somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনি ফাজিল? না কামিল?

১৯ শে মে, ২০০৬ রাত ৮:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বস্নগ-বান্ধবেরা এক কাজ করম্নন, আপনাদের কষ্টার্জিত ডিগ্রীটা একটানে ছিঁড়ে ফেলুন, কারণ যে অর্থ, পরিশ্রম আর মেধার বিনিময়ে আপনি ডিগ্রীটি অর্জন করেছিলেন তা বোধ করি পুরোটাই বৃথা গেলো। হয়তো আপনারা শুনে থাকবেন যে, বাংলাদেশের ৰমতাসীন জোট সরকার মাদ্রাসা শিৰা বোর্ডের ফাজিল ও কামিলকে যথাক্রমে ডিগ্রী ও মাস্টার্স পাশের মর্যাদা দিতে যাচ্ছে। ছাত্র শিবির সরকারের এই পদৰেপকে দেখছে তাদের বৃহত্তর বিজয় হিসেবে। বুঝতেই পারছেন, কেন তাদের এই আনন্দ-উলস্নম্ফণ।

মাদ্রাসা শিৰা ব্যবস্থা সম্পর্কে বলার কিছুই নেই। কারণ যে বিদ্যাশিৰা 'ফিসাবিলিলস্নাহ্' অর্থাৎ আলস্নহ্র ওয়াসত্দে তাতে যে পার্থিব কোনও যোগাযোগ নেই তা এই বিদ্যা চর্চার শুরম্ন থেকে আজ পর্যনত্দ গালভরে উচ্চারণ করে থাকেন মাদ্রাসা শিৰার পৰের প্রবক্তারাই। এতোদিন মাদ্রাসা অধীত বিদ্যা বিক্রি করে তাদের বেশ চলে যেতো, সরকার ও বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের দান-ধ্যানে শিৰাজীবন শেষ করে তারা মোলস্নাগিরিতে লেগে যেতো। ফলে থাকা-খাওয়া নিশ্চয়তার সঙ্গে সঙ্গে জীবনের আনুসঙ্গিক প্রয়োজনগুলিও মিটে যেতো। মোটকথা শুক্রবারের মসজিদে সিনি্ন, এর গাছের কদু, ওর গাছের সিম, কিংবা এর গরম্নর দুধ আর ওর গাছের আমে এই মোলস্নাদের জীবন বেশ আমে-দুধেই কেটে যাচ্ছিলো বলা যায়। ধর্মের বয়ান আর মানুষকে মিথ্যা ভয় দেখিয়ে আরও যে আয় হতো সেটা বাড়তি। কিন্তু এখন তাদের সংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমনই তাদের পোষাচ্ছে না এই 'লিলস্নাহ্'-য়, তারা এখন সরাসরি ভাগ চাইছে ৰমতার। এতোদিন ধর্মবিক্রির বিষয়টা ছিলো প্রাথমিক পর্যায়ের এখন তারা একে পুরোপুরি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাইছে।

সরকারী হিসেব মতে বাংলাদেশে মাদ্রাসার সংখ্যা রয়েছে কুড়ি হাজার। কিন্তু এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি। কিন্তু সরকারী হিসেবটাই গ্রাহ্যে এনে যদি প্রতিটি মাদ্রাসায় গড়ে পাঁচশ ছাত্র থেকে থাকে তাহলে এদের সংখ্যাটা কতো দাঁড়ায়? এদের একটি ুদ্রাংশও যদি অস্ত্র পরিচালনায় প্রশিৰিত হয়ে থাকে তাহলে বিপদটা টের পাচ্ছেন তো? বাংলাদেশে সেনা বাহিনীর সংখ্যা কতো? একথাতো মানবেন যে, সেনাবাহিনীকে গুলি চালানোর জন্য নির্দেশ দানের জন্য একজন মেজরের প্রয়োজন হয় কিন্তু ওই জামায়াত-শিবির দ্বারা প্রশিৰিত মাদ্রাসা ছাত্ররা কোনও নির্দেশের অপেৰায় থাকবে বলে মনে করেন কি?

আপনাদের কি মনে হয় না যে, বাংলাদেশে এই যে মূলধারা আর জামায়াত-শিবির সমর্থিক মৌলবাদী রাজনীতির যে সশস্ত্র বিরোধ বাংলাদেশে চলছে তা আসলে বাংলা মিডিয়াম আর এই বিপুল সংখ্যক মাদ্রাসা শিৰার মধ্যেই বিরোধ। এতোদিন এটা প্রকট ছিল না কারণ মাদ্রাসা ছাত্ররা রাষ্ট্রৰমতার ভাগ চায়নি, এখন চাইছে বা জামায়াত তাদের হয়ে চাইছে, এতে অবশ্য সাধারণ মাদ্রাসা ছাত্রদের কোনও লাভ হবে না, ৰমতার খুঁদ-কুড়ো জামায়াত-শিবিরই লুটেপুটে খাবে, সেটা নিশ্চিত। যে কারণে তারা ফাজিল আর কামিলকে এখন ডিগ্রী আর মাস্টার্সের সমমর্যাদার করে নিচ্ছে। একবার চোখ বন্ধ করে ভেবে দেখুন, বিসিএস পরীৰার হলে একই সঙ্গে প্রতীযোগিতায় বসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আনত্দর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী ধারী সাদিক মোহাম্মদ আর কলারোয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল পাশ করা ছাত্র ওয়ালি রহমান _ দৃশ্যটা কি গা শিউরানো নয়?

বিশ্ব যখন সামান্য সামনে এগুনোর জন্য হা-পিত্যেস করে মরছে তখন জামায়াত-বিএনপি জোট সরকার বাঙালির পা মুড়ে উল্টো করে দিচ্ছে ভ্থতের মতো, যাতে তারা পেছন দিকে দ্রম্নত গতিতে গিয়ে গহীন খাঁদে পড়তে পারে। ডারউইনের সৃষ্টি তত্ত্বের সঙ্গে লড়াই বাঁধিয়ে দিচ্ছে চৌদ্দশ বছর আগে একজন উর্বর মসত্দিস্কের পুরম্নষ, যার বিদ্যা-বুদ্ধির দেঁৗড় মক্কা আর মদীনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ, যে ষাটোর্দ্ধ বয়সে এক গৌরী কন্যাকে দিয়ে নিজের কামতৃষ্ণা মিটিয়েছে তার রেখে যাওয়া এক কিতাব মুখসত্দকারীদের। আচ্ছ বস্নগ-বান্ধবরা একটা কথা বলেন, আপনারা শার্ট-প্যান্ট, জুতো, কম্পিউটার ইত্যাদি পুরোনো হলে ফেলে দিয়ে নতুন কিনে আনেন, ভাত পুরনো হলে খেতে ইচ্ছে করে না, এমনকি চাকুরিও একঘেয়ে হলে অন্য চাকুরি খুঁজে নেন, সবচেয়ে বড় কথা হলো জীবনের সবকিছু পুরোনো হলে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করেন, কিন্তু ধর্মের ৰেত্রে আমরা কেন একে পুরোনো বলে ছুঁড়ে ফেলি না বলুন তো? ধর্ম কি পুরোনো হয় না? চৌদ্দশ বছর পরে এসে যা অযৌক্তিক আর যুগ-অচল তা অাঁকড়ে ধরে রাখার কি সত্যিই কোনও অর্থ আছে? আসুন না, প্রশ্নগুলি একবার ভেবে দেখি।

তবে হঁ্যা, তার আগে আসুন, আমরা যারা বাংলা মিডিয়ামে পড়ে আজ ডিগ্রী, মাস্টার্স কিংবা পিএইচডি শেষ করেছি, কিংবা করতে চাইছি তারা আগে নিজেদের ডিগ্রীগুলি হয় ছিঁড়ে ফেলি নয় আমরা ফাজিল কিংবা কামিল হয়ে যাই _ এটাই বোধ হয় আমাদের শেষ পথ, তাই না?
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৭৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×