somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরন ( ফেইস বুকে ইভেন্ট খোলার মত সহজ কাজ না)

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঋতুচক্রের আবর্তনে এক এক ঋতুতে মানুষের জীবনযাত্রায় যুক্ত হয় পরিবর্তনের ধারায় ভিন্ন ভিন্ন মাত্রা,শীত নামার সময় এসে গেছে।ধীরে ধীরে শৈত্য প্রবাহের তীব্রতায় আচ্ছন্ন হয়ে যাবে। এক একটি শৈত্য প্রবাহ ধেয়ে আসবে,আর জনজীবন হয়ে পড়বে স্থবির ও বিপর্যস্ত।নেমে আসবে কুয়াশার ঘন আস্তরণ,ঢাকা পড়ে যাবে সূর্যের মুখ,রৌদ্রের তেজ থাকবে না। হাড়কাঁপানো শীতে আত্মরক্ষার সঙ্গত উপায়-উপকরণ নেই এদেশের দারিদ্র্য-আচ্ছন্ন বিশাল জনগোষ্ঠীর।এক খণ্ড গরম কাপড়ের আশায় জেলার গরীব দুস্থ পরিবারেরসদস্যরা বিত্তবানদের দিকে তাকিয়ে থাকবে। এক টুকরো গরম পোশাকই পারে ছিন্নমূল মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। প্রতি বছর এই সব মানুষের জন্য কেউ কেউ তাদের সাধ্য মত বাড়িয়ে দেন সাহায্যের হাত।



সেচ্চাসেবী সংগঠন সময় এর আয়োজন আমরা এবার দক্ষিন অঞ্চলের জেলা বরগুনার তালতলীতে শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরন করলাম।তার কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখলাম যারা এই ধরনের সেবামূলক আয়োজন করতে আগ্রহী তাদের জন্য।


কিভাবে আপনি দরিদ্র এসব শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াবেনঃ

যে কেউ চাইলেই পারবেন। শুধু আপনার প্রবল ইচ্ছা শক্তি থাকাটাই যথেষ্ট। সবার আগে দরকার একটা সুন্দর পরিকল্পনা।
প্রথমে একটা তালিকা করুন কত জন কাজ কাজ করতে আগ্রহী।

কথা বলুন সবার সাথে লিষ্ট অনুযায়ী।
ছোট বড় সবার মতামতের গুরুত্ব দিন অনেক সমস্যার সহজ সমাধান পাবেন। কাপড় সংগ্রহ করার জন্য নির্দিষ্ট তারিখ ঠিক করুন।
কে কোন কোন এলাকার কাপড় সংগ্রহ করবে ঠিক করুন।

কাপড় সংগ্রহঃ



কোন ধরনের কাপড় বিতরন করবেন নতুন, পুরাতন, নতুন-পুরাতন এক সাথে নাকি আর্থিক সাহায্য? আমার মতে নতুন-পুরাতন অপশনটাই ভাল। এতে কাপড়ের পরিমান বেশি হবে। আর্থিক বিষয় না টানাই ভাল তবে যদি আর্থিক সাহায্য পান তা যোগ করে দিতে পারেন নতুন বস্ত্র ক্রয় করার কাজে।

কে কোন এলাকায় কাপড় সংগ্রহ করবেন তা আগেই যেহেতু ঠিক করা এবার নেমে যান কাজে। নিজ বাসা থেকেই আগে শুরু করুন। নিজ এলাকা, পারা মহল্লা ভার্সিটি হল ইত্যাদি জায়গা থেকে কাপড় সংগ্রহ করতে পারেন। এলাকার গলির মোরের চায়ের দোকান, খেলার মাঠ, মসজিদের সামনে একটা বক্স রাখতে পারেন যাতে লোকজন আপনার আয়োজন সম্পর্কে জানতে পারে অপরকে জানাতে পারে। কার বাসায় গিয়ে তাকে পেলেন না পরে সে ঐ বক্সে কাপড় জমা দিতে পারে। আপনার পরিচিত কেউ এক জন হয়ত দেশের বাহিরে আছে কিন্তু এই ব্যাপারে তার হাত প্রসারিত সমস্যা নেই মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে পেতে পারেন আর্থিক সাহায্য। এভাবে সবাই মিলে যথা সম্ভব দ্রুত কাপড় সংগ্রহ করে ফেলুন কাজ এখন অনেক বাকি।

কোথায় কাপড় বিতরন করবেনঃ

অনেকেই ভাবছেন দূরে গিয়ে লাভ কি! শহরের কোন বস্তি বা দরিদ্রদের মাঝে কাপড় দিয়ে আসলেই হল। একটু ডিপলি ভাবুন শহরের দরিদ্র মানুষেরা হয়তো ৫০টাকা ১০০টাকায় একটা কাপড় ঠিকই জুটাতে পারে আর কাছাকাছি সমার্থবানদের সহায়তা তারা পেয়েই থাকবেন।কিন্তু গ্রামের দিকের দরীদ্রদের জন্য একটা কম্বল বা সোয়েটার কেনা অনেক কঠিন ব্যাপার। অনেক কস্ট করে কাপড় সংগ্রহ করলেন এবার আরেকটু কস্ট করে চলুন না দূরে কোথাও যেখানে সুর্য মামাও তার আলো আর উষ্ণতা পৌছাতে কৃপণাতাবোধ ।


কিভাবে কাপড় বিতরন করবেনঃ



এলাকা ঠিক। আপনার সিলেক্ট করা জায়গা যদি গ্রাম হয় তাহলে চলে যান ইউনিয়ন পরিষদে। সেখানে গ্রামের ইউপি সদস্যের সাথে কথা বলুন তার এলাকায় আপনার কাপড় বিতরন করবেন। এতে সুবিধা হবে আপনি ঐ এলাকায় বস্ত্রহীন কত জন মানুষ আছে তার মধ্যে বৃদ্ধ,নারী বা শিশু কত জন! ইউপি সদস্যদের কাছে নিজ নিজ এলাকার তালিকাও থাকে অনেক সময়। এতে সুবিধা হবে আপনার সংগ্রহীত কাপড়ের সুষম বন্টন হবে।আর একটা বাড়তি সুবিধা ইউপি কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই এলাকায় জানিয়ে দিতে পারবে আপনাদের আয়োজনের খবর।


কাপড় বিতরনের পদ্ধতিঃ






আপনার সংগ্রহ করা কাপড় হিসেব করে সহজেই ঠিক করে ফেলুন আপনি কত জনকে কাপড় দিতে পারবেন এবং তার মধ্যে নারী, পুরুষ বা শিশু কত জন সেই হিসেবে ইউপি সদস্যদের বলুন।( আমরা ২০০ মানুষের তালিকা করেছিলাম) কাপড় বিতরনের দিন এলাকার কোন ভাল জন প্রতিনিধি রাখতে পারেন।

পরিবহনঃ



আপনার এত কস্টের সংগ্রহ করা কাপড় এবার নিয়ে যেতে হবে গন্তব্যে সাথে থাকবেন আপনি।সবথেকে ভাল হয় লোক বুঝে একটা পিকাআপ ভাড়া করলে। পিকআপের ভাড়া কিরকম হবে আগেই জেনে নিন। আর পরিচিত কার যদি পিকাআপ ভ্যান থেকে থাকে তাহলে একদিনের জন্য নিয়ে নিন। তাহলে কেবল তৈল খরচ দিয়েই বাকিটা সেইভ হবে।যদিও আপনি পিকনিক খেতে যাচ্ছেন না তবুও ছোট একটা সাউন্ড সিস্টেম ও দুপুরের খাবার সাথে নিয়ে নিন।এ ক্ষেত্রে সবাই এক সাথে নিলে ঝামেলা ও খরচ দুইটাই সেইভ হবে।

এত কিছু বলার আসলে কারন নি????

ভাই বলার কারন একটা অবশ্যই আছে। দুঃখজনক হলেও সত্য এই মহৎ আয়োজনে ঘটে নানা দূর্ঘটনা। শীত বস্ত্র নিতে গিয়ে পদদলিত হয়ে বৃদ্ধের মৃত্যু অথবা বস্ত্র পরিবহনের গাড়ি উল্টে আরোহীদের মৃত্যু। আপনার সংগ্রহ করা কাপড়ের থেকে লোক বেশি তখন তারা কাপড়ের জন্য ঝামেলে সৃষ্টি করবে এতে মারামারি হানাহানির ঘটনা ঘটার ইতিহাস আছে। আপনার আমার সাথে হয়ত দু এক জন নারী সদস্য থাকবে তার নিরাপত্তার ব্যাপার আছে। আবার দেখে যায় পরিবন করা গাড়ি উলটে ঘটতে পারে দূর্ঘটনা। তাই একটু সাবধান থাকা ভাল নয় কি!!! সবার আগে নিজে সুন্দার মত বাচুন, অপরকে বাচতে সাহায্য করুন।


৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×