশেডিং হবে।
সময়গুলো ছিল ফ্যান্টাসিতে ভরপুর। এখনকার বাচ্চাদের দেখলে অনেক আফসোস হয়। তারা এই মজার মজার মুহূর্তগুলো পাচ্ছেনা।
টিভির কার্টুন, কম্পিউটারের ভিডিও গেইমই তাদের খেলাধুলার উপকরণ।
আমরাও কেমন যেন ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। আমাদের উচিত বাচ্চাদের মনে রূপকথার বীজ বুনে দেওয়া।
তারা যদি কল্পনায় বাঁচতে না শিখে, কল্পনায় জীবনটা সুন্দর করতে না পারে, তবে যান্ত্রিক জীবনে তাদের ভবিষ্যতের পানে এগিয়ে যাওয়াটা মোটেও ফলপ্রসূ হবে না।