somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্টিকি পোস্টে মারাত্নক বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে.................. মডারেটদের জরুরী দৃষ্টি আকর্ষন

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এ বিষয়ে লেখা ব্লগার আলতামাশের পোস্টটি রিপোস্ট দিলাম। পোস্টের লিংক স্টিকি পোস্টে মারাত্নক বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে...................

এই সব ফালতু নিয়ে লেখা নিয়ে চিন্তা করার বা লেখার কোন ইচ্ছা আমার ছিল না। কিন্তু যখন দেখলাম, কোরআন-হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া স্বত্বেও এই পোস্ট স্টিকি করা হয়েছে এবং তাতে অনেকের বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তখন আর বসে থাকতে পারলাম না। তাই স্টিকির পোস্টের নানান বিভ্রান্তি এই পোস্ট লেখা হল।

প্রথমেই বলা হল, ৬ই এপ্রিল, শনিবার ঢাকার শাপলা চত্বরে কিছু সংখ্যাক কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক এবং তাদের অধীনস্থ হাজার হাজার ‘অপারগ’ মাদ্রাসা-ছাত্ররা তথাকথিত ‘নাস্তিকদের’ বিরুদ্ধে একটি সমাবেশ করেন।

অথচ যারা সমাবেশে তারা গিয়েছেন তারা দেখেছেন, এখানে আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্রদের থেকে সাধারণ মানুষের সংখ্যা ছিল অনেক বেশী। আমি পুর্বেই একটি পোস্টে উল্লেখ করেছিলাম যে, সেখানে আমি আমার এলাকার কট্ররপন্হি একজন আওয়ামি লিগারকে মানুষকে পানি পান করাতে। তিনি লিখলেন, মাদ্রাসার অপারগ ছাত্ররা এই খানে এসেছে। অথচ মাদ্রাসার ছাত্ররা এটা নিয়ে কতটা আগ্রহি ছিল তা বুঝিছি আমার এক সময়ের সহপাঠি মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদের মাদ্রসার কয়েকজন ছাত্রকে দেখে, তাদের প্রিন্সিপাল হেফাজতে ইসলামের বিরোধিতা করা সত্বেও তারা সমাবেশে এসেছে। আমি নিজেও বর্তমানে কওমি মাদ্রাসার ছাত্র নই। তারপরেও ঈমানের টানে সেখানে গিয়েছি।

আবার সে লিখেছে, তথাকথিত নাস্তিকদের বিরোদ্ধে ছিল সমাবেশ ছিল অথচ সবাই জানেন, যারা ইসলামকে নিয়ে কুটুক্তি করেছে তারা কেউই তথাকথিত নন। বরং নাস্তিকতার ঘোষনা দিয়েই তারা ইসলামকে অবমাননা করেছে।
আর আলেমরা নাস্তিকদের বিচার বলতে ইসলামবিদ্বেষীদের বিচার চাইছেন, এটা সবাই বুঝে। এটা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোন রাস্তা নেই। মাইন্ড ইট

সমাবেশের মূল বিষয় ছিল, কে বা কারা তাদের নিজেদের ব্লগে কয়েক বছর আগে মহানবী বিশ্বনবী হজরত মোহাম্মদ (স.)-এর প্রতি কটাক্ষ করে অপমানজনক কথাবার্তা লিখেছিল এদেরকে আইন পাশ করে শাস্তি দিতে হবে

ব্লগে ইসলামকে অবমাননা করা হয়েছে এটা আলেমরা যখনই জেনেছেন তখনই প্রতিবাদে নেমেছেন এবং তাদের কথায় লাখো লাখো মানুষ রাস্তায় নেমেছেন যা ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে। বাংলাদেশকে, বঙ্গবন্ধুকে, প্রধানমন্ত্রিকে নিয়ে কুটুক্তি করলে শাস্তির বিধান আছে, কিন্তু আমাদের প্রিয়নবী(স.) কুটুক্তিকারীদের শাস্তি আমরা কেন চাইব না?
চাইলে আমি মৌলবাদী হয়ে যাব???
বাহ কি সুন্দর ব্যাখ্যা!!

আজ পর্যন্ত মহানবী (স.) ও অন্য সকল নবীর (আ.) যে সম্মান জগতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা কি জাগতিক কোন আইনের কারণে, নাকি এই অতুলনীয় সম্মান আল্লাহ্ কর্তৃক প্রদত্ত? যাঁর সম্মান স্বয়ং আল্লাহ্ প্রতিষ্ঠা করেছেন কারও মুখের কথায় কি তাঁর সম্মান ভেস্তে যেতে পারে? পিতামাতার প্রতি আমাদের যে আন্তরিক শ্রদ্ধা ও সম্মানবোধ তা কি কোন সংসদে পাশ করা আইনের কারণে?

মহানবী (স.)কে আল্লাহ তায়ালা সম্মানিত করেছেন। ঠিক তেমনি,
النَّبِيُّ أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنْفُسِهِمْ

অর্থাৎ নবীর সঙ্গে ঈমানদারের প্রাণেরও অধিক সম্পর্ক। তিনি তাদের সত্তা থেকেও তাদের কাছে অগ্রগণ্য। (সূরা আহযাব : ৬)

‘তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার কাছে তার পিতা ও সন্তানের চেয়ে, সকল মানুষের চেয়ে, এমনকি তাঁর প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয় না হই। -সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬৬৩২; সহীহ মুসলিম ১/৪৯

তাই দুই একটা ইসলামবেদ্বেষী আমাদের প্রিয়নবী(স.) গালি দিলে যদিও আমাদের নবীর(স.) সম্মানের কিছু হবে না। কিন্তু কোন মুসলিম দাবিকারী যদি তাতে কষ্ট না পায়, তাহলে বুঝতে তার মাঝে প্রিয়নবী(স.) এর প্রতি ভালবাসা নাই।
আমার মাকে গালি দিলে আমি প্রতিবাদ করি। আমার বোনকে গালি দিলে প্রতিবাদ করি। অথচ যখন সবার চেয়ে বেশী প্রিয় নবী(স.) কে গালি দেওয়া হবে, তখন আমরা বিচার চাইব না??????

এখন বিতর্কিত হাদীসটির বিষয়ে সংক্ষিপ্ত কথা বলে শেষ করতে হয়। ৬ই এপ্রিলের সমাবেশে তিনজন আলেম পর পর মুরতাদের শাস্তি দাবী করে যে হাদীসটি উপস্থাপন করেন সেটি ছিল: মাম্ বাদ্দালা দীনাহু ফাক্তুলুহু.। অর্থাৎ যে-ই নিজ ধর্ম ত্যাগ করবে তাকে তোমরা হত্যা কর। রাজনৈতিক মাওলানারা এটি তাদের মোক্ষম খড়গ হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু তাদের জন্য দুঃসংবাদ, বুখারীসহ অন্য চারটি উল্লেখযোগ্য হাদীস গ্রন্থে এটি সংকলিত হওয়া সত্ত্বেও কোরআনের শিক্ষা পরিপন্থি হবার কারণে হাদীসটি আক্ষরিক অর্থে গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা আল্লাহ্ তায়ালা আমাদেরকে স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন, এই রসূল নিজ পক্ষ থেকে কোন মনগড়া কথা বলেন না যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁর প্রতি ওহী করা না হয় (সূরা নাজম-৩,৪)। অর্থাৎ পবিত্র কোরআন যে উৎস থেকে অবতীর্ণ হয়েছে সেই একই উৎস থেকে ওহী লাভ করে মহানবী (সা.) আমাদেরকে ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান দান করেছেন। অতএব কোরআনের সাথে রসূলুল্লাহ (স.)-প্রদত্ত শিক্ষার কোন বিরোধ থাকতেই পারে না।

কোরআনের কোন স্থানে মুরতাদদের শাস্তির বিধান পাওয়া না যাওয়ার মানেই সেটা ইসলামে নেই এই রকম নয়। প্রিয়নবী (স.) এর কথা এবং কাজগুলোও আমাদের অনুসরণ করতে হবে।
কোরআনে বলা হয়েছে, তোমরা সালাত কায়েম কর। সালাত শব্দের অর্থ, দোয়া। কিন্তু সালাত অর্থাৎ, নামায কি? রাসুল(স.) টা আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন। এই খানে এই কথা বলার যুযোগ নেই যে প্রিয়নবী(স.) আমাদের ওঠা, বসা, রুকু, সিজদা ইত্যাদি বিষয়গুলো করে কোরআন বিরোধি শিক্ষা দিয়েছেন। এখানে কোরআনের যেই আয়াতগুলো বলা হয়েছে, সেগুলোতে আখেরাতের শাস্তির কথা বলা হয়নি আবার পার্থিব শাস্তির বিষয়টিও অস্বীকার করা হয়নি। তাই কোরআনে মুরতাদদের পার্থিব শাস্তির কথা না পাওয়া গেলেও হাদিসে তা পাওয়া গিয়েছি বিধায় সেটা আমাদের মানতে হবে। বলা যাবে না যে, এটা কোরআন বিরোধি।
আর সেই পোস্টে বিখ্যাত সেই হাদিসকে জাল হাদিস বলার চেষ্টা করা হয়েছে। অথচ কোন হাদিসকে জাল বলতে হলে, সেই বিষয়ে হাদিস বিশারদদের ঐক্যমত থাকতে হয়। অতএব কোন হাদিস বিশারদদের বাদ দিয়ে ঐ পোস্টের লেখক এমন কোন আলেম হয়ে যান নি, তার কথায় কোন হাদিস জাল হয়ে যাবে।

------------------------------------------------------------
খুব দ্রুত পোস্ট লেখলাম। কিছু তথ্য যোগ করে পোস্ট আপডেট করব ইনশাআল্লাহ।
ব্লগারদের বলছি, এই সব ফালতু লোকের কথায় বিভ্রান্ত হবেন না।
আর মডুদের কাছে অনুরোধ, এই সব বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট স্টিকি করে সামুকে আর বিতর্কিত কইরেন না।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪০
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×