দুপুর 12টা পর্যন্ত জানি যে আমরা যাচ্ছি...লেকিন একে একে যখন সবাই আমাদের বাসায় পৌঁছল তখন মনে ক্ষিণ সন্দেহ উঁকি-ঝুঁকি দিচ্ছিল...হয়তো পিকনিক ক্যানসেল...যে সমস্যাগুলোর কথা ভাইজানেরা বলছিল...
1) যেকোন সময় বৃষ্টি এসে যেতে পারে,
2) জাবি'র পোলাপান ডিস্টার্ব করতে পারে...(ভীতু সব কয়টা)
3) সবচেয়ে বড় কথা বাউন্ডুলে রাজী হচ্ছিল না গাড়ী ড্রাইভ করতে...(ভয়ে, যদি ঝড় শুরু হয় আর গাছের ডাল ভেঙে গাড়ির উপরে পরে...)
যাই হোক অবশেষে প্রোগ্রাম ক্যানসেল দেখে দাদা বাসা থেকে বিদায় নিলেন । আমাদের মন খারাপ দেখে...বাউন্ডুলে নিজ উদ্যোগে আমাদেরকে খাওয়ানোর জন্য তোয়ালে কাঁধে নিয়ে রান্নাঘরে ঢুকে পড়লেন... আমাদেরকে আশ্বাস দিলেন, আজ না হয় সামান্য খানাপিনা'তেই সবুর কর,পরে.....না হয় দেখা যাবে পিকনিকের ব্যপারটা....কিন্তু উনাকে কি করে বুঝাই যে খাওয়াটাই বড় না...খোলা জায়গায় সদলবলে হৈ-হুল্লোড় করতে না পারার দুঃখে....
বাউন্ডুলে যখন রান্নাঘরে রান্নার কাজে ব্যস্ত তখন আমরা মানে আমি, শমর্ী আর রশ্মী আপু জোড়ছে আড্ডা মারছিলাম...আতিয়া হঠাৎ মেহেদীর টিউব নিয়ে উপস্থিত হলে সবাই মিলেমিশে একটা মেহেদী উৎসব পালন করে ফেল্লাম.....আতিয়া সবার হাতেই one, two... এইসব হাবিজাবি লিখে বিদায় হলে আমি শমর্ী আর আপুর হাতে মেহেদী লাগিয়ে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরছিলাম আর মাঝেমধ্যে রান্নাঘরে গিয়ে ধমক-ধামক দিয়ে আসছিলাম.....
কিন্তু আমরা বাসাতেই কম মজা করিনি...সন্ধ্যায় মোটু ভাই (বাইন্ডুলে) আমাদের জন্য নিজ হস্তে রন্ধিত হালিম, ন্যাগেট, মুরগির ব্রোস্ট পরিবেশন করেন....এগুলোর সাথে ছিল চিপস, কোক এবং সবশেষে আইসক্রিম...হা হা হা...আইসক্রিম নিয়ে যা মারামারি আর কারাকারি শুরু হয়েছিল না...বড়'দা শমর্ী এবং রশ্মি আপুকে (যেহেতু মেহমান) বেশি আইসক্রিম দেয়াতে সকলে এর প্রতিবাদ করে....রাফাত তো বিরাট ভাষন দিয়ে ফেললো.....খাওয়ার মাঝখানে কারেন্ট চলে যাওয়াতে চোরের আবির্ভাব ঘটল, আতিয়ার প্লেট থেকে মুরগী, রাফাতের প্লেট থেকে ন্যাগেট...আমরা যখন এইসব ইজি কাজে বিজি ছিলাম তখনই দাদা'র ফোন....খাওয়া দাওয়ার কাহিনী শোনা মাত্রই তিনি এক দৌড়ে বাসে ঝুলে পড়লেন....এত করে বললাম যে আইসা লাভ নাই সব শেষ কিন্তু তেনার...মন মানে না মানে না...যাই হোক উনার জন্য বহু কষ্টে শুধুমাত্র একটুকরা মুরগী সরানো গেল...উনি আসামাত্রই টেবিলের এঁটো প্লেট দেখিয়ে বলা হল কোন বাটিতে কি ছিল...উনার চেহারা হয়েছিল দেখার মতবারবার আফসোস করছেলেন-কেন যে ফেরত গেলাম....
খাওয়া শেষে সোজা ছাদে....সেখানে কিছুক্ষণ আড্ডা....আর ঝড়ের সাথে মিতালী....
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০